যুক্তরাষ্ট্রের শুভ ফলডোনাল্ড বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে আরোপ করেছেন, যাকে ‘যুদ্ধ যুদ্ধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে অনেক দেশ। চাঁদের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুকল্ক ফল ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। এত দিন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ভিত্তি করে দেশ ১৫ শতাংশ করে শুক্ল্ক ছিল।
প্রধান দুই রাপ্তানি বাজারের একটি ইউ. প্রধান রাপ্তানি পণ্য তৈরির একটি বড় অংশ রপ্তানি হয় দেশ। ইউনাইটেড পার্টির শর্তারোপ করা হয় প্রায় ৮ ভাগ ৪ বিলিয়ন (৮৪০ কোটি) ডলার, যা প্রধানত তৈরি পোশাক। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তান ৭ ভোট ৩৪ বিলিয়ন (৭৩৪ কোটি) ডলারে।নতুন করে উচ্চ অনুশীলনের এই শুল্ক আরো বেশি প্রভাব বিস্তার করে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাতে বড় ধরনের নেতিবাচক বলে অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা।
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে সংবাদ প্রচার করে নতুন করে শুল্ক উত্তর দেন মার্কিন ঘোষণা।হাউজের রোজ গার্ডেনে উপস্থিত সাংবাদিক সমবেতদের উদ্দেশে স্বদেশে সহসা শুরু করতে বলতে বলেন, ‘আজ খুব ভালো খবর’ থাকবে। এ সময় দর্শক সারি থেকে করতালি দিয়ে তাঁকে অভিনন্দন হয়।এই দিনকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা’ অভিহিত করেন। নতুন শুল্ আরোপকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বতন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেন। দীর্ঘ দিন ধরে অপেক্ষা করছে

ভোটের পাল্টা এই শুল্ক আরোপ পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ শতাংশ শুকল্ক আরোপ করা হয়েছে। মাছের পণ্যের উপর ২৯ শতাংশ শুকল্ক আরোপ করা হয়েছে। পণ্যের উপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ৩৪ শতাংশ।
অতিরিক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের উপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতমের পণ্যের উপর ৪৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ৪৪ শতাংশ, তাইওয়ানের পণ্যে ৩২ শতাংশ, জাপানের পণ্যে ২৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া পণ্যে ২৫ শতাংশ, থাইল্যান্ডের পণ্যে ৩৬ শতাংশ, সুইজারল্যান্ডের পণ্যে ৩১ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার পণ্যে ৩২ শতাংশ, মালয়েশিয়ার পণ্যে ২৪ শতাংশ, কম্বোডিয়ার পণ্যে ৪৯ শতাংশ শতকরা ১০ ভাগ, দক্ষিণ আফ্রিকার পণ্যে শতকরা ৩০ ভাগ, ব্রাজিলের পণ্যে ১০ ভাগ, সিঙ্গাপুরের পণ্যে ১০ ভাগ, ইসরায়েলের পণ্যে ১৭ ভাগ, ফিলিপাইনের পণ্য ১৭ শতাংশ, চিলির পণ্যে ১০ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ, তুরস্কের পণ্যে ১০ শতাংশ, কলম্বিয়ার পণ্যে ১০ শতাংশ আরোপ করা হয়েছে।
অন্য দেশগুলো আমেরিকান পণ্যের ওপর যে শুল্ক আরোপ করে, তার তালিকা তুলে ধরে লেভিট সোমবার বলেন, অন্যায্য বাণিজ্য নীতিগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। হোয়াইট হাউস মুখপাত্র সাংবাদিকদের সামনে একটি কাগজ তুলে ধরেন, যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত, জাপান এবং কানাডার উচ্চ শুল্ক হার তালিকাভুক্ত ছিল।
লেভিট বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমেরিকান দুগ্ধজাত পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক নিয়ে থাকে। জাপান আমেরিকান চালের ওপর ৭০০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছে। ভারত আমেরিকান কৃষি পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। কানাডা আমেরিকান মাখন ও পনিরের ওপর প্রায় ৩০০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমদানি শুল্ক চাপানোর ফলে সংশ্লিষ্ট দ্রব্যগুলোর দাম বহু গুণ বৃদ্ধি পায়। এ ধরনের শুল্ক হার আমেরিকান পণ্যকে এই বাজারগুলোতে প্রবেশে কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে এবং বিগত কয়েক দশকে অসংখ্য আমেরিকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কর্মসংস্থান নষ্ট করেছে।
হোয়াইট হাউসের এই ঘোষণার পরে অনেকেই মনে করছে
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার পর চীন, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
