যুক্তরাষ্ট্রের নায়াগ্রা জলপ্রপাতে নিরাপত্তা রেলিং পেরিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে এক মা ও তাঁর দুই সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। নিউইয়র্ক পুলিশ বলছে, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং ‘ইচ্ছাকৃত’।
নিউইয়র্ক স্টেট পুলিশের তথ্যমতে, স্থানীয় সময় গত সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিউইয়র্ক স্টেট ট্রুপার জেমস ও’ক্যালাগানের মতে, সেখানে উপস্থিত কিছু ব্যক্তি এই পরিবারকে জলপ্রপাতের দিকে যেতে দেখেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নারীর নাম চিয়ান্তি মিন্স (৩৩)। ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে তিনি নিরাপত্তা রেলিং অতিক্রম করে লুনা আইল্যান্ডের কাছে জলপ্রপাতের দিকে এগিয়ে যান।
আজ ৩০ অক্টোবর বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিউইয়র্ক স্টেট পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ‘ইচ্ছাকৃত’ ছিল বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। তবে ওই নারীর এমন সিদ্ধান্তের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। তাঁদের লাশও এখনো উদ্ধার করা যায়নি।
নিহত শিশুদের মধ্যে রয়েছে ৯ বছর বয়সী রোমান রস্ম্যান এবং ৫ মাসের মেক্কা মিন্স। পুলিশ জানিয়েছে, এই পরিবার নায়াগ্রা জলপ্রপাত এলাকায় বসবাস করত।
ও’ক্যালাগান সাংবাদিকদের জানান, তদন্তকারীরা ঘটনার পেছনের কারণ বোঝার জন্য বেশ কিছুদিন সময় নিয়েছেন। জলপ্রপাত এলাকায় ‘অনেক নিরাপত্তাব্যবস্থা’ রয়েছে। এখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রায় নেই।
ও’ক্যালাগান আরও জানান, ওই নারীর পরিবারকে ঘটনাটি সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা চলছে। আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে, তা অনুযায়ী এটি একটি ইচ্ছাকৃত ঘটনা ছিল। তবে কারণ খুঁজে বের করা অনেক কঠিন।
চিয়ান্তি মিন্স পারিবারিক সহিংসতার একজন পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেছিলেন। তিনি বাফেলোর একটি স্কুল থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। ফেসবুকে তার বন্ধু কায়শাওনা মরগান লিখেছেন, ‘এ ঘটনা শোনার পর আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি। সারা রাত ঘুমাতে পারিনি।’
মিস মলিনা নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘আপনি এবং আপনার সন্তানরা আমার কাছে অনেক প্রিয় ছিলেন। এ ঘটনা শোনার পর আমি কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, তা বলে বোঝানো সম্ভব না।’
লুনা দ্বীপের ওপর দিয়ে যাওয়া নায়াগ্রা জলপ্রপাতটি নিউ ইয়র্কের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। এলাকাটি নিউ ইয়র্ক স্টেট অফিস অব পার্কস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন দ্বারা পরিচালিত হয় এবং সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা দর্শকদের জন্য খোলা থাকে। রাষ্ট্রীয় সংস্থা অনুসারে প্রতিবছর আট মিলিয়নেরও বেশি লোক এই পার্কে আসেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এই ঘটনা ছিল সর্বশেষ ট্র্যাজেডি। এর আগেও ২০২৩ সালে এক নারী তার ছেলেকে নিয়ে জলপ্রপাতটিতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। তবে উদ্ধারকারীরা পাঁচ বছরের শিশুটিকে বাঁচাতে সক্ষম হলেও ওই নারীকে বাঁচানো যায়নি।