• ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

কলেজে না এসেও বেতন নিতেন আওয়ামী লীগ সভাপতির স্ত্রী

usbnews
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪
কলেজে না এসেও বেতন নিতেন আওয়ামী লীগ সভাপতির স্ত্রী
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির স্ত্রী হওয়ার সুবাদে কলেজে না এসেও নিয়মিত বেতন নিতেন ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল নেপাল চন্দ্র দেবনাথের আশীর্বাদপুষ্ট এ রাজকীয় কর্মচারী মিস তানিয়া খাতুন। তিনি কলেজটির পাঠাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিভাগে কর্মরত আছেন। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর কলেজে পা পড়েনি তার। অথচ হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর হয়েছে যথারীতি। পেয়েছেন আগস্ট ২০২৪ মাসের বেতনও। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারীর স্ত্রী হিসেবে গত ৭-৮ বছর ধরে তিনি এ সুবিধা পেয়ে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের একাধিক শিক্ষক কর্মচারী জানিয়েছেন, তানিয়া খাতুনের জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারী ১৯৬৫। সে হিসেবে তার বয়স ৬০ বছর চলমান। এমপিও নীতিমালা অনুসারে তিনি ৬০ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারীর স্ত্রী হওয়ায় বিগত ৭-৮ বছর ধরে তিনি কলেজে না এসেই চাকরি করে গেছেন। কলেজের প্রিন্সিপালরা (সাবেক ও বর্তমান) হাজিরা খাতা তার বাসায় পাঠিয়ে একসাথে কাজা স্বাক্ষরসহ আদায় করে আনতেন। ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের ইতিহাসে এমন রাজকীয় চাকরীর সুযোগ আর কেউ পাননি।

ঘটনার বিষয়ে জানতে গ্রন্থাগারিক তানিয়া খাতুনের নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি কল রিসিভ করেননি।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল নেপাল চন্দ্র দেবনাথের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উনি এখন পিআরএলে আছেন। পিআরএলে থাকা অবস্থায় কলেজে আসা লাগেনা। স্বাক্ষরও করা লাগেনা। তাহলে স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে কেন? পিআরএল আবেদন না করেও তিনি কিভাবে পিআরএল সুবিধা পেতে পারেন? এমন প্রশ্নের সদুত্তোর না দিয়ে তিনি বলেন, আমি যা বলছি সেটাই বিশ্বাস করতে হবে।

সরকারিকরণ প্রক্রিয়ার অধীনস্থ অবসরপ্রাপ্ত যেসকল শিক্ষক-কর্মচারীগণ এমপিও নীতি অনুসারে ৬০ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে গেছেন, তাদের পিআরএল কিভাবে হিসেব হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তাদের কিছুই করার নেই। একই প্রক্রিয়ার অধীন তানিয়া খাতুনকে পিআরএলের কথা বলে অনুপস্থিত থাকা অবস্থায় যে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তা বৈধ কিনা? গ্রন্থাগারিক তানিয়া খাতুন কেন ৬০ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত অথবা সরকারিকরণ সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন না? এসব প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চির্কা চাঁদপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রিন্সিপাল আবু জাফর মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এমপিও বেতন গ্রহণ করা ব্যক্তির পিআরএলের বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করবো না।