ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন নেপাল। একদিকে বন্যা, অন্যদিকে ভূমিধসে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ইতিমধ্যেই ১৭০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১১১ জন। নিখোঁজ প্রায় ৪২। শুক্রবার থেকে বন্যায় দেশটির পূর্ব ও মধ্য অংশ প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যেই হড়পা বান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঠমাণ্ডু উপত্যকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। কমপক্ষে ৩২২টি বাড়ি এবং ১৬টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ৩ হাজার ৬২৬ জনকে উদ্ধার করেছে। জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। স্থানীয়দের মতে, গত ৪০-৪৫ বছরে এধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়নি দেশ।
জানা গিয়েছে, শনিবার ধাদিং জেলায় ধসের কবলে পড়ে একটি বাস। মারা যান ১৯ জন। ভক্তপুরে বাড়ি ধসে ৫জনের মৃত্যু হয়। ধসের জেরে মাকওয়ানপুরের একটি ফুটবল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ছয় খেলোয়াড়ের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। আশার খবর একটাই, মঙ্গলবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও রবিবার থেকেই বৃষ্টির পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। শুক্র ও শনিবার লাগাতার বৃষ্টির ফলে দেশটির প্রধান নদী বাগমতির জলস্তর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। নেপালের এই বিপর্যয়ের আঁচ এসে পড়েছে ভারতেও।
শনিবার ভোর ৫টা পর্যন্ত কোশি নদীর উপর বীরপুর ব্যারেজ থেকে ৬ লক্ষ ৬১ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ৫৬ বছরের ইতিহাসে যাকে নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ১৯৬৮ সালে এই ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছিল ৭ লক্ষ ৮৮ হাজার কিউসেক জল। গণ্ডক নদীর উপ বাল্মীকিনগর ব্যারেজ থেকেও ৫ লক্ষ ৩৮ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। যার ফলে রবিবার বিহার সরকার রাজ্যের উত্তর, দক্ষিণ এবং মধ্য অংশে বন্যা সতর্কতা জারি করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন ১৩ জেলার ১৬ লক্ষেরও বেশি মানুষ। দু’টি ব্যারেজ থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ার ফলে ইতিমধ্যেই পশ্চিম ও পূর্ব চম্পারণ, গোপালগঞ্জ, আরারিয়া, কাটিহার, পূর্ণিয়া সহ বেশকিছু জেলার নীচু অঞ্চলগুলি প্লাবিত হয়েছে।