অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, আওয়ামী লীগকে যারা সহযোগিতা করছে তারাও অপরাধী। শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ছায়া সংসদে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি নিষিদ্ধ সত্তার নাম। এই নিষিদ্ধ সত্তার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যদি কেউ ভূমিকা পালন করে তাহলে আমি নিশ্চিতভাবে বলব সেও অপরাধে সম্পৃক্ত হচ্ছে। সে অপরাধের জন্য যথাযথভাবে তাকে আইনের আওতায় আনার যথেষ্ট সুযোগ আছে এবং আনা হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যত ভিন্নমতই থাকুক, ফ্যাসিস্ট বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
তিনি বলেন, সংবিধান নতুন করে লিখতে কোনো আপত্তি নেই। লেখা যেতেই পারে। কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের সংবিধান মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রক্তের বিনিময়ে লেখা ’৭২-এর সংবিধান। আমি বিশ্বাস করি, এটি এখনো বিশ্বের ওয়ান অব দ্য ফাইনেস্ট কনস্টিটিউশন। মানুষের বিরুদ্ধে যায় এমন বিতর্কিত সংশোধনীগুলো বাদ দিয়ে এটি আরও যুগোপযোগী করা সম্ভব।
এ সময়, মব কালচার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মব কালচার বিচার বিভাগের প্রতি অনাস্থা নয়, বরং ১৭ বছরের অবিচারের বিরুদ্ধে ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। এ ক্রোধ আমরা প্রত্যাশা করি না। মব কালচার জুলাইয়ের অর্জনকে ম্লান করতে পারে, তাই এটি বন্ধ করতে হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থাকলেও আ. লীগের বিরুদ্ধে সব দল ঐক্যবদ্ধ। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরও আইনের আওতার আনার সুযোগ আছে। নিষিদ্ধ এ সংগঠনটিকে যারাই সহযোগিতা করছে তারাও অপরাধী।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ এখন নিষিদ্ধ, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যারা তাদের সহযোগিতা করেছে তারা অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হবে। কোনো রাজনৈতিক দল মানবতাবিরোধী কাজ করলে দল হিসেবে বিচার করা যাবে। আর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
মব ইস্যু নিয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, এটা বিচার বিভাগের প্রতি অনাস্থা নয়। বরং, গত ১৭ বছরের ক্রোধ। তবে, এই ক্রোধ সমীচীন নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফ্যাসিস্ট ফিরে আসার আশঙ্কা নেই মন্তব্য করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আবু সাইদ কোন রাজনৈতিক দলের না। জুলাইয়ের শহীদরা কোন রাজনীতির কেউ না। তারা স্বৈরাচার আমলের ভুক্তভোগী হয়ে রাস্তায় নেমেছিল। তারা সবাই নাগরিক প্রতিনিধি।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনা বাংলাদেশের সুশাসন। দেশে সুশাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করাই এর প্রধান লক্ষ্য।
সংবিধান প্রসঙ্গে বলেন, সংবিধান নতুন করে লিখতে কোনো আপত্তি নেই। লেখা যেতেই পারে। কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের সংবিধান মুক্তিযুদ্ধে রক্তের বিনিময়ে লেখা ৭২-এর সংবিধান। আমি বিশ্বাস করি, এটি এখনও বিশ্বের ওয়ান অব দ্য ফাইনেস্ট কনস্টিটিয়েশন। বিতর্কিত সংশোধনীগুলো বাদ দিয়ে এটি আরও যুগোপযোগী করা সম্ভব।
নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা উঠবে কি না, সেটা সরকারের পলিসির বিষয় বলে সাফ জানিয়ে দেন দেশের সর্বোচ্চ আইনি কর্মকর্তা।