গাজায় চলমান পোলিও টিকা কর্মসূচির মধ্যেও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। শুক্রবার ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় গাজা উপত্যকা-জুড়ে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন ফিলিস্তিনি।
স্থানীয় জনগণ এবং স্বাস্থ্য-কর্মীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাজার সব এলাকায় সংঘাত হয়েছে। উপত্যকার বৃহত্তম এবং ঐতিহাসিক শরণার্থী শিবির নুসেইরাতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন দুই নারী এবং দু’জন শিশু। গাজার বৃহত্তম শহর গাজা সিটিতে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ৮ জন এবং বাকি নিহতদের কেউ খান ইউনিস, কেউ রাফা, কেউ বা জেইতুনের বাসিন্দা।
গত ১১ মাস ধরে গাজায় যুদ্ধ হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী এবং হামাসের মধ্যে। এই যুদ্ধ থামানোর জন্য মাসের পর মাস ধরে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে মধ্যস্থতাকারী ৩ দেশ যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধাবসান ও শান্তি স্থাপনে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার প্রায় সবই ব্যর্থ। হামাস এবং ইসরায়েল— উভয়ই এ ব্যর্থতার জন্য পরস্পরকে দায়ী করছে।
গত ১ সেপ্টেম্বর গাজা উপত্যকার শিশুদের জন্য পোলিও টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রতি বছর উপত্যকায় এই সময় শিশুদের পোলিও টিকা খাওয়ানো হয় হয় এবং পুরো কর্মসূচি তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকে জাতিসংঘের তিন অঙ্গসংগঠন— বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), ইউনিসেফ এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা আনরোয়া।
টিকাদান কর্মসূচি শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন ৯ ঘণ্টা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী এবং হামাস।
প্রাথমিক ভাবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ সেপ্টেম্বর ছিল টিকাদান কর্মসূচির মেয়াদ। তবে ৩ সেপ্টেম্বর গাজার সীমান্তবর্তী শহর রাফায় আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিরা জানান, সেখানকার অনেক শিশু টিকা পায়নি। তাই কর্মসূচির মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়।
শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় জাতিসংঘের সংস্থা আনরোয়া’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “গত ১ সেপ্টেম্বর টিকাদান কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৫৫ হাজার শিশুকে পোলিও টিকা খাওয়ানো হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য গাজার ১ থেকে ১০ বছর বয়সী সব শিশুকে টিকার আওতায় আনা। গাজায় বর্তমানে এই বয়সী শিশুদের মোট সংখ্যা ৬ লাখ ৪০ হাজারের বেশি।” সূত্র : রয়টার্স