বুধবার সকালে কার্যত ধোঁয়াশার চাদরে ঢেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। পার্শ্ববর্তী নয়ডা, গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রাম ও ফরিদাবাদে লক্ষ্য করা গিয়েছে ঘন ধোঁয়াশার স্তর! যার জেরে সকাল ৭টা থেকে দিল্লি নামতে পারেনি ৭টি বিমান। যেগুলির মধ্যে ছটিকে জয়পুর ও একটিকে লখনউয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।দিল্লির এই পরিস্থিতি অবশ্য আচমকাই এতটা খারাপ হয়েছে তা নয়।
গত মাসের শেষেই দেখা যায় শীতের মরশুম শুরু হতে না হতেই দিল্লিতে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। বাতাসের গুণমান সূচকও কমছে হু হু করে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কৃষিজমিতে ফসলের গোড়া আর খড়বিচালি পোড়ানোর কারণেই রাজধানী দিল্লিতে দূষণ মারাত্মক আকার নিতে থাকে। যে কারণে কেন্দ্রকে সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয়েছে।
দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা AQI পেরিয়েছে ৪০০-র সীমা। যাকে ‘মারাত্মক’ মাত্রা বলে বিবেচনা করা হয়। গুরুগ্রাম, নয়ডা এবং গাজিয়াবাদের দূষণ রয়েছে ‘খারাপ’ মাত্রায় । এর মধ্যে ফরিদাবাদের অবস্থা অবশ্য বাকিগুলির তুলনায় ভালো। সেখানে এখনও পর্যন্ত দূষণ ‘মধ্যমানে’ রয়েছে।ফরিদাবাদের AQI ১৮৮ । কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের মতে আনন্দ বিহার এবং আয়া নগর সহ দুটি মনিটরিং স্টেশন বায়ুর গুণমানকে “গুরুতর” বিভাগে রিপোর্ট করেছে।
পরিস্থিতির মোকাবিলায় দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রক কমিটির তরফে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের বাজি উৎপাদন, বাজি সঞ্চয়, বিক্রি এবং পোড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। দূষণ রোধে নিষেধাজ্ঞা না মেনে খড় পোড়ানোর অভিযোগে হয়েছে গ্রেপ্তারিও। গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান রাজধানীতে বলবৎ রয়েছে, যার মধ্যে চিহ্নিত রাস্তাগুলিতে যান্ত্রিক ঝাড়ু দেওয়া , পানি ছিটানো এবং নির্মাণ ও ধ্বংসের জায়গায় ধুলো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হয়। কিন্তু এতরকম পদক্ষেপের পরও পরিস্থিতি যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়েছে।
ইন্দো -গাঙ্গেয় সমভূমিতে বায়ুর গুণমান উদ্বেগজনক ছিল, বুধবার দেশের শীর্ষ ১০টি দূষিত স্থানের মধ্যে তিনটি বিহারের শহর, দুটি হরিয়ানার এবং চণ্ডীগড় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পরিস্থিতি প্রতিবেশী পাকিস্তানে উদ্বেগজনক। ইউনিসেফ জানিয়েছে পাকিস্তানের পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশে ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণের কারণে ১১ মিলিয়ন শিশু স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
সূত্র : এনডিটিভি