মুখের আলসার ভালো না হলে সবাই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন এই ভেবে যে, তার ক্যানসার হলো কিনা? মুখের আলসার ভালো না হলে রোগী ঘন ঘন ডাক্তার পরিবর্তন করে থাকেন। মুখের কিছু আলসার আছে যেগুলো পরবর্তী সময়ে ক্যানসারে রুপান্তরিত হতে পারে। ক্যানসার পূর্ববর্তী রোগগুলো হলো লিউকোপ্লাকিয়া, লাইকেন প্ল্যানাস, ইরাইথ্রোপ্লাকিয়া এবং ওরাল সাবমিউকাস ফাইব্রোসিস।
লিউকোপ্লাকিয়া সাধারণত পুরুষ এবং ধূমপায়ীদের বেশি হয়। এ রোগে মুখের দুই পাশে, জিহ্বার উপরিভাগে সাদা সাদা ছোপের মতো হয়। ছত্রাকের কারণে মুখের অভ্যন্তরে এমন অবস্থা হতে পারে। ছত্রাক বা ফাংগাসের কারনে হলে সেটি সাধারণত কাপড় বা গজ দিয়ে ঘষা দিলে উঠে যায়। কিন্তু লিউকোপ্লাকিয়ার ক্ষেত্রে সেরকম হয় না। এর মধ্যে নন হোমোজেনাস লিউকোপ্লাকিয়া (পুরোটা সাদা না হয়ে সাদা-লাল হয়) ক্যানসারে রূপান্তরিত হতে পারে। প্রয়োজনে টিস্যু বা মাংস কেটে বায়োপসি পরীক্ষা করে সুনিশ্চিত হতে হবে।
লিউকোপ্লাকিয়ার চেয়ে ভয়ংকর ইরাইথ্রোপ্লাকিয়া। মুখের মধ্যে সাধারণত গালের অভ্যান্তরে দেখতে লাল লাল হয়ে থাকে। এ রোগ থেকে ক্যানসারে রূপান্তরের হার অন্য রোগের চেয়ে বেশি।
ওরাল সাব মিউকাস ফাইব্রোসিস ও একটি ক্যানসার পূর্ব রোগ। পান-সুপারি বেশি খেলে এ রোগ হতে পারে। মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। এর ফলে রোগীর মুখের হা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কিছু কিছু রোগী একদমই হা করতে পারে না। এ রোগ ক্যানসারে পরিবর্তন হওয়ার পরিমাণ অনেক বেশি। তাই শুধু ধূমপান নয় বরং পান-সুপারি খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
ওরাল লাইকেন প্ল্যানাস ও ক্যানসার পূর্ব রোগ। যদিও এ রোগ থেকে ক্যানসার হওয়ার আশংকা তুলনামূলকভাবে কম। এ রোগ মহিলাদের বেশি হয়। উপমহাদেশের শতকরা ৯০% ভাগ মুখের ক্যানসার হয় ধূমপানের কারণে। প্রতি বছর প্রায় দেড় লাখ লোক মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। মুখের ক্যানসার সর্বমোট ক্যানসারের ৯ শতাংশ। উন্নত দেশে এ হার ২-৩ শতাংশ।
মেনোপজের কারণে মহিলাদের মুখে জ¦ালাপোড়া অনুভূত হয়। এ ক্ষেত্রে ভয় না পেয়ে যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। থাইরয়েড হরমোনের তারতম্যের কারণে ও মুখের ভিতরে সমস্যা হতে পারে। এ ধরনের সকল সমস্যা সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে।