• ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

এক দশক পর জম্মু-কাশ্মীরে প্রথম নির্বাচন, কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপি ও কংগ্রেস , চমক দেখাবে জামায়াত

usbnews
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪
এক দশক পর জম্মু-কাশ্মীরে প্রথম নির্বাচন, কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপি ও কংগ্রেস , চমক দেখাবে জামায়াত
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৯০টি আসনের মধ্যে ২৪টিতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ভারতে লোবসভা নির্বাচনের পর এই প্রথম কোনো বড় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এক দশকের বেশি সময় পর ভারতের এই অঞ্চলে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি। এতে বলা হয়, স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয়েছে এই ভোটগ্রহণ। এক ঘণ্টায় ভোটার উপস্থিতি ছিল ১১ দশমিক ১ শতাংশ। ২০১৪ সালের পর জম্মু-কাশ্মীরে এটিই প্রথম বিধানসভা নির্বাচন।

২০১৯ সালে এই রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী ৩৭০ অনুচ্ছেদ অপসরণের পর এটিই প্রথম নির্বাচন। জম্মু-কাশ্মীর হচ্ছে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। যখন সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করা হয়েছিল তখন জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়। এবারের নির্বাচন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং তাদের পাশাপাশি কংগ্রেস এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স জোটবদ্ধভাবে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সবার জন্যই এই নির্বাচন বেশ গুরুত্ব বহন করছে।

অন্যদিকে তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে রাজ্যটির আরেক গুরুত্বপূর্ণ শরীক মেহবুবা মুফতির পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। অন্যান্য দলগুলোর মধ্যে রয়েছে আবদুল গনি লোনের পিপলস কনফারেন্স, গুলাম নবী আজাদের ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ আজাদ পার্টি এবং আলতাফ বুখারির আপনি পার্টি।

এই নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। দলটি সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বেশ কয়েকটি প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে। পুলওয়ামার চারটি, শোপিয়ানে দুটি, কুলগামে তিনটি, অনন্তনাগে সাতটি, কিশতওয়ারে তিনটি, ডোডায় তিনটি এবং রামবান ও বানিহালে দুটি করে আসনে ভোটগ্রহণ চলছে। এর মধ্যে জম্মু অঞ্চলের ৮টি ও কাশ্মীরে ১৬টি নির্বাচনী আসনে ভোট চলছে।

পুলওয়ামা নির্বাচনী এলাকাগুলির মধ্যে একটি যেখানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এই আসনে প্রথমবারের মতো নির্বাচন করছেন পিডিপি যুব নেতা ওয়াহেদ উর রহমান পারা। তিনি ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাবেক অভিজ্ঞ মহম্মদ খলিল ব্যান্ডের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পারা কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ইউএপিএ-এর অধীনে একটি মামলায় জামিনে রয়েছেন। ৭৩ বছর বয়সী খলিল ব্যান্ড এর আগে তিনবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। আসনটি পিডিপির শক্ত ঘাঁটি হিসাবে বিবেচিত হয়। তবে দলটি এবার কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছে। কেননা দলটির সামনে এবার শক্ত প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে জামায়াতের প্রার্থী তালাত মজিদ। জামায়াত ইঞ্জিনিয়ার রশিদের আওয়ামী ইত্তেহাদ পার্টির সাথে জোটে করে এবারের নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছে।

প্রথম ধাপের নির্বাচনে ২৪টি আসনে মোট ২৩ লাখ ২৭ হাজার ভোটার দেবেন। যার মধ্যে ১১ লাখ ৭৬ হাজার পুরুষ এবং ১১ লাখ ৫১ নারী ভোটার। বিধানসভা ডোডা, কিশতওয়ার, রামবান, অনন্তনাগ, পুলওয়ামা, কুলগাম এবং শোপিয়ান জেলার বিধানসভা কেন্দ্রে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা রহিতের পর হতে চলা প্রথম নির্বাচন ঘিরে উপত্যাকায় ব্যপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। জামায়াত জোট বিধানসভার নির্বাচনে চমক দেখাবে বলে দলটির নেতারা আশা করছেন।

প্রথম দফায় ২৪ আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। নির্বাচনের মূল প্রতিযোগিতায় পিডিপি। তবে ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে জোট বেঁধে শক্ত অবস্থানে রয়েছে কংগ্রেসও। দুর্বল রাজনৈতিক ভিত্তি নিয়ে মর্যাদার লড়াইয়ে রয়েছে বিজেপি।

২০১৪ সালের পর আবারও বিধানসভা নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন জম্মু-কাশ্মিরেরর বাসিন্দারা। লোকসভা ভোটের পর প্রথম কোনো হাইভোল্টেজ লড়াইয়ে মুখোমুখি রাজনৈতিক দলগুলো। ২৩ লাখের বেশি ভোটার ভোট দেবেন। ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিডিপি, বিজেপি, কংগ্রেসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নির্দল মিলিয়ে প্রার্থীর সংখ্যা ৯০৯ জন।

ভোট উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে ভারতের রাজনীতির স্পর্শকাতর এই অঞ্চল। সীমান্ত অঞ্চলে রাখা হয়েছে অতিরিক্ত নজরদারি। বুথের সামনে থাকছে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়।

এই ভোটকে দেখা হচ্ছে বিজেপির মর্যাদার লড়াই হিসেবে। নরেন্দ্র মোদির সরকার ২০১৯ সালে সংবিধানের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করলে বিশেষ মর্যাদা হারায় এই উপত্যকা। যার বিপরীতে এবার জনগণের সিদ্ধান্তের প্রতিফলন দেখা যাবে ভোট ব্যাংকে। যদিও এই অঞ্চলে রাজনৈতিক ভিত্তি দুর্বল গেরুয়া শিবিরের।