• ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সর্বশেষ ‘নিরাপদ স্থান’ রাফাহতে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

usbnews
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সর্বশেষ ‘নিরাপদ স্থান’ রাফাহতে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে  ইসরায়েল
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সর্বশেষ ‘নিরাপদ স্থান’ রাফাহতে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে ঘুমন্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতা চালানো হয়। তাদের এ হামলায় রাফাহতে এক রাতে প্রাণ হারিয়েছেন একশরও বেশি মানুষ।

ফিলিস্তিনি রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি (পিসিআরএস) জানিয়েছে, বর্তমানে রাফাহতে গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক অবস্থান করছে। সেখানে সোমবার রাতে যুদ্ধবিমানের দ্বারা তীব্র বিমান হামলার স্বীকার হয়েছেন তারা। এতে  একশরও জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।

রাফাহর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলিরা তাদের বর্বর হামলায় অন্তত দুটি মসজিদ এবং বেশ কয়েকটি বাড়িকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।

ফিলিস্তিন রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি আরও জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনারা হেলিকপ্টার থেকে মেশিনগান ব্যবহার করে রাফহার সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে গুলি ছুড়েছে। অবরুদ্ধ ও ছোট্ট গাজা উপত্যকার রাফাহর সঙ্গে মিসরের সীমান্ত রয়েছে।

রাফাহর আবু ইউসুফ আল-নাজ্জার হাসপাতালের পরিচালক বলেছেন, “দখলদারদের বোমা হামলায় এত মানুষ হতাহত হয়েছেন যে আমরা তাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।”

রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, ইসরায়েলিদের চালানো নতুন হামলায় ধসে পড়া ভবনের নিচে অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছেন।

৭ই অক্টোবরের পর থেকে ইসরাইলের হামলায় কমপক্ষে ২৮ হাজার ১৭৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬৭ হাজার ৭৮৪ জন।

 

রাফায় ইসরাইলের বোমা হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর ডেভিড শুব্রিজ। যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকরা যখন সুপার বোল দেখছেন, সে সময়কে বেছে নেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ যখন সুপার বোল দেখছিলে, তখন স্থানীয় সময় রাত ২টার দিকে রাফায় হামলা চালানো হয়েছে। আক্ষরিক অর্থেই এটা ভয়াবহ ও বিপর্যয়কর। তিনি আরও বলেন, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ফিলিস্তিনি জনগণ আমাদের হৃদয়ের বেশি কাছে আছেন।

গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর রাফাহ বাদে গাজার সব অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। তাদের এসব হামলা থেকে বাঁচতে লাখ লাখ মানুষ রাফাহতে চলে যান। এমনকি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীই গাজাবাসীকে নির্দেশনা দিয়েছিল; তারা যেন রাফাহতে চলে যান। এছাড়া রাফাহকে নিরাপদ স্থান হিসেবেও ঘোষণা দিয়েছিল ইসরায়েল। তাদের কথা শুনে ও জীবন বাঁচাতে তখন লাখ লাখ মানুষ দলে দলে গাজার অন্যান্য অঞ্চল থেকে এখানে চলে আসেন। এখন এখানেও হামলার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশগুলো নেতানিয়াহুকে হুশিয়ারি দিয়েছে, বেসামরিকরা রাফাহতে থাকা অবস্থায় যেন কোনো ধরনের হামলা না চালানো হয়। তবে তাদের তোয়াক্কা না করে সোমবার রাতে সাধারণ মানুষে গিজগিজ করা অঞ্চলটিতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন সহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা সেখানে হামলা না চালানোর আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সতর্ক করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে। তিনি বলেছেন, রাফায় আশ্রয় নেয়া কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিতে হবে সামরিক হামলা চালাতে গিয়ে। কিন্তু কোনো কথাই কানে তুলছেন না নেতানিয়াহু। রোববার যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাসের একজন সিনিয়র নেতা আল আকসা টেলিভিশনকে বলেছেন, রাফায় ইসরাইলের হামলায় জিম্মি ও বন্দি বিনিময় নিয়ে আলোচনা ভেস্তে যাবে।

ওদিকে গাজায় পাঠানো এক মাসের খাদ্য সরবরাহের একটি শিপমেন্ট আশদুদ বন্দরে আটকে দিয়েছে ইসরাইল।