• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ট্রাম্পের গাজা ‘শান্তি পরিকল্পনার’ কিছু বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে হামাস

Usbnews.
প্রকাশিত অক্টোবর ৪, ২০২৫
ট্রাম্পের গাজা ‘শান্তি পরিকল্পনার’ কিছু বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে হামাস
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

গাজার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজার শান্তি পরিকল্পনার কিছু অংশ মানতে রাজি হয়েছে। তবে কয়েকটি বিষয়ে এখনও শঙ্কা প্রকাশ করেছে। হামাস বন্দী বিনিময় এবং গাজার ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট প্রশাসনের ধারণা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছে।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার আন্তর্জাতিক প্রশাসন এবং ট্রাম্পের ‘শান্তি পরিষদ’ নিয়ে হামাসের আপত্তি আছে। তাদের বক্তব্য, গাজার ভবিষ্যৎ এবং সমগ্র ফিলিস্তিনি সংগ্রামের ফলাফল ফিলিস্তিনিদের ঐকমত্যের ওপর নির্ভর করবে। হামাস চায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও বিস্তৃত ফিলিস্তিনি সমঝোতা হোক।

হামাস স্পষ্ট জানিয়েছে: ‘হ্যাঁ – কিন্তু…’। বিশেষ করে অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ এবং আন্তর্জাতিক প্রশাসনের বিষয়ে তারা সন্তুষ্ট নয়। হামাসের মতে, এটি গাজাকে মূল ফিলিস্তিনি উদ্দেশ্য থেকে আলাদা করে।

ওয়াশিংটন থেকে এখনও হামাসের প্রতিক্রিয়ার ওপর সরাসরি মন্তব্য পাওয়া যায়নি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট জানিয়েছেন, ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, হামাসকে এই পরিকল্পনা মেনে নিতে হবে, নতুবা ‘পরিণতি মারাত্মক হবে।’

লিভিট আরও বলেন, ‘হামাস এখনও সুযোগ পেয়েছে পরিকল্পনাটি গ্রহণ করে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে এগোতে। তা না হলে ফলাফল দুঃখজনক হবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনায় হামাসের আংশিক সম্মতির পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, সব জিম্মিকে অবিলম্বে মুক্তির জন্য ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে ইসরায়েল এখন প্রস্তুত।

শনিবার (৪ অক্টোবর) ভোরে দেওয়া এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইসরায়েলের নীতি অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যেতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার দলের সঙ্গে ‘পূর্ণ সহযোগিতায় কাজ করব’। তবে বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজায় বোমাবর্ষণ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বানের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি, যদিও ট্রাম্প জিম্মিদের নিরাপদ মুক্তির জন্য এই পদক্ষেপকে অপরিহার্য বলে মনে করেন।

এদিকে, হামাসের জবাবের পর ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির শীর্ষ জেনারেলদের সঙ্গে ‘পরিস্থিতির বিশেষ মূল্যায়নে বৈঠক’ করেছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, জিম্মিদের মুক্ত করার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের জন্য সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির আইডিএফকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী জামির আইডিএফকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে জিম্মিদের মুক্তি কার্যকর করার প্রস্তুতি নিতে।’

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসকে প্রস্তাব মেনে নেওয়ার সময় বেঁধে দিয়ে রোববার রাতের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে আলটিমেটাম দেন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, সমঝোতা না হলে গাজায় চরম পরিস্থিতি তৈরি হবে। এর কয়েক ঘণ্টা পর এক বিবৃতিতে হামাস শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাবে আংশিক সম্মতির কথা জানায়। হামাসের এই ঘোষণার পর ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানান। হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধ বন্ধ হলে তারা সব ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি এবং ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করতেও প্রস্তুত।

সূত্র: আল জাজিরা