• ১৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২০শে শাবান, ১৪৪৬ হিজরি

ইউরোপীয় ইউনিয়নের চোখে চোখ রেখে কথা বলছে কাতার ,

usbnews
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
ইউরোপীয় ইউনিয়নের চোখে চোখ রেখে কথা বলছে কাতার ,
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

ইইউভুক্ত দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিলো কাতার।  যুক্তরাষ্ট্রের শত চাপেও দমেনি কাতার। এখন সেই কাতারকেই ভয় দেখায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু কাতারও কম যায় না। ইউরোপীয় ইউনিয়নের চোখে চোখ রেখে কথা বলছে দেশটি। উল্টো ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে কাতার।

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দিয়ে কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী সাদ আল কাবি বলেছেন, ইইউয়ের সদস্যরাষ্ট্রগুলো বাধ্যতামূলক শ্রম এবং পরিবেশগত ক্ষতির বিরুদ্ধে নতুন কঠোর আইন চাপিয়ে দিলে কাতার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) ‘দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই হুমকি দেন।

পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি নিয়েও দোহার খুব একটা মাথাব্যথা নেই। আর এই ইস্যুতে সামনে এনেই কাতারকে চাপে ফেলতে চাইছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

চলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নে কর্পোরেট সাসটেইনেবিলিটি ডিউ ডিলিজেন্স নামে একটি আইন পাস হয়। এই আইন অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নে কর্মরত প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রম আইনের লঙ্ঘন করলে তাদের গুণতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। যা হবে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক লাভের ৫ শতাংশ।

তবে এই আইনের ঘোর বিরোধিতা করছে কাতার। তাদের মতে, দেশটির জ্বালানির পাঁচ শতাংশ জরিমানা দেওয়া মানে কাতারের রাজস্ব থেকে ৫ শতাংশ চলে যাওয়া। আর এতো বড় অঙ্কের অর্থ হারাতে রাজি নন তারা। কাতার প্রশাসনের মতে, ইইউয়ের উচিত এই আইনটি পর্যালোচনা করা।

কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী সাদ আল-কাবি বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো যদি এ নিয়ে তার দেশের ওপর চড়াও হয়, তাহলে গ্রুপটির কাছে গ্যাস বিক্রি বন্ধ করে দেবে দোহা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, সেখানে ব্যবসা করতে হলে এসব নিয়ম মানতে হবে। না হলে দিতে হবে জরিমানা। এরপরই ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে কাতার। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে এমনিতেই গ্যাস সংকটে ভুগছে ইউরোপ। সেই ঘাটতি মেটাতে নানা বিকল্প বেছে নিয়েছিল তারা। তবে কাতার যদি এখন সত্যি সত্যিই গ্যাস বিক্রি বন্ধ করে দেয়, তাহলে ইউরোপ আরও বিপদে পড়বে।

বিশ্বে এলএনজি রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে কাতার অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে এশিয়া ও ইউরোপের বাজারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে চাইছে দেশটি। এজন্য ২০২৭ সাল নাগাদ তরলীকৃত গ্যাসের উৎপাদন প্রতি বছর ৭৭ মিলিয়ন থেকে ১৪২ মিলিয়ন টনে উন্নীত করতে চায় কাতার।

কাতারের জ্বালানিমন্ত্রী সাদ আল কাবি বলেন, ইউরোপে গিয়ে অর্জিত রাজস্বের ৫ শতাংশ হারাতে হলে, আমি ইউরোপেই যাব না। আমি ভয় দেখাচ্ছি না। কাতারএনার্জির অর্জিত রাজস্বের ৫ শতাংশ মানে কাতার রাষ্ট্রের অর্জিত রাজস্বের ৫ শতাংশ। এটি জনগণের অর্থ। তাই এ ধরনের অর্থ আমি খোয়াতে পারি না। কেউই এটা মেনে নেবে না।

তিনি আরও বলেন, ইইউয়ের উচিত যথাযথ পরিশ্রম আইন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করা। আর যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানির সীমা তুলে নেওয়ার যে অঙ্গীকার করেছেন, তা নিয়ে কাতারের কোনও উদ্বেগ নেই।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় এলএনজি রফতানিকারক দেশের মধ্যে অন্যতম কাতার। তরলীকৃত গ্যাসের শীর্ষ সরবরাহকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বাড়ার মুখে কাতার এশিয়া ও ইউরোপে এ খাতে আরও বড় ভূমিকা রাখতে চাইছে। ২০২৭ সালের মধ্যে প্রতি বছর তরলীকরণ ক্ষমতা বর্তমানের ৭৭ মিলিয়ন টন থেকে ১৪২ মিলিয়ন টন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে কাতার।