উরোপীয় ইউনিয়ন
ইইউ মার্কিন মোটরসাইকেল, হুইস্কি এবং জিন্সের মতো পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছে। এই শুল্ককে ‘বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় আঘাত’ বলে মন্তব্য করেছেন ইউনিয়নের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন। তিনি বলেন, আমদানির ওপর নতুন শুল্ক আরোপের কারণে অনিশ্চয়তা বাড়বে, যা বিশ্বজুড়ে লাখো মানুষের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে।
ইইউ বাণিজ্য কমিশনার মারোস সেফকোভিচ জানান, তিনি আগামীকাল শুক্রবার মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গ কথা বলবেন এবং শুল্ক নিয়ে আরও আলোচনার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেবেন। তিনি বলেন, যদি আমরা একটি ন্যায্য চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারি, তাহলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না।
চীন
এশিয়ার পরাশক্তি দেশটির ওপর ৩৪ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপের পর চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেইজিং পারস্পরিক শুল্কের ‘দৃঢ় বিরোধিতা করে’ এবং নিজস্ব অধিকার এবং স্বার্থ রক্ষার জন্য পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জাপান
বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়োজি মুটো এই পারস্পরিক শুল্ক আরোপকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, জাপানকে শুল্ক ব্যবস্থা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করা হবে।
কানাডা
প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, কানাডা ‘প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে এই শুল্কের বিরুদ্ধে লড়াই করবে’ এবং জোড়ালোভাবে কাজ করবে।
ব্রাজিল
লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ বলেছে, তারা ‘দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার জন্য সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ মূল্যায়ন করছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানিয়েছে দেশটি।
এর আগের দিন ব্রাজিলের কংগ্রেস একটি বিল অনুমোদন করেছে, যাতে ব্রাজিলের পণ্য ও পরিষেবাগুলোকে লক্ষ্য করে সম্ভাব্য ‘একতরফা বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া’ জানাতে একটি আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর মধ্যে শুল্কের মতো পাল্টা ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জার্মানি
বিদায়ী জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ বলেছেন, এই শুল্ক ‘মৌলিকভাবে ভুল’ এবং এটি বিশ্বজুড়ে ও আমেরিকার ক্ষতি করবে। আমরা সহযোগিতা চাই, সংঘাত নয়। আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষা করব।
যুক্তরাজ্য
প্রধানমন্ত্রী কাইর স্টারমার বলেছেন, ব্রিটেন আমেরিকার সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির জন্য কাজ চালিয়ে যাবে এবং বাণিজ্য যুদ্ধ ‘আমাদের জাতীয় স্বার্থে নয়’। তবে তিনি বলেন, কেবল তখনই একটি চুক্তি করবেন, যদি এটি সঠিক হয়।
ফ্রান্স
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আগামীকাল শুক্রবার এলিসি প্রাসাদে নতুন শুল্ক আরোপের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়িক খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।
ইতালি
প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, সিদ্ধান্তটি ‘ভুল’ হয়েছে। তবে তিনি ‘বাণিজ্য যুদ্ধ প্রতিরোধ করতে’ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তির বিষয়ে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া
শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হান ডাক-সু অটোমোবাইলসহ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাগুলোর জন্য জরুরি সহায়তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্পেন
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, স্পেন ‘একটি উন্মুক্ত বিশ্বের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে’।
বেলজিয়াম
