ঘটনার একটি উল্লেখযোগ্য মোড়ে পাকিস্তান তাহরিকে ইনসাফ (পিটিআই)-এর আইনি দল গত শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসা এবং ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমের ফারুকের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে তাদের দাবিগুলো সম্প্রসারিত করেছে। তাদের দাবিগুলো ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) ছয় বিচারপতির লিখিত একটি জঘন্য চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এসেছে, যাতে বিচারিক বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পিটিআই প্রতিনিধি রাউফ হাসান, নাঈম হায়দার পাঞ্জুথা, শোয়েব শাহীন, আলী বুখারি এবং নিয়াজুল্লাহ নিয়াজি দেশের আইনি ব্যবস্থাকে আঁকড়ে ধরে পক্ষাঘাতের ওপর জোর দেন। পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের নির্দেশের ভিত্তিতে কাজ করে, তারা এসব উদ্বেগ মোকাবেলায় দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
হাসান বিচারকদের চিঠির গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে এটিকে ‘খুবই গুরুতর সমস্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বিচারপতিদের অভিযোগের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি ঈসার নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে চিঠির উল্লেখ করেছেন।
চিঠিতে করা অভিযোগের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন যে, মানুষের বেডরুমে ক্যামেরা স্থাপন করা ‘বিচার ও আইনকে হত্যা’। তিনি চিঠিটি নিয়ে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের তদন্তের বিরোধিতা করেন এবং জিজ্ঞাসা করেন যে, অভিযুক্ত [নির্বাহী] কীভাবে তার নিজের ক্ষেত্রে বিচারক হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সরকার ঘোষিত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিশনের কথা উল্লেখ করে তিনি একটি প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেই সিদ্ধান্ত নেবেন যে, তিনি দোষী কিনা’। ‘আমরা এ উপহাস ঘটতে দেব না’।
পাঞ্জোথা বলেন, ইমরানের বাড়িতে ২৬ ঘণ্টা অভিযান চালানো হলেও প্রধান বিচারপতি নীরব ছিলেন। একইভাবে, গত বছরের ২৮ মার্চ বিচারিক কমপ্লেক্সে পিটিআই কর্মীদের ৗপর হামলা হয়েছিল, কিন্তু অন্যায়ভাবে দলীয় কর্মীদের ওপর দোষ চাপানো হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘তোশাখানা মামলায় [ইমরানের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার] সিদ্ধান্ত হয়েছিল হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে। সাইফার মামলার বিচার [ইমরানের বিরুদ্ধে] চার সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য আমাদের আবেদনের কী হয়েছে [নির্বাচনে]? এমনকি প্রধান বিচারপতি ঈসা আমাদের [নির্বাচনী] ব্যাট প্রতীক ছিনিয়ে নিয়েছেন’।
নিয়াজি এ অনুভূতির প্রতিধ্বনি করে জোর দিয়ে বলেন যে, বিচারকদের চিঠিটি দেশের অভ্যন্তরে সিস্টেমিক কর্মহীনতার ওপর জোর দেয়। প্রধান বিচারপতি ঈসাকে চিঠির সরাসরি সম্বোধন সত্ত্বেও নিয়াজি কোনো ফলপ্রসূ পদক্ষেপের অনুপস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি জবাবদিহিতার জরুরি প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়ে দেশটিকে অনাচারের রাজ্যে নেমে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
প্রধান বিচারপতি ঈসা ও প্রধান বিচারপতি ফারুকের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করে নিয়াজী ঘোষণা করেন যে, নিছক সংবাদ সম্মেলনের সময় চলে গেছে। তিনি সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্ট উভয়েই পিটিশন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যাপক আন্দোলনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। নিয়াজি সরাসরি পদক্ষেপের দিকে একটি নিষ্পত্তিমূলক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে ইমরান খানের দেশব্যাপী বিক্ষোভের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সূত্র : দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।