ইউএসবি নিউজ ঢাকা ব্যুরোঃ আওয়ামী লীগের বিচার এবং নিষিদ্ধের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন জুলাই অভ্যুত্থানে আহতরা। দাবি আদায় না হলে সারাদেশ থেকে ঢাকামুখী হয়ে আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ‘ওয়ারিঅরস অব জুলাই’ প্লাটফর্ম থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন।
সমাবেশে আন্দোলনে হাত হারানো আতিকুল গাজী বলেন, আওয়ামী লীগকে কোনোভাবে পুনর্বাসন করা যাবে না। যদি করতে হয় আমার হাত ফিরিয়ে দিতে হবে। দুই হাজার শহীদ এবং ত্রিশ হাজার আহতদের সুস্থ করে দিতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন কোনোভাবেই করতে দেবো না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো, যেভাবেই হোক হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসিতে ঝুলান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন।
হাসানুর রহমান, এই বাংলার মাটিতে যতদিন পর্যন্ত বেঁচে আছি ততদিন আওয়ামী লীগ ও খুনি হাসিনার বাংলার মাটিতে জায়গা হবে না।
আহত মাকসুদুর রহমান বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়- ২৪ অভ্যুত্থানের পরে যোদ্ধাদের আবার নামতে হয়। অথচ সেই শেখ হাসিনার বিচার এখনও হল না। অনতিবিলম্বে আপনারা সাবধান হন, নইলে জুলাই যোদ্ধারা আবার আপনাদের নামে রাজপথে নেমে আসবে।
আহত আরমান হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা রাষ্ট্রপতি চুপ্পুসহ প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি প্রত্যাখ্যান করে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না হয় তাহলে আমরা ৬৪ জেলা থেকে জুলাই যোদ্ধা শহীদ পরিবার ঢাকামুখী হব। আবার একটি গণঅভ্যুত্থান হবে। এই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ তো নিষিদ্ধ হবেই আওয়ামী লীগকে যারা সমর্থন করছে, তাদেরও বিচারের মুখোমুখি করা হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা তাদের সমর্থন করেছে তাদেরকে অনতিবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে।
ওয়ারিঅরস অব জুলাইয়ের আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, একটি অভ্যুত্থান হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সেক্টরে খুনি হাসিনার দোসররা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। দুই হাজার লাশ এবং হাজারো আহতের অঙ্গহানির উপর রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে আছে। অবিলম্বে খুনি হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
সারাদেশে বিক্ষোভ
আন্দোলনকারী ছাত্রদের দাবিতে ছাত্রলীগকে গত ২২ অক্টোবর নিষিদ্ধ করা হয়। তারা আওয়ামী লীগের একই পরিণতি চান। এ দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল হয়। ছাত্রদের হলগুলো ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে মিছিল শেষ হয়। এ ছাড়া গতকাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে।
অন্যরাও একই দাবিতে রাজপথে
আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
শনিবার (২২ মার্চ) বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের নিন্দা জানানো হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার জন্য দুই হাজারেরও অধিক মানুষকে খুন করতে পারে সে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসার জন্য দুই লাখেরও অধিক আমাদের বিপ্লবী ভাই-বোনদের খুন করতে, ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করতে ন্যূনতম কুণ্ঠা বোধ করবে না।
তিনি আরও বলেন, বিপ্লবী ছাত্র-জনতা যারা দিল্লি না ঢাকা স্লোগান দিয়ে এই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রশাসন লীগের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দিয়ে রাজপথে লড়াই করেছিল তারা এই বক্তব্য (উপদেষ্টার বক্তব্য) প্রত্যাখ্যান করেছে এবং এর নিন্দা জানাচ্ছে।
উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই আপনার। তাহলে কীসের পরিকল্পনা আছে আপনার? এই রক্ত এবং জীবনের বিনিময়ে আপনারা সেখানে বসেছেন। দিল্লির নির্দেশে আগামীতে এই দেশে নির্বাচন হবে সেজন্য কি আপনাদের এখানে বসানো হয়েছিল?
ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি বলেন, বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা, গুম, খুন করে গেছে- তারপরেও কীভাবে আপনারা আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেছে, বাংলাদেশের বিজয় নাকি ইন্ডিয়ার বিজয়। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী থেকে শুরু করে এর তৃণমূল পর্যায়ের কোনো নেতাকর্মীকে দেখেছেন এর প্রতিবাদ করতে? দেখেননি। তারা প্রতিবাদ করেনি। তার মানে তারা কোনো বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল নয়। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ধারণ করে না।
বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, একটা গোষ্ঠী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানুষকে উসকে দিচ্ছে। আমরা বাংলাদেশের মানুষকে সুস্পষ্টভাবে বলব, আপনাদের যদি কেউ অন্ধকারে ঢিল মারতে বলে আপনারা ঢিল মারবেন না। কারণ অন্ধকারে ঢিল মেরে অনেকে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশের ক্রান্তিলগ্নে যেভাবে সেনাবাহিনী দেশ ও জনগণের পক্ষে ছিলেন বর্তমান সময় এবং ভবিষ্যতেও আমরা বিপ্লবী সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা জনগণের পক্ষে থাকবেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি এনসিপির : সংবাদ সম্মেলন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে জুলাই গণহত্যার দায়ে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণহত্যার দায়ে সংগঠন হিসেবেও আওয়ামী লীগের বিচার চেয়েছে দলটি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাংলামটরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
গত বৃহস্পতিবার ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের পরিকল্পনা নেই সরকারের। এ বক্তব্যকে অনাকাঙ্ক্ষিত আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন উপদেষ্টার পদ ছেড়ে এনসিপির দায়িত্ব নেওয়া নাহিদ।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে লেখেন, সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। তিনি একে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ এবং ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, ১১ মার্চ এ প্রস্তাব ক্যান্টনমেন্ট থেকে এসেছে।
এ পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করছে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান। সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে আলোচনা করেছে, তা রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ মনে করছি। রাজনীতিবিদরাই রাজনীতি নির্ধারণ করবেন।
তিনি জানান, ১১ মার্চের বৈঠকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল। সেখানে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছিল। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য আমাদের আহ্বান জানানো হয়েছিল।
৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, প্রতীক এবং আদর্শ– তিনটিই অপ্রাসঙ্গিক দাবি করে নাহিদ বলেন, দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, এজেন্সি থেকে কোনো ধরনের অপচেষ্টা চালানো হলেও, সাধারণ মানুষ, ছাত্র-নাগরিক দেড় দশক ধরে যারা নির্যাতিত-নিপীড়িত, বঞ্চিত, গুম-খুন, হত্যার শিকার তাদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার কেবল সরকার, বিদ্যমান রাজনৈতিক দল ও জনগণের। এখানে সেনাবাহিনী বা রাষ্ট্রের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের এ বিষয়ে মন্তব্য, পরিকল্পনা বা সিদ্ধান্ত-প্রস্তাবনার এখতিয়ার নেই। এ ধরনের চেষ্টা যেন বাংলাদেশে না হয়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো রাজনৈতিকভাবেই হবে।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ কি জুলাই গণহত্যার জন্য কোথাও অনুশোচনা করেছে? গণহত্যা স্বীকার করেছে? আগে গণহত্যার বিচার হতে হবে। দল হিসেবে বিচার হতে হবে। তার পর অন্য কোনো আলোচনা হলেও হতে পারে।’
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন জানান, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ চলমান থাকবে। সংবাদ সম্মেলনে মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা উপস্থিত ছিলেন।
বিচারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: হাসনাত
শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতেও আ.লীগকে আসতে দেবো না: আখতার

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই না। আওয়ামী লীগ যে গুম-খুন করেছে তার বিচারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ চাই। সরকারকে বলতে চাই- আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে। বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এনসিপি আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনতে চায়, তাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই- ২০১৮ সালে যখন মিডনাইট ইলেকশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল তখন আপনাদের ইনক্লুসিভ ইলেকশন কোথায় ছিল! ২০২৩ সালে যখন ডামি নির্বাচন হলো তখন ইনক্লুসিভ ইলেকশন কোথায় ছিল!