বেলজিয়ামের উপ-প্রধানমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভোট বলেছেন, ‘দিয়াশলাই নিয়ে খেললে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুড়ে যাবে’। তিনি উল্লেখ করেন, এটি দুঃখজনক যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘সকলের ওপর, বিশেষ করে তার অংশীদারদের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে একতরফাভাবে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার ওপর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে’।
নরওয়ে
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমেরিকার মিত্র এবং প্রতিপক্ষ উভয়ের ওপর শুল্ক আরোপ ন্যাটো চুক্তির একটি অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করতে পারে। ‘চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশ’ মনে রাখা উচিত।
হোয়াইট হাউসের এই ঘোষণার পরে অনেকেই মনে করছেন, ভারত, কানাডা, জাপান কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আওতাধীন দেশগুলো থেকে আমেরিকায় আমদানি হওয়া পণ্যে সমপরিমাণ শুল্ক চাপাতে চলেছেন ট্রাম্প। তবে এ বিষয়ে খুব বেশি কিছু স্পষ্ট করেননি হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘বুধবার যা বলার প্রেসিডেন্ট বলবেন, কিন্তু পারস্পরিক কর নেওয়া হবে এবং আমেরিকার নাগরিকরা সঠিক বিচার পাবেন।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন এই শুল্ক নীতির লক্ষ্য অন্যান্য দেশের উচ্চ শুল্ক হারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং অশুল্ক বাধাগুলোর ক্ষতিপূরণ দেওয়া। যা দেশটিতে রপ্তানি প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে ফেলছে।
হোয়াইট হাউসের মতে, অন্যান্য দেশ বহুদিন ধরে আমেরিকাকে শোষণ করছে এবং তারা আমেরিকান শ্রমিকদের প্রতি তাদের অবজ্ঞা প্রকাশ করেছে।
অন্যান্য দেশের অন্যান্য দেশের উপর বেশি শুকল্কপ করা হয়েছে বর্গের মধ্যে পণ্যের মধ্যে ৪৪ শতাংশ, লাওসের পণ্যে ৪৮ শতাংশ এবং মাদাগাস্কার পণ্যের উপর ৪৭ শতাংশ শুকল্ক আরোপ করা হয়েছে। হয়েছে।
পাল্টা এই শুল্ক আরো কঠোর অবস্থানে অবস্থানে বলেন, বাণিজ্য ক্ষেত্রে কখনো কখনো ‘বন্ধু’র চেয়ে খারাপ হয়’।যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের বিদেশী গাড়ির উপস্থাপনে ২৫ শতাংশ শুকল্ক আরো অনেক সময় দর্শন তিনি।
ডোনাল্ড সেক্রেটারি লেখক বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করা হয় তার ৮০ শতাংশ বেশি দেশকে ব্যবহার করা হয়। আর প্যানেল গাড়ি মালিকের জন্য ৯০ শতাংশ বেশি সেদেশে হয়। বহুলোকদের গাড়ি কেনা হয়
মার্কিন কোম্পানি ফোর্ড অন্যান্য দেশের খুব কম মূল্য নির্ধারণ করে উল্লেখ করে বলেন, অন্য কোনো দেশের মোট গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুকল্ক আরোপ করা হবে এবং আজ মধ্যরাত কার্যকর হবে।
শুল্ক আরো পেরিকে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ সামনের প্রতিফলন উল্লেখ করে বলেন, আজ দিনকে আমেরিকানদের ‘পুজন’ এবং আমেরিকাকে ‘আবার অধিকারশালী’ করার দিন হিসেবে উপস্থিতি করতে হবে।
এই সিদ্ধান্তের অনুশীলনের আলোচনার মাধ্যমে তিনি বলেন, লড়াইয়ের পর থেকে ইউএস যুদ্ধ বাধার বাধা রয়েছে।
অন্যান্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা আরও খারাপ করেছে।
বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মেধাসত্ত চুরিসহ অন্যান্য নিয়মনিষেধ আরো অভিযোগ করেছেন তিনি।
ট্রাম্পের এই উচ্চ শুল্ক নীতি সেসব দেশকে বেশি ধাক্কা দেবে যারা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানির চেয়ে সেখানে অধিক পরিমাণে রপ্তানি করছে। তবে শুল্ক আরোপে ট্রাম্পের এই নীতিকে সমর্থন করছেন না অর্থনীতিবিদরা। মূলত এর মাধ্যমে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চাপে ফেলা হচ্ছে। যার মাধ্যমে ভোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে এর মাধ্যমে অন্যান্য দেশগুলোকে আলোচনার টেবিলে বসাতে পারবে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আরোপ করা শুল্ক কমাতে বাধ্য হবে অন্যান্য দেশ।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি জিজ্ঞাসার উত্তর খুঁজেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এখানে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
সরকার কর্তৃক আদায় করা শুল্ক কি সাধারণ রাজস্ব তহবিলে যায়? আর ট্রাম্প কি তদারকি ছাড়াই সেই তহবিল থেকে অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন?
