রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে অভ্যুত্থান হয়েছিল সেখানে ছাত্ররাই প্রধানত নেতৃত্ব দিয়েছিলে। সেই সমঝোতায় এখন মনে হচ্ছে কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। এমন মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা এটা প্রত্যাশা করি না। দেশ পুনর্গঠনের জন্য আমাদের এখনো অনেক কাজ বাকি।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থানে আমরা যেমন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে ছিলাম, সেই জায়গাটা কিন্তু এখনো আমাদের রাখা উচিত। রাজনৈতিক সমঝোতা চলছে, সেখানে আমরা চাইবো রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্রদের সঙ্গে ও জনগণের সঙ্গে এক ধরনের ঐক্যমতে এসে পৌঁছাক। সরকার যে কোনো ঐকম্যেকে সাধুবাদ জানায়। আমরা যেকোনো জাতীয়-রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ঐকমত্যের ভিত্তিতেই নেব।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের কথাটি বারবার ঘুরে ফিরে আসছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিন্তু কখনোই বলেনি তারা নির্বাচন দেবে না। মাত্র তিন মাস হয় ক্ষমতায় এসেছে। এখনো সব জায়গায় নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। পুলিশ প্রশাসন থেকে সব জায়গায় আরো অনেক কাজ করার বাকি আছে। আমরা যদি কিছু মৌলিক কাজ না করতে পারি, তাহলে কিন্তু নির্বাচন কোনো কাজে দেবে না। শুধু ক্ষমতার হাত বদল হবে। নিশ্চয়ই ক্ষমতার হাত বদলের জন্য এত এত মানুষ শহীদ হয়নি।
তিনি বলেন, এই যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, সেখানে আমরা যে প্রায়োরিটিটা দিয়েছি। আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে যারা আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন সেই পরিবারের কাছে দাঁড়ানো। তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা এবং তাদের পুনর্বাসন করা। এই কাজ এই সরকারের আমলে সম্পন্ন করা এবং উদ্যোগ নেওয়া। আমাদের দ্বিতীয় কাজটি হচ্ছে যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিচারের আওতায় আনা। আমরা চাই না জাতি বিভক্ত থাকুক। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে এই বিচার প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নিতে চাই এবং সম্পূর্ণ করতে চাই।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, তৃতীয় ধাপ হচ্ছে সংস্কার। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে পড়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতি দেশের জনগণের আস্থা নাই। আমাদের পুলিশ প্রশাসন নির্বাচন কমিশন গণমাধ্যম সবগুলোর প্রতি অনাস্থা তৈরি হয়েছে। সেগুলোতে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সামনে কীভাবে চলবে সেগুলো একটি রূপরেখা দিতে হবে এবং জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। এই নতুন বাংলাদেশে আমরা এই কাজগুলো ধাপে ধাপে করতে চাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস-চেয়ারম্যান মাহবুবা ফারজানা, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক (ডিজি) ফারুক ওয়াসিফ, তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা নিজামুল কবীর, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য প্রমুখ।