তিনি বলেন, যেই বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত গুম-খুন হত্যাকাণ্ড, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, ভারতবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, জুলাই গণহত্যার বিচার হয়নি। সেই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিয়ে কোনো ইনক্লুসিভ ইলেকশন হবে না। ৫ আগস্টই সিদ্ধান্ত হয়েছে আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা, রাজনীতি এ দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে।
এসময় ভারতীয় আধিপত্যবাদকে বাংলাদেশে আর কখনো ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আ.লীগসহ সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিবাদের সকল সহযোগী ব্যক্তি ও সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
শুক্রবার (২০ মার্চ) দেশের চলমান রাজনীতি ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জরুরি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল। আওয়ামী লীগের মানবতাবিরোধী অপরাধের ব্যাপারে এত সুস্পষ্ট আন্তর্জাতিক বক্তব্য থাকার পরেও বিচারিক প্রক্রিয়ায় ধীরগতি অত্যন্ত নিন্দনীয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি অবিলম্বে জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদী রেজিমের সংঘটিত গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়।
তিনি বলেন, সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মন্তব্য করেছেন- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। আমরা তার এ বক্তব্যের নিন্দা জানাই। আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসন, বিগত আন্দোলনের হত্যাকাণ্ড, গুম, ক্রসফায়ার, ভোট ডাকাতিসহ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রশ্নে কার্যকর অগ্রগতি দৃশ্যমান হওয়ার আগে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পথ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক দল নয় বরং এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেনি। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ থেকে উৎখাত হয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগ এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক ফ্রেমওয়ার্কের বাইরে অবস্থান করছে। বিচার অনিষ্পন্ন রেখে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার যে কোনো ধরনের আলোচনা ও প্রস্তাব এনসিপি দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করে।
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী মতাদর্শ দল এবং মার্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ ৩৬ জুলাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। ফলে দল ও মতাদর্শ হিসেবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করার সকল অধিকার হারিয়েছে।
তিনি বলেন, এনসিপি মনে করে- বিচারিক কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে হবে। আত্মপ্রকাশের পর থেকে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছি, কৃত অপরাধের বিচার, দায় স্বীকার, অনুশোচনা, পাপমোচন ব্যতীত আওয়ামী লীগের দল হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকার পক্ষে যেকোনো ধরনের তৎপরতা ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের পথকে সুগম করবে।
এনসিপি জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদী রেজিমে সংঘটিত অপরাপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নিশ্চয়তা চায়। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং এই মাফিয়া গোষ্ঠীর রাজনীতিতে ফিরানোর যেকোনো প্রচেষ্টাকে এনসিপি প্রতিহত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে, যোগ করেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে জুলাই সনদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানায়।
আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ক্লোজড, ওপেন করার কোনোই অবকাশ নেই : জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান

আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার (২১ মার্চ) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া বার্তায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের জনগণকে সংযত, সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থেকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাই।
জামায়াত আমির বলেন, আল্লাহ তাআলার একান্ত মেহেরবাণীতে আমরা পবিত্র রমাদানুল কারিম অতিক্রম করছি। বাংলাদেশ ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক অতিক্রম করছে। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের পর ২৪-এর ৩৬ জুলাই আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের একান্ত মেহেরবাণীতে উপহার হিসেবে পেয়েছি। এজন্য মহান রবের দরবারে অসংখ্য-অসংখ্য শুকরিয়া।
