মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে ব্যবসার জন্য হুমকি মনে করে প্রায় ৯০ শতাংশ জাপানি কোম্পানি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য। জরিপে দেখা গেছে জাপানের ১০টি কোম্পানির মধ্যে প্রায় ৯টি কোম্পানি মনে করছে ট্রাম্পের নীতি ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। টোকিওর ব্যবসায়ীদের এমন মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যক্ষ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, কীভাবে ট্রাম্পের উচ্চ শুল্ক নীতির ফলে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান চাপ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানের কোম্পানিগুলোকে মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখীন করবে।
রয়টার্স বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্রের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জাপান। তবে টোকিওর কোম্পানিগুলো অনেকটাই চীনের ওপর নির্ভরশীল। তারা যে যন্ত্রপাতি রপ্তানি করে তার বেশির ভাগই চীনের বাজারে আমদানি করা হয়। এখন চীনের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের মধ্যে যে বাণিজ্য যুদ্ধের শঙ্কা ঘনীভূত হয়েছে তাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে জাপানের যন্ত্রপাতি উৎপাদন করা কোম্পানিগুলো।
জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ৮৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, ট্রাম্পের নীতিগত পদক্ষেপগুলো তাদের ব্যবসায়িক পরিবেশের ওপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলবে। বাকিরা ইতিবাচক অথবা কিছুটা ইতিবাচক প্রভাবের কথা জানিয়েছে। ডিসেম্বরেও একটি আগাম জরিপে প্রায় ৭৩ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছিলেন, হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রত্যাবর্তন তাদের ব্যবসায়িক পরিবেশের ওপর ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। তবে ট্রাম্প জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতাগ্রহণের পর আশঙ্কাকারী উত্তরদাতার সংখ্যা বেড়েছে।
যেসব প্রতিষ্ঠান ট্রাম্পের নীতিগত উদ্যোগকে নেতিবাচক বলে মনে করেছে, তাদের মধ্যে ৭২ শতাংশ ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপকেই দায়ী করেছে। আর ২৬ শতাংশ মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাবে তাদের ব্যবসার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ভিন্ন আরেক জরিপে একটি তথ্য পরিষেবা সংস্থার একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি বিশ্ব অর্থনীতির ওপর খারাপ প্রভাব ফেলবে।
ট্রাম্প ইতিমধ্যেই চীনের ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর পাশাপাশি চীনের অন্যান্য পণ্য আমদানিতেও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশ কানাডা ও মেক্সিকোর বিরুদ্ধেও একই পরিমাণ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তবে আপাতত ৩০ দিনের জন্য ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে।