ভারতে বিমানে বোমা হামলার হুমকি যেন থামছেই না। এবার আকাশপথে সেবাদানকারী ভারতীয় সংস্থা ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে বোমাতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দেশটির মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাগপুর থেকে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় আসার পথে ওই ফ্লাইটে বোমাতঙ্ক ছড়ায়।
পরে বেশ তড়িঘড়ি ফ্লাইটটিকে ছত্তীসগঢ়ের রায়পুর বিমানবন্দরে নিয়ে অবতরণ করানো হয়। ফ্লাইটটিতে যাত্রী ও ক্রুসহ সবমিলিয়ে ১৯৩ জন আরোহী ছিলেন। জরুরি অবতরণের পর ওই বিমানটিতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮৭ জন যাত্রী এবং ৬ ক্রু সদস্যসহ কলকাতাগামী ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইট বৃহস্পতিবার সকালে বোমা হুমকির পরে রায়পুর বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রায়পুরের সিনিয়র পুলিশ সুপার সন্তোষ সিং বলেছেন, নাগপুর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা ওই বিমানটির বিষয়ে হুমকি পাওয়ার পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিমানটিকে রায়পুরের দিকে ঘুরিয়ে দেয়। পরে বিমানটি সকাল ৯ টার পরে ছত্তীসগঢ়ের রাজধানী রায়পুরের বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এদিকে জরুরি অবতরণের পর বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্য বিমানটিকে তাৎক্ষণিকভাবে বিচ্ছিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় বলে ওই কর্