যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ন্যাটোর সদস্য যেসব দেশগুলো তাদের পাওনা পরিশোধ করেনি তাদের ওপর হামলা চালাতে তিনি রাশিয়াকে সমর্থন করবেন। শনিবার সাউথ ক্যারোলাইনার কনওয়েতে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
ট্রাম্প ৩১ সদস্যের সামরিক জোট ন্যাটোর সমালোচনা করেছেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্র রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং যারা ইউক্রেনে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তিনি একবার একটি বড় দেশের নেতাকে বলেছিলেন, রাশিয়া আক্রান্ত হলে তিনি তাদের সাহায্য করবেন না, কারণ তারা ‘অপরাধী’।
ট্রাম্প তার জনসভায় উপস্থিত সমর্থকদের জানান, ন্যাটোর একটি ‘বড় দেশের’ নেতা তাকে বলেছিলেন, রাশিয়া যদি তার দেশের ওপর হামলা চালায়। তাহলে সাহায্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আসবে কি না। এর জবাবে ওই নেতাকে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি অর্থ দেননি? আপনি অপরাধী? না আমি আপনাকে রক্ষা করব না। এমনকি রাশিয়ার যা মনে চায় তা করতে আমি তাদের উদ্বুদ্ধ করব। আপনাকে অর্থ দিতে হবে। আপনাকে আপনার দেনা পরিশোধ করতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ট্রাম্পের এমন মন্তব্যে উদ্বিগ্ন, যা আদৌ ঘটেছিল কিনা তা নিয়ে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এমএসএনবিসির বিশ্লেষক এবং ওয়াশিংটন ডিসির মাদার জোনসের ব্যুরো প্রধান ডেভিড কর্ন এক্স (সাবেক টুইটার) পেজে বলেন, ‘মনে হচ্ছে ট্রাম্প রাশিয়াকে আমাদের ন্যাটো মিত্রদের ওপর হামলা চালাতে উৎসাহিত করছেন।’
রক্ষণশীল ভাষ্যকার অ্যালিসা ফারাহ গ্রিফিন বলেছেন, ট্রাম্পের মন্তব্য রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কানে বাজানোর মতো ‘সংগীত’।
ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউজ। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তরের মুখপাত্র অ্যান্ড্রু ব্যাটস ট্রাম্পের বক্তব্যকে ‘আতঙ্কজনক এবং বিকৃত মস্তিক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত হয় ন্যাটো জোট। যেটির লক্ষ্য ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) আক্রমণ থেকে অন্যান্য দেশকে রক্ষা করা। এটির মূলনীতি হলো যদি জোটের কোনো দেশ হামলার স্বীকার হয় তাহলে সবাই একসঙ্গে লড়াই করবে।
গত বছর এক প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল, ন্যাটের তৎকালীন ৩০ সদস্যের মধ্যে মাত্র ১১টি দেশ তাদের জিডিপির দুই শতাংশ সামরিক খাতে খরচ করেছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় হুমকি দিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো থেকে বেরিয়ে যাবে। তবে গত মাসে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৮৮৬ বিলিয়ন ডলারের একটি সামরিক আইন করেন— যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ন্যাটো জোট থেকে বের হয়ে যাওয়ার বিষয়টি কঠিন করে দেয়া হয়েছে।