গাজার ফিলিস্তিনিরা ২০ মাসের অবরোধ, স্থানচ্যুতি ও গণহত্যার পরও যেভাবে নিজেদের ভূমিতে টিকে থাকার অদম্য ইচ্ছাশক্তি দেখাচ্ছেন, সে বিপরীতে ইসরায়েলি ইহুদিরা এখন মরিয়া হয়ে দেশ ছাড়ার পথ খুঁজছেন।
গাজায় সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে হামলা, ক্ষুধার্ত মানুষদের হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েল যে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, ঠিক সেই সময়ে ইরানের পাল্টা হামলা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করেছে। ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক, দ্বৈত নাগরিকত্বধারী এবং পর্যটকরা এখন দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে পড়েছেন। ‘রেসকিউ ফ্লাইট’ ও ‘এস্কেপ ফ্লোটিলা’র মতো বিশেষ উদ্যোগের মাধ্যমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন হাজার হাজার ইসরায়েলি।
ইসরায়েলিরা এখন যেভাবে দেশত্যাগে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন, তা যেন ১৯৭০ দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে ইহুদিদের ইসরায়েলে আনার সময়কার প্রচারণাকে উল্টো প্রতিফলিত করছে। সেই সময় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একযোগে বলেছিল, ‘আমার লোকদের যেতে দাও’।
আজ, ইসরায়েলি নাগরিকদের মুখেই সেই কথা: ‘নেতানিয়াহু, আমার লোকদের যেতে দাও’।
গাজায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। খাবার, ওষুধ, চিকিৎসা—কোনো কিছু নেই। তারপরও ফিলিস্তিনিরা নিজেদের ভূমি ছাড়ছেন না।
হারেৎজের তথ্য বলছে, অধিকাংশ গাজাবাসী আজও নিজ ভূমিতে ফেরার আকাঙ্ক্ষা ধরে রেখেছেন। ইসরায়েলের যে ধারণা ছিল, তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বা পালিয়ে যাবে, তা ব্যর্থ হয়েছে।
একদিকে ইসরায়েলিদের দেশ ছেড়ে পালাতে বাধা দিচ্ছে সরকার, অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা মৃত্যুর মুখেও নিজেদের ভূমি ছাড়ছেন না। যুদ্ধ, গণহত্যা ও অস্তিত্বের এই লড়াইয়ে পার্থক্যটা স্পষ্ট: একটি জাতি টিকে থাকতে চায়, আর একটি রাষ্ট্র তার জনগণকে বাধ্য করছে থাকতে।
তবে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে, ইসরায়েলি সরকার সম্প্রতি একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, ফলে ইসরায়েলিদের দেশত্যাগ কার্যত নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।
‘লিভিং দ্য কান্ট্রি – টুগেদার’ নামের এ সংগঠন প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার ইসরায়েলিকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর পরিকল্পনা করে। এই সংগঠনের নেতৃত্বে আছেন নেতানিয়াহু-বিরোধী কর্মী ইয়ানিভ গোরেলিক ও ইসরায়েলি-আমেরিকান ব্যবসায়ী মরদেখাই কাহানা। কাহানা নিজেই বলেন, আমার নিউ জার্সির একটি বিশাল খামার রয়েছে, আমি ইসরায়েলিদের সেখানে একটি কিবুতজ তৈরি করে বসবাসের প্রস্তাব দিয়েছি।