সবকিছু ঠিক থাকলে রাত ১০টায় কাতারের একটি বিশেষায়িত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা ছেড়ে যাবেন তিনি। লন্ডন পৌঁছে ‘লন্ডন ক্লিনিক’এ ভর্তি হবেন বলে জানান বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরতে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপি আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সব মামলায় হয় খালাস পেয়েছেন, নয় জামিনে আছেন। চিকিৎসা শেষে তার দেশে ফিরতে আইনগত কোনো বাধা নাই। তিনি চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসবেন। মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমকে এ কথা জানান তিনি।
উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রাত ১০টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন তিনি। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির দেওয়া বিশেষ সুবিধা সংবলিত কাতার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ছয় চিকিৎসক, নার্স, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৫ জন এই সফরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকছেন।
যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাবেন বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৭ বছর পর মা ও ছেলের দেখা হচ্ছে। হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর সরাসরি খালেদা জিয়াকে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হবে।
জানা যায়, গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আবাস্থল ‘ফিরোজা’য় থাকছেন ২০১০ সাল থেকে। প্রায় ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে ভোলার বাসিন্দা ফাতেমা খালেদা জিয়ার গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করছেন। ৩৫ বছর বয়সী ফাতেমা বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কাজগুলো করেন। বিএনপির চেয়ারপারসন তার দৈনন্দিন কাজের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই ফাতেমার ওপর নির্ভরশীল। দেশের ভেতর তো বটেই, দেশের বাইরেও খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকেন তিনি।
বিএনপির চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা বলছেন, দলীয় চেয়ারপারসনের প্রতি ফাতেমার মমত্ববোধ প্রবল। সব সময় পাশে থাকা, চেয়ারপারসনকে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মনে করিয়ে দেওয়াসহ সব কাজই ফাতেমা করে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে দলীয় চেয়ারপারসনের এই কাজগুলো সঠিকভাবে করার কারণে খালেদা জিয়া এখন তার কাজগুলোর ব্যাপারে ফাতেমার ওপর নির্ভর করেন। এ কারণে দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতার জন্য তিনি ফাতেমাকে সঙ্গে রাখার জন্য আবেদন করেছেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সাজা হয়। এরপর থেকেই তার সঙ্গে স্বেচ্চায় কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রায় ২৫ মাস ছিলেন ফাতেমা বেগম। বন্দির সঙ্গে গৃহপরিচারিকা থাকা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি থেকেছেন জেলে কিংবা হাসপাতালে। স্ব-ইচ্ছায় বন্দি খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে ছিলেন ফাতেমা বেগম ।
২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর যখন গুলশানের কার্যালয়ে থেকে খালেদা জিয়াকে বের হতে দেওয়া হচ্ছিল না ওই সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের পেছনে পতাকা হাতে দাঁড়ানো ফাতেমাকে নিয়ে অনেকেই কৌতূহল দেখান। খালেদা জিয়া অবরুদ্ধ থাকার সময় গুলশান কার্যালয়ে ফাতেমার সঙ্গে কোনো কোনো সাংবাদিকের কথাও হয়েছে।
ফাতেমা বাবা-মার সঙ্গে ঢাকার শাহজাহানপুরে থাকতেন। এখন তার বাবা-মা ও এক ছেলে শাহজাহানপুর এলাকাতেই থাকেন।
খুবই স্বল্পভাষী ফাতেমা সর্বশেষ সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের সঙ্গে তিনি অনেক দেশে গেছেন।