মূলত বিদেশী কোনো পণ্য যখন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে তখন সেই পণ্যের শুল্ক সংগ্রহ করে দেশটির কাস্টমার অ্যান্ড বর্ডার প্রটেকশন এজেন্সি। গত বছর ফেডারেল সরকারের ব্যয় মেটাতে মার্কিন কোষাগারে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার দেয়া হয়। এই অর্থ ব্যয়ে হস্তক্ষেপের এখতিয়ার রাখে মার্কিন কংগ্রেস। যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ নিয়ন্ত্রণ করছে রিপাবলিকানরা। ট্রাম্প শুল্ক আদায়ের মাধ্যমে ট্যাক্স কর্তন কার্যক্রমে সহায়তা করতে চান। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই কর কর্তন ধনী মানুষদের সুবিধা দেবে। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক নিরপেক্ষ একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক হচ্ছে ট্যাক্স ফাউন্ডেশন। তারা দেখেছে ট্রাম্পের কর কর্তনের মেয়াদ বাড়ানোর ফলে ২০২৫ সাল থেকে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত দেশটির ফেডারেল রাজস্ব ৪ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার হ্রাস পাবে। কর কমানোর ক্ষতিপূরণ হিসেবে অধিক শুল্ক আরোপ করে লাভবান হতে চান ট্রাম্প। ট্যাক্স পলিসি সেন্টার নামের আরেকটি থিঙ্ক ট্যাঙ্কও একই কথা বলছে। প্রথম মেয়াদের মতো ট্রাম্প কর কর্তনের মেয়াদ বৃদ্ধি করলে সকল আমেরিকান লাভবান হবে ঠিকই, তবে ধনীরা আরও বেশি সুবিধা পাবে।
শুল্ক নীতির ফলে মূল্য বৃদ্ধিতে কেমন সময় লাগবে?
এ বিষয়টি নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার অংশীদারদের প্রতিক্রিয়ার ওপর। তবে শুল্ক আরোপের এক-দুই মাসের মধ্যে গ্রাহকরা সামগ্রিকভাবে মূল্য বৃদ্ধি দেখতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে মেক্সিকান পণ্যের ওপর শুল্ক কার্যকর হলেই পণ্যের মূল্য দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। কিছু মার্কিন খুচরা ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য আমদানিকারকরা শুল্কে ব্যয়ের একটি অংশ আদায় করতে পারে। আর বিদেশি রপ্তানিকারকরা অতিরিক্ত শুল্ক পূরণের জন্য পণ্যের উৎপাদন মূল্য কমাতে পারে। তবে বেশ কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের এই নীতি বুমেরাং হতে পারে। যেমন ইউরোপীয়ান পণ্যে ট্রাম্প যে ২০ শতাংশ শুল্ক দিয়েছেন, তাতে এমনটা হতে পারে। এছাড়া পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে কোম্পানিগুলো শুল্ককে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে পারে। ২০১৮ সালে ট্রাম্প যখন ওয়াশিং মেশিনের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন তখন খুচরা বিক্রেতারা এই পণ্যটির সঙ্গে ড্রায়ারেরও দাম বাড়িয়ে দেয়। যদিও ড্রায়ারের ওপর কোনো শুল্ক দেয়া হয়নি। এখন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে সামনের মাসগুলোতেও কি এমন কিছু ঘটবে। অর্থনীতিবিদরা এ বিষয়টি নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। চার দশকের মধ্যে বড় মূল্যস্ফীতির সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্ক করেছেন তারা। এমনটা হলে আমেরিকানদের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে এবং তারা পণ্য ক্রয়ের ইচ্ছা ত্যাগ করবে। ফলত ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে বছরে প্রায় ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যার বড় অংশই তৈরি পোশাক। নতুন শুল্ক বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানি ব্যাহত হতে পারে, যা অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
যুক্তরাষ্ট্র শুধু বাংলাদেশের ওপরই নয়, বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপরও শুল্ক বৃদ্ধি করেছে। ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬%, পাকিস্তানের ২৯%, চীনের ৩৪% এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ২০% শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
শুল্ক বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতার সীমা কতটুক? এক্ষেত্রে কংগ্রেসের ভূমিকা কী?
