প্রথম ম্যাচে শুরুর গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে শেষের গোলে কপাল পুড়লো হাভিয়ের কাবরেরোর শিষ্যদের। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটের গোলে পাওয়া জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ড্র করলো ভুটান। গতকাল ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। ব্যবধান গড়ে দেয়া গোলটি করেন ওয়াংচুক কিংগা।
ভুটানের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় হার। এর আগে ২০১৬ সালে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে অফে হারে বাংলাদেশ। ওই হারে আড়াই বছরের জন্য আন্তর্জাতিক ফুটবলের বাইরে থাকতে হয় লাল-সবুজদের। ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের (১৮৪) চেয়ে এগিয়ে আছে ভুটান (১৮২)।
সিরিজ জিততে পারলে পরবর্তী র্যাংকিংয়ে উন্নতি হতো বাংলাদেশের যা আসন্ন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ড্র-তে বাংলাদেশকে সুবিধাজনক জায়গায় রাখতো।
এদিন শুরুর একাদশে বাংলাদেশ দুই পরিবর্তন নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামে। ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন ইনজুরিতে। তার পরিবর্তে কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরো শাহরিয়ার ইমনকে সুযোগ দেন। আর ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষের জায়গায় ইসা ফয়সালকে এনেছেন। গত ম্যাচের মতো গতকালও শুরুর একাদশে জায়গা পাননি জামাল ভূঁইয়া। ৪-৩-৩ ফরমেশনের দলের অধিনায়ক করা হয় সোহেল রানাকে। প্রথম ম্যাচে ৫ম মিনিটে গোল পায় বাংলাদেশ। তবে গতকাল প্রথমার্ধে গোলের সুযোগ সেভাবে তৈরি করতে পারেনি তারা।
স্বাগতিক ভুটান এদিন প্রথমার্ধে খানিকটা গোছালো ফুটবল খেলার চেষ্টা করেছে। তবে একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ ছাড়া বাংলাদেশের রক্ষণে তেমন ভীতিকর কিছু করতে পারেনি। প্রথমার্ধে বলার মতো গোলের আক্রমণ সেভাবে কম হয়েছে। বরং ভুটান বলের দখলে কিছুটা এগিয়ে থেকে অন্তত তিনটি সুযোগ পেয়ে এগিয়ে যেতে পারেনি। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে ভুটানের একজনের হেড ক্রসবারের অল্প দূর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
১১তম মিনিটে তপুর লম্বা বল অফসাইড ফাঁদ ভেঙে ডান দিকে আক্রমণে যান ফাহিম। তবে তার শট ব্লক করে দেন ভুটানের এক ডিফেন্ডার। ১০ মিনিট পর আর একটি সুযোগ হাতছাড়া করে ভুটান। সতীর্থের ক্রসে ওয়াংডি নিমা পা ছোঁয়াতে পারেননি। পারলে হয়তো গোল পাওয়ার সুযোগ ছিল। ৩২তম মিনিটে বাংলাদেশকে বিপদ থেকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক মিতুল।
অহেতুক কারিকুরি করতে গিয়ে বিপজ্জনক জায়গায় সিনিয়র সোহেল রানা বল হারান নামগিলের কাছে। বল নিয়ে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে নামগিলের জোরালো শট শেষ মুহূর্তে লাফিয়ে ফিস্ট করে দলকে বাঁচান মিতুল। এরপর প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সোহেল রানার থ্রু থেকে বক্সে ঢুকে যান শাহরিয়ার ইমন। তবে তার শট আগুয়ান ইয়েশি গেলশেন ব্লক করে গোল হতে দেননি।
বিরতির পর ফাহিমের জায়গায় রাব্বি হোসেন রাহুল নামেন। মোরসালিনের জায়গায় জামাল। তবে তাতেও দলের খেলাতে তেমন ধার বাড়েনি। বলার মতো এই অর্ধে আক্রমণও করতে পারেনি বাংলাদেশ। বরং ভুটান আগের মতো বল নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে কয়েকবার হানা দেয়। যদি তাতেও গোল মিলছিল না। পরে নির্ধারিত সময়ের একদম শেষ মিনিটে গোল হজম করে ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
সতীর্থের হেড পাস থেকে ফাঁকায় বক্সের ভেতর থেকে ওয়াংচুক কিংগা ডান পায়ের আলতো প্লেসিংয়ে গোল করেন। গোল হজম করে সেটা শোধ করার জন্য ৫ মিনিট সময় পায় বাংলাদেশ। তবে অতিরিক্ত ওই ৫ মিনিটে গোলের কোনো পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে হাভিয়ের কাবরেরোর শিষ্যরা।
বাংলাদেশের একাদশ- গোলকিপার: মিতুল মারমা; ডিফেন্ডার: তপু বর্মণ, শাকিল হোসেন, সাদ উদ্দিন ও ইসা ফয়সাল; মিডফিল্ডার: মোহাম্মদ হৃদয়, সোহেল রানা ও মোহাম্মদ সোহেল রানা; ফরোয়ার্ড: ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, শাহরিয়ার ইমন ও শেখ মোরসালিন।