• ৫ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২০শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

নেতানিয়াহুর ভাষণ জাতিসংঘে সবচেয়ে বিতর্কিত , নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিবাদে অনেক বিশ্বনেতা অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট

usbnews
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৪
নেতানিয়াহুর ভাষণ জাতিসংঘে সবচেয়ে বিতর্কিত ,  নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিবাদে অনেক বিশ্বনেতা  অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) তিনি ভাষণ দেন। তবে তিনি মঞ্চে ওঠার পরই ভাষণ প্রত্যাখ্যান করে সেখানে উপস্থিত অনেক রাষ্ট্রপ্রধান এবং তাদের প্রতিনিধিরা বের হয়ে গেছেন।

নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিবাদে অনেক বিশ্বনেতা সাধারণ অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন।

প্রথমে তুরস্কের স্থায়ী দূত অধিবেশন কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। এরপর একে একে তার পেছনে অন্যরাও বের হয়ে যেতে থাকেন।

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতানিয়াহুর ভাষণ প্রত্যাখ্যানে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকমী হামাস। এক বিবৃতিতে বলেছে, নেতানিয়াহু ৪১ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছেন। তার জাতিসংঘে ভাষণ নয় কারাগারে থাকা উচিত।

সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, আরব বিশ্বের প্রতিনিধিরাও নেতানিয়াহুর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের হয়ে গেছেন।

সাধারণ পরিষধের সরাসরি প্রচারিত অনুষ্ঠানে দেখা গেছে, নেতানিয়াহু বক্তব্য শুরু করার পর অধিবেশন কক্ষের বেশিরভাগ আসনই খালি পড়ে আছে।

নেতানিয়াহু প্রায় আধা ঘণ্টার মতো কথা বলেন। ওই সময় তিনি হামাস ও হিজবুল্লাহকে নিয়ে আলোচনা করেন। নেতানিয়াহু বলেন, যতদিন পর্যন্ত তারা তাদের লক্ষ্য অর্জন না করবেন ততদিন যুদ্ধ অব্যাহত রাখবেন।

গণহত্যায় অভুযুক্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন আমাদের লোকজনকে হত্যা করা হয়, তখন আমাদের প্রতিরক্ষার জন্য কেউ একটা আঙুল তোলে না। এখন আমাদের নিজেদের রাষ্ট্র আছে আর আমরা তা নিজেরা প্রতিরক্ষা দিচ্ছি। ইসরায়েল এ যুদ্ধে জিতবে, কারণ আমাদের আর কোনো পথ নেই।’

নেতানিয়াহু বক্তব্য শুরু করেন জাতিসংঘে তাঁর আসার যৌক্তিকতা তুলে ধরে। তিনি বলেন, জাতিসংঘে তিনি আসতে চাননি। কিন্তু বাধ্য হয়ে তাঁকে আসতে হয়েছে। অন্যান্য বিশ্বনেতাদের মিথ্যা ও অপবাদের জবাব দিতে তিনি এখানে এসেছেন।

নেতানিয়াহু তাঁর বক্তব্যে গত ৭ অক্টোবরে হামাসের হামলাকে ইহুদি নিধনের (হলোকাস্ট) সঙ্গে তুলনা করেন। তিনি হামাসের হাতে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার কথা বলেন।

নেতানিয়াহু তাঁর বক্তব্যে লেবাননে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি ইরানকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ইরানের যেকোনো স্থানে হামলা করতে সক্ষম ইসরায়েল। তিনি হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত লড়াই করার কথা বলেন। তিনি হামাসকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন।

গাজা যুদ্ধ প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা গাজায় পুনর্বাসনের চেষ্টা করছি না। আমরা সেখানে নিরস্ত্রীকরণ এবং উগ্রবাদমুক্ত এলাকা চাই। ইসরায়েল সরকার সেখানে আঞ্চলিক ও অন্য নেতাদের আঞ্চলিক বেসামরিক নেতাদের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। তবে তাদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান দেখাতে হবে। কিন্তু হামাসকে কখনোই মেনে নেবে না ইসরায়েল।’

ইসরায়েলের কসাই খ্যাত মানবতাবিরোধী অপরাধী ভাষণ দিচ্ছে এমন স্লোগান হচ্ছিলো জাতিসংঘের সদরদফতরের সামনে। বিশ্বের বহু দেশের মানুষ প্লেকার্ড হাতে নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন – গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকলেও ইসরায়েলকে কূটনৈতিক সুরক্ষা ও অস্ত্র দিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। বিশ্ববাসীর উদ্বেগ ও নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় গণহত্যা থামছে না।