এসময় দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য পতিত ফ্যাসিবাদীরা দেশের ভিতরে এবং বাহিরে নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্যাতিত ১৮ কোটি মানুষের দাবি, গণহত্যাকারীদের বিচার, ২৪-এর শহীদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, আহত এবং পঙ্গু অসংখ্য ছাত্র, তরুণ, যুবক ও মুক্তিকামী মানুষের সুচিকিৎসা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৫ বছরের সৃষ্ট জঞ্জালগুলোর মৌলিক সংস্কার সাধন করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
তিনি আরও বলেন, এসময় জনগণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই গণহত্যার বিচারটাই দেখতে চায়। এর বাহিরে অন্য কিছু ভাবার কোনো সুযোগ নেই। আমরা সর্বস্তরের জনগণকে সংযত, সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থেকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাই।
এসময় তিনি এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আল্লাহর কাছে দোয়া ও সাহায্য কামনা করেন।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, আওয়ামী লীগের চ্যাপ্টার ৩৬ জুলাই ক্লোজড হয়ে গিয়েছে। নতুন করে ওপেন করার কোনই অবকাশ নেই।
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ না দেওয়ার দাবি খেলাফত মজলিসের

বিচারের আগে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের সুযোগ না দেওয়ার ব্যাপারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। শনিবার (২২ মার্চ) সকালে জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান দলটির মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের।
তিনি বলেন, ১৬৬টি প্রশ্নমালার স্প্রেডশিটের ১৪০টিতে একমত পোষণ করেছে কমিশন। ১০টিতে একমত নয় এবং ১৫টিতে আংশিক ও একটিতে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কারের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা ১০ মাসের মধ্যে করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন দলটির মহাসচিব।
সংস্কার কার্যক্রমে ঐকমত্য সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মূল সংলাপ শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ)। প্রথম দল হিসেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে সংলাপে বসে কমিশন।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার (২২ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় খেলাফত মজলিশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে বলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এর পরই সরব হয়েছেন ছাত্র নেতারা।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের অন্যতম সমন্বায়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া শুক্রবার তার ভেরিফাইড ফেসবুকে বলেছেন, নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে এসব শঙ্কার কথা বলে কেউ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে জনতার ঐক্যে ফাটল ধরাতে আসবেন না।মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্পষ্টভাবে বারবার বলছেন ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ইলেকশন হবে। আমি নিশ্চয়তা দিতে চাই সরকার এই কথা রাখবে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোন অনিশ্চয়তা নেই। গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামিলীগ শুধু জাতীয়ভাবে নয়, আন্তর্জাতিক ভাবে ইউএন রিপোর্টের মাধ্যমে স্বীকৃত। জনতার ঐক্য জিন্দাবাদ।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন ফেসবুকে বলেছেন, লড়াইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের জন্য আমরা প্রস্তুত। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ পর্যন্ত এ লড়াই চলবে।
ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম শুক্রবার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে বলেন, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের অপচেষ্টা রুখে দিতে ছাত্র-জনতা আবারও প্রস্তুত।রক্তের দাগ শুকায় নাই। এই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আমার ভাইয়ের খুনিদের ফেরানোর কোন চেষ্টা আমরা সফল হতে দিবো না।জুলাইয়ের মতো আবারও ঐক্যবদ্ধ হোন, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন রুখে দিন। গণহত্যাকারীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সমন্বয়ক ও চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসউদ তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে বলেন, জলপাই রঙ কিংবা ইন্ডিয়া যারাই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, তা জুলাইয়ের মতোই প্রতিহত করা হবে। উপদেষ্টা পরিষদের যারা তাদের এ এজেন্ডায় সায় দিবে তারা উপদেষ্টা থাকার নৈতিক অধিকার হারাবে। ধীরে ধীরে সব প্রকাশ করা হবে….