সাংবিধানিকভাবেই কংগ্রেসকে শুল্ক নির্ধারণের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে কংগ্রেস বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের কাছে এই ক্ষমতাগুলো ছেড়ে রেখেছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউস শুল্ক আরোপ করতে পারে। যদি আমদানি দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ হয় তাহলে হোয়াইট হাউস এভাবে শুল্ক দিতে পারে। আগে প্রেসিডেন্টরা সাধারণত জনমতের ভিত্তিতে শুল্ক আরোপ করতেন। আমদানিতে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ হচ্ছে কিনা তা নির্ধারণ করতে এমনটা করা হতো। ট্রাম্পও তার প্রথম মেয়াদে এসব পদক্ষেপ অনুসরণ করেছেন। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ১৯৭৭ সালের এক আইনের ভিত্তিতে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করে অস্থায়ীভাবে শুল্ক আরোপের চেষ্টা করছেন। যেমন- যুক্তরাষ্ট্রে কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে ফেন্টানাইল প্রবেশের অভিযোগে জরুরি অবস্থার কথা তুলে ধরেছেন ট্রাম্প। ফলে তিনি দেশ দুটির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক করেছেন। এক্ষেত্রে কাংগ্রেস প্রেসিডেন্টের জরুরি অবস্থার বিবেচনা বাতিল করতে পারে।
মার্কিন পণ্যের ওপর অন্যান্য দেশ কেমন শুল্ক আরোপ করছে?
সাধারণত অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কম। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ব্যবসায়িক পণ্যের প্রতিফলনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গড় শুল্ক মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ। এক্ষেত্রে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের রয়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। আর চীন এবং ভারতের যথাক্রমে রয়েছে ৩ ও ১২ শতাংশ। অন্যান্য দেশগুলোতেও কৃষকদের সুরক্ষার জন্য বিদেশি পণ্যে অধিক শুল্ক আরোপ করে। যেমন, কৃষিজাত পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্ক ৪ শতাংশ, যেখানে ইইউ এর ৮ দশমিক ৪ শতাংশ, জাপানের ১২ দশমিক ৬ শতাংশ, চীনে ১৩ দশমিক ১ শতাংশ এবং ভারতে ৬৫ শতাংশ। ডব্লিউটিও’র পরিসংখ্যান মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক আমদানি শুল্কে ট্রাম্পের ঝড় তোলার বিষয়টি বিবেচনা না করেই করা হয়েছে।
মার্কিন ডোনাল্ড ট্রাম্প সকল দেশের সকল পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। গত কয়েক সপ্তাহে আরও শুল্ক আরোপ নিয়ে বিশ্বব্যাপী জল্পনা চলছে। তিনি তার পছন্দের অবসান ঘটিয়েছেন। ক্ষমতায় আসার পর, আমেরিকা তার বাণিজ্যিক অংশীদারদের উপর আরও শুল্ক আরোপের অনুমতি দিচ্ছে, যা এখন মুসলিম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাস্তবায়িত হচ্ছে। তিনি এটিকে একটি পারস্পরিক শুল্ক বলে অভিহিত করেছেন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে যে এই পদক্ষেপটি মার্কিন পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের হস্তক্ষেপ কমাতে।