বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, আগামী পাঁচ থেকে সাত বছরে গাজার বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন ডলার বা আরো বেশি অর্থের প্রয়োজন হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাথমিক হিসেবে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এ খবর দিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।
ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে অনেক বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন হতে পারে।’ তিনি বলেছেন, ‘গাজার শুধুমাত্র স্বাস্থ্য খাত পুনর্গঠনের জন্য তার দলের প্রাথমিক অনুমান হলো প্রথম দেড় বছরের জন্য ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং তারপর পাঁচ থেকে সাত বছরের জন্য ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।’ পিপারকর্ন বলেছেন, ‘আমরা সবাই ভালো করে জানি যে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ অকল্পনীয়। আমি আমার জীবনে বিশ্বের অন্য কোথাও এমন পরিস্থিতি দেখিনি।’ এদিকে ডব্লিওএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস এরই মধ্যে বলেছেন, ‘গাজার ৯০ শতাংশ হাসপাতাল ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে।’ বুধবার মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে, ইসরাইল এবং হামাস অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। যাকে তিনি ‘সেরা খবর’ বলে উল্লেখ করেছেন। গেব্রিয়াসিস আশা প্রকাশ করেছেন, এই চুক্তি ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটাবে। তিনি বলেছেন, ‘আসুন আমরা সবাই এই খবরকে অত্যন্ত স্বস্তির সাথে স্বাগত জানাই। কিন্তু দুঃখও আছে যে, চুক্তিটি এতো দেরিতে হতে যাচ্ছে যখন সংঘর্ষে হাজার হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছেন। মধ্যস্থতাকারীরা যদিও বলেছেন, চুক্তিটি ১৯ জানুয়ারি রোববার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে দেয়া যাবে না : ইসরাইলি সরকারকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে দেয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন এরদোগান।কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মেহের নিউজ এজেন্সি। সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান গাজার জনগণের প্রতি তাদের বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকে গাজার জনগণের প্রতি তাদের আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু নিহত হওয়ার পরও গাজা আত্মসর্পণ করেনি। তাদের দমন করা যায়নি। গাজাবাসীরা নিপীড়কদের কাছে মাথা নত করেনি। ’
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দোহায় কাতার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মিশরের মধ্যস্থতায় গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরাইল ও হামাস। এটি আগামী রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। ৪২ দিনব্যাপী এ যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে হামাস বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তির বিনিময়ে ৩৩ ইসরাইলি জিম্মিকে হস্তান্তর করবে।