বঙ্গোপসাগর লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি শক্তি অর্জন করে সোমবার বিকাল ৪টার সময় সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। আম্পানের মতো একই পথে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিদরা।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আজকে মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ডানায় রূপ নিতে পারে। এটি ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর ভোরের মধ্যে ভারতের ওড়িশার পুরী এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী অংশে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আঘাত হানবে।
এ সময় দমকা বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার।মঙ্গলবার ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) এসব তথ্য দিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম লাইভমিন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই রাজ্যে ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ বাংলাদেশের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় অংশে প্রভাব ফেলবে। এটি আগের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের মতো একই পথে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। উপকূলে বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। সতর্কবার্তায় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নৌকা ও ট্রলার নিরাপদ আশ্রয় যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত হানবে। সঠিকভাবে ঠিক কোন স্থলভাগে আছড়ে পড়বে তা এখনো জানা যায়নি, তবে আইএমডি জানিয়েছে, এই নিম্নচাপটি ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর ভোরের মধ্যে পুরী এবং সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী অংশ দিয়ে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তর উপকূল অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। এসময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় থাকবে ১০০-১১০ কিমি। ঝোড়ো বাতাসের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিমি।
মঙ্গলবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘স্কুল শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, হুগলি, হাওড়া এবং কলকাতার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২৩ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষা সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখা যেতে পারে।’
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মধ্য-বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর আন্দামান সাগরের সংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২২ অক্টোবর সকালে নিম্নচাপে এবং ২৩ অক্টোবর মধ্য বঙ্গোপসাগরের ওপর একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। আইএমডি তার সর্বশেষ বুলেটিনে জানিয়েছে।
এদিকে, ওড়িশা সরকার উপকূলীয় জেলাগুলোতে স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে এবং ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের শতভাগ সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।