মানুষকে বলা হয় ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। তাই মানুষের আচরণ হওয়া উচিত অন্যান্য জীবের চেয়ে স্বতন্ত্র। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন, ‘আমি মানব জাতিকে সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছি’। অথচ সে মানুষই আজ দানবের মতো আচরণ করছে। দেশের কোথাও না কোথাও হত্যা, ধর্ষণ, ইভটিজিং ও আত্মহননের ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হারে ঘটে চলেছে। তুচ্ছ ঘটনায়ও মানুষ খুন হচ্ছে, খুন হচ্ছে আদালত কক্ষে বিচারকের সামনে। অর্থাৎ কে, কখন, কোথায় হত্যার শিকার হবে, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। হত্যার পাশাপাশি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ধর্ষণ। ধর্ষকদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ছয়-সাত বছরের মেয়েশিশু কিংবা ছয় মাসের কোলের শিশু।
বিশ্ব বরেণ্য বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, ‘সমাজ কিভাবে শিশুদের প্রতি আচরণ করে তার মধ্য দিয়ে সমাজের চেহারা ফুটে উঠে’।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য মতে, ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে মোট ৪৯৬ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আইন ও সালিস কেন্দ্রের নিয়মিত মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে ধর্ষণের ঘটনা ছিল ৬৩০টি। ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টায় শিশু হত্যার ঘটনা ঘটে ২১টি। ধর্ষণের শিকার শিশুদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশুর বয়স সাত থেকে ১২ বছরের মধ্যে। বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮ সালে সারা দেশে ৪৩৩টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের কারণে একই বছর প্রাণ হারায় ২২ শিশু। এ ছাড়াও ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয় ৫৩ শিশুর ওপর। যৌন নির্যাতনে একটি শিশু মারা যায়। ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন, হত্যা ও শারীরিক নির্যাতনে মারা গেছে ২৭১ শিশু। বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে আরো এক হাজার ছয়জন।