মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম পাকিস্তান থেকে ৬ ঘণ্টার সফরে বাংলাদেশ আসছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে ৪ঠা অক্টোবর তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক, মাহবুব আলম শাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আমি বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দাতো সেরি আনোয়ার ইব্রাহিমকে অগ্রিম উষ্ণ স্বাগতম জানাচ্ছি।
মোবাইল ফোনে মালয়েশিয়া বিএনপি’র সহ-সভাপতি মানবজমিনের মালয়েশিয়া প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, “মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন। ঠিক কবে এবং কী কী বিষয়ে আমাদের অন্তর্র্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলাপ হবে তা দুই একদিনের মধ্যে জানা যাবে।”
তবে আশা করা হচ্ছে, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের টানে উন্নয়ন কৌশলের অবস্থা আরও গভীর করবে এবং পারস্পরিক কল্যাণকর সহযোগিতা প্রসারিত করবে যা- মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ ও একটি অভিন্ন কল্যাণকর রাষ্ট্র নির্মাণে কাজ করতে চাইবে।
বাংলাদেশের পটপরিবর্তনের পর ১৪ই আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম খুব দ্রুত বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সে সময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে অভিনন্দন জানাতে ফোন করে এই ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছিল।
সে সময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংখ্যালঘুসহ সকল বাংলাদেশির অধিকার রক্ষায় তার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন। ড. ইউনূস তাকে দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে এমন সময় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
সে সময় আলাপকালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক গভীর সন্তুষ্টির সঙ্গে স্মরণ করে বলেছিলেন, মালয়েশিয়া অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তা দিতে প্রস্তুত। বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ ও সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অংশীদার হতে প্রস্তুত। অধ্যাপক ড. ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে ফোনের জন্য ধন্যবাদ ও আশা করে বলেছিলেন, বাংলাদেশি কর্মীরা মালয়েশিয়ায় আরও কাজের সুযোগ পাবেন।
এর আগে, গত ১০ই আগস্ট প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অধ্যাপক ড. ইউনূসের জন্য একটি উষ্ণ অভিনন্দন বার্তা প্রকাশ করেছিলেন। ওই বার্তায় তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর কবিতা ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য’-এর উদ্ধৃতি দিয়ে দেশের তরুণদের ভিশন এবং অদম্য শক্তির প্রশংসাও করেছিলেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে জানতে মালেশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাপ্তাহিক ছুটির কারণে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য যে, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়ার আল-বুখারি ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল শান্তি পদক বিজয়ী অধ্যাপক ড. ইউনূস-এর দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং বাংলাদেশের একজন শুভাকাঙ্ক্ষী।