নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশ এখনি বাস্তবায়নযোগ্য তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।ঢাকা, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) ।
আজ শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণের পর এই নির্দেশনা প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যে সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য সেটা যেন আমাদের মাধ্যমে হয়ে যায়। আমরা যেন এই কাজের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি। পৃথিবীর মেয়েরা এটার দিকে তাকিয়ে আছে। তারা এটা নিয়ে পর্যালোচনা করবে। অনুপ্রাণিত হবে। অন্য দেশের নারীরাও এটা নিয়ে আগ্রহী।’
তিনি বলেন, ‘এটা শুধু নারীদের বিষয় নয় সার্বিক বিষয়। এই প্রতিবেদন ছাপিয়ে বিলি করা হবে। এটা পাঠ্যবইয়ের মতো বই আকারে ছাপা হবে। দলিল হিসেবে অফিসে রেখে দিলে হবে না, মানুষের কাছে উন্মুক্ত করে দিতে হবে।’
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের এই প্রস্তাবগুলো জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক ইউনূস।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক বলেন, ‘জুলাইয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের স্মরণার্থে এমন কিছু করতে চেয়েছি যা মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে, সমাজের জন্য কল্যাণকর হবে।’
সুপারিশগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কিছু এ সরকারই করে যেতে পারবে, কিছু পরের নির্বাচিত সরকার করতে পারবে এবং নারী আন্দোলনের আশা-আকাঙ্খাগুলো আলাদা করে তুলে ধরা হয়েছে।
সংস্কার কমিশন ১৫টি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে শিরীন হকের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্য ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, এডভোকেট কামরুন নাহার, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম আক্তার, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কমিশনের সদস্যরা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ প্রধান উপদেষ্টার সামনে তুলে ধরেন। সুপারিশগুলোর মধ্যে আছে–সংসদীয় আসন সংখ্যা ৬০০-তে বৃদ্ধি করা, যেখানে প্রতিটি নির্বাচনি এলাকায় একটি সাধারণ আসন এবং নারীদের জন্য একটি সংরক্ষিত আসন থাকবে। উভয় আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। এই সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করে কমিশন।
এতে বলা হয়, জাতীয় সংসদে উচ্চকক্ষ করার সিদ্ধান্ত হলে ৫০ শতাংশ আসনে আনুপাতিক হারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যে নারী-পুরুষ প্রার্থী দেবেন— তা ‘জিপার’ পদ্ধতিতে মনোনয়ন করবেন। যাতে প্রত্যেক দল থেকে সমান সংখ্যক নারী ও পুরুষ মনোনীত হয়। বাকি ৫০ শতাংশ আসনে নির্দলীয় ভিত্তিতে অন্যান্য গোষ্ঠীর মাঝে ৫টি নারী আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে সামাজিক জোয়াগ্যোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
এরইমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে –
তাদের মূল এজেন্ডা কি ? দেশে গন্ডগোল লাগানো ?
সমাজের বিরুদ্ধে নারীদের দাড় করানো ?
সামাজিক ভিত্তি নষ্ট করে পারিবারিক শৃঙ্খলা চিরতরে নষ্ট করে দেয়া ?
নারীজাতির সম্মানহানির জন্য এই এজেন্ডার পেছনে কারা জড়িত খুঁজে বের করতে হবে।
সংস্কার কমিশন ১৫টি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। চলতি মাসের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ কমিশনের মেয়াদ রয়েছে। এ সংস্কার কমিশন মোট ৪৩ টি নিয়মিত বৈঠকে মিলিত হয়। প্রশ্ন হচ্ছে তাঁরা এসব বৈঠক কাদের সাথে করেছেন ? যাদের সাথে বৈঠক করেছেন তারা কত পার্সেন্ট নারীদের প্রতিনিধিত্ব করেন ?
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মোহাম্মদ আহাদ মিয়া লিখেছেন , , এটা কোন রিপোর্টই হয় নাই,যা হইছে তা কেবল ফাইজলামি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মিলন মোহাম্মদ লিখেছেন ,একদিকে বিয়েকে মেরিটাল রেইপে বাধা হয়েছে,অন্যদিকে বে” শ্য।কে সন্মানজনক ভাবা হয়েছে!এই জ’ঘন্য ন।রী বিষয়ক কমিশনের বিচার চাই।
ওমর ফারুক মুসআব লিখেছেন , তথাকথিত দেড় থেকে দুই হালি প্রগতিশীল নারীর চিন্তা চেতনা ১০ কোটি মুসলিম নারীর উপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
এটা চরম বৈষম্য!
ফারজানা লিখেছেন , সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে।
ওমর ফারুক মুসআব লিখেছেন , তথাকথিত দেড় থেকে দুই হালি প্রগতিশীল নারীর চিন্তা চেতনা ১০ কোটি মুসলিম নারীর উপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
এটা চরম বৈষম্য!
মুহিবুর রহমান লিখেছেন , বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ মুসলমান। এদেশের ধর্মপ্রাণ নারীরা ইসলামী জীবনব্যবস্থায় বিশ্বাসী। নারীসমাজের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক হিসেবে আজ যারা নারী সংস্কার কমিশনে কাজ করছেন, তারা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন না। ফলে তারা এদেশের গণমানুষের ধর্ম, জীবনাচার তথা ইসলামী মূল্যবোধকে উপেক্ষা করে মানবরচিত ধর্মহীন জীবনাচার আমাদের নারীদের উপর চাপিয়ে দিতে চান। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ইসলামী মূল্যবোধ বুকে লালন করা শহীদ আবু সাঈদ, ওয়াসিম, মুগ্ধ, শান্ত, আলী রায়হান, ইয়ামিনরা ধর্মহীন সমাজ কায়েমের জন্য জীবন দেয় নাই।
খায়ের বিন আব্দুর রউফ লিখেছেন , এই সংস্কার নামের ষড়যন্ত্র, ধর্মের বিধান অবমাননা করা যদি ইউনুসের পরিকল্পনা হয়, তাহলে হাসিনার মত তার সরকার কেও আমরা ছুড়ে ফেলে দিতে দ্বিধা করবো না। লাউড এন্ড ক্লিয়ার বরং তাদের বিরুদ্ধে ধর্মের বিধান কে বৈষম্য বলা ও তা পরিবর্তনের আদেশ দেয়ার ফলে উভয়ের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা করা উচিৎ।
মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম লিখেছেন , এই সব ভণ্ডামি বাদ দেন, তারা পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়ার ও দেশ কে ধর্মহীন করার চক্রান্ত করতেছে, এদের প্রতিহত করতে হবে।
এইচ এম শাহরিয়ার ইমাম ভূঞা লিখেছেন , নারী কমিশনের প্রস্তাবিত সংস্কার গুলো জোরালো ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি এবং নারী কমিশন বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।
আরো আসছে ….