ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিওর্জিয়া মেলোনি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো এস্টেটে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, যা তার আসন্ন রোম সফরের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। এই সাক্ষাৎ মূলত মেলোনির লক্ষ্য ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক শক্তিশালী করা এবং ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সাথে ইতালির সম্পর্ক উন্নয়ন করা। মেলোনির এই সফর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার অবস্থানকে আরও দৃঢ় করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই বৈঠকটি শনিবার (৪ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়।মেলোনি ইউরোপের একটি বিশিষ্ট রক্ষণশীল নেত্রী, এবং ট্রাম্পের প্রতি তার প্রকাশ্য প্রশংসা জানিয়েছেন।মার-এ-লাগোতে এই বৈঠকটি তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে আরো সুসংহত করার লক্ষ্যে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। মেলোনি ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক জোরালো করতে চেয়েছেন, কারণ ট্রাম্পের ভবিষ্যত শাসনামলে ইউরোপে কিছু তিক্ত সম্পর্কের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, ট্রাম্প ইউরোপের সাথে একটি বাণিজ্যযুদ্ধ শুরুর হুমকি দিয়েছেন এবং ন্যাটো ও ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন কমানোর কথা বলেছেন।
মেলোনি এবং ট্রাম্পের বৈঠকের বিস্তারিত বিষয় এখনও প্রকাশিত হয়নি, তবে অনুমান করা হচ্ছে যে তারা বৈশ্বিক ও ভূরাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশেষত, মেলোনি সম্ভবত ইরানে আটক ইতালীয় সাংবাদিক সেসিলিয়া সালার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কারণ ইতালির বিরুদ্ধে ইরান অনুকূল কৌশল হিসেবে বিদেশি নাগরিকদের আটক করার অভ্যাস অনুসরণ করে। মেলোনি ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছেন, যা তার সমর্থকরা বিশেষভাবে মূল্যায়ন করছেন।
এছাড়া, ট্রাম্পের সাথে মেলোনির সম্পর্কের মধ্যে বড় একটি দিক হলো তার ঘনিষ্ঠতা বিলিওনেয়ার ইলন মাস্কের সাথে, যিনি ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান মিত্র। এটি মেলোনিকে বৈশ্বিক মঞ্চে আরও শক্তিশালীভাবে তুলে ধরতে সাহায্য করতে পারে। মেলোনির এই সফর, যা ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বাইডেনের ইতালি সফরের পূর্বে অনুষ্ঠিত হলো, তার দুই-মুখী কৌশলকে প্রতিফলিত করে। বাইডেনের সফর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে হলেও, মেলোনির ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক স্থাপন তার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভবিষ্যত কৌশলগত সম্পর্কের প্রতি গুরুত্ব প্রদর্শন করে।
মেলোনির এই সফর এবং তার বাইডেনের সফরের আগে ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ, ইউরোপে ইতালির ভূমিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে। এতে প্রমাণিত হচ্ছে যে মেলোনি তার আন্তর্জাতিক কৌশলকে সফলভাবে পরিচালনা করছেন এবং ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক মঞ্চে ইতালির প্রভাব বাড়াতে চান। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি