অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘সরকারের নির্বাচনমুখী প্রক্রিয়ার যে কাজ, সেটি শুরু হয়ে গেছে। নিবাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়ে গেছে বলতে পারেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটি হয়ে গেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সই হওয়ার পর আজ অথবা আগামীকালের মধ্যে প্রজ্ঞাপন হয়ে যাবে।’
মঙ্গলবার দুপুরে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে গেলে ভোটার তালিকা করা হবে। ভোটার তালিকা নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন ছিলো। বিগত নির্বাচনগুলো এমনই ভুয়া নির্বাচন ছিল যে, ভোটার তালিকা নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তোলেনি। এবার আমরা ভুয়া নির্বাচন করবো না। এবার সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবো। ফলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হবে।’
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন ব্যক্ত করেছেন ভলকার তুর্ক। তিনি বিচার বিভাগ স্বাধীন করার কথা বলেছেন। তাকে বলেছি, আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
মৃত্যুদণ্ডের বিধান প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ভলকার তুর্ক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে কথা বলেছেন। মৃত্যুদণ্ডের বিধান রহিত করা যায় কিনা বলেছেন। আমরা বলেছি, ফ্যাসিস্টদের বিচারের আগে এটি পরিবর্তনের প্রশ্নই ওঠে না।’
নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি বা অনুসন্ধান কমিটিতে দুই বিচারপতির নাম সুপারিশ করে তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্টের এই দুই বিচারপতির নাম সুপারিশ করে তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে।
একাধিক সূত্র জানায়, সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী এবং কমিটির সদস্য হিসেবে হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামানকে মনোনীত করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদে পাস হওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি। আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। সার্চ কমিটি আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে ইসি গঠনে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। তাদের মধ্য থেকেই পাঁচজনকে নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন রাষ্ট্রপতি। ছয় সদস্যের সার্চ কমিটির প্রধান বা সভাপতি হন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি।
সদস্য হিসেবে থাকেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক। এ দুই বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন হবেন নারী। সার্চ কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ১০ জনের নাম সুপারিশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার বিধান রয়েছে।