যারা ছাত্রনেতা কিংবা ছাত্র উপদেষ্টাদের মাথায় লবণ রেখে বরই খাওয়ার চিন্তা কিংবা চেষ্টা করছেন, সেসকল ব্যক্তিদের মুখোশও উন্মোচন করা হবে।
জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব থেকে যখন কেউ তাদের আওয়ামী পূণর্বাসন প্রক্রিয়ায় সরাসরি বিরোধীতা করেছে, ঠিক তখনি নিউজ মিডিয়া কিংবা তথাকথিত ইন্ফ্লুয়েন্সারদের ব্যবহার করে তাদের বিতর্কিত করার জন্যে মিডিয়া ট্রায়াল চালানো হয়েছে।গত দেড়মাস ধরে যার শিকার হয়ে যাচ্ছি আমি নিজেও।
শিকার হয়েছেন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, মাহফুজ আব্দুল্লাহ, হাসনাত আব্দুল্লাহসহ প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষ।
আর তাদের প্রতিটি প্রপাগাণ্ডায় নিয়মিত অংশ নিয়েছে এদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক সচেতন শিক্ষার্থীসহ, তথাকথিত সুশীলগণও।
কারো তথ্যপ্রমাণহীন পোস্টকে ইউনিভার্সাল ট্রুথ ধরে নিয়ে অনলাইন ব্যাশিংয়ের শিকার করা হয়েছে।”কিভাবে গোয়েন্দা সংস্থা প্লট সাজায়, আর সেই প্লটের অংশীজন হয়ে উঠে তথাকথিত ইন্ফ্লুয়েন্সাররাও”-লিখেছিলাম কয়েকদিন আগেই একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, আমি বিএনপি, জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই। ছাত্র-জনতা আবারও প্রস্তুত আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের অপচেষ্টা রুখে দিতে।
একটি বিষয় স্পষ্ট—জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের সকল শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে কোনো বাধা থাকবে না। কিন্তু কেউ যদি শুরুতেই বিভক্তি সৃষ্টি করে, তবে তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
আমি আবারও জোর দিয়ে বলছি—আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।
শহীদদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। এই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার যে কোনো প্রচেষ্টা আমরা ব্যর্থ করে দেব। আসুন, আবারও ঐক্যবদ্ধ হই—যেমন আমরা জুলাইয়ে হয়েছিলাম।
গণহত্যাকারীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব রাফে সালমান রিফাত ফেসবুকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রশ্নে জুলাইকে ফিরিয়ে আনা আবশ্যক। অন্যথায় লাভ নাই।
বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, ছাত্রদল, শিবির, বাগছাস, অন্যান্য রাজনৈতিক গোষ্ঠী, সাধারণ শিক্ষার্থী, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি, আলেম সমাজ, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার গণমানুষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জনতার শক্তিই পারে ফ্যাসিস্ট ও গণহত্যাকারী আওয়ামীলীগকে রাজনীতি থেকে নির্বাসিত করতে।
চাপে হোক, বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে, এক লাইনে আসতেই হবে। এককভাবে একটিভিজম টাইপ আন্দোলনে নেমে কোনো লাভ হবে না। আপনি এইখানে দানবীয় এস্টাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধে লড়তেছেন, মনে রাইখেন। এইটা শুধু জাতীয় না, আন্তর্জাতিক ইস্যুও বটে। ঐক্যবদ্ধ হই সবাই। আমার মতে আওয়ামীলীগের নিষিদ্ধে প্রমিনেন্ট সকল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা শক্তিশালী এগ্রিমেন্টই হচ্ছে বেস্ট অপশান।
ব্যক্তিগণ তো বিচার প্রক্রিয়ায় আছেই। বিচার হতেই হবে। কিন্তু দলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে হবে রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে।
আমরা চেষ্টা করছি জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে। সমন্বয়ের মাধ্যমে জনতার শক্তিকে ফিরিয়ে আনতে।
উল্লেখ্য ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে বলে জানিয়েছেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। বৃহস্পতিবার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে দেয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, আমিসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ মার্চ দুপুর আড়াইটায়। আমাদেরকে প্রস্তাব দেওয়া হয় আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদের বলা হয়- ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা না-কি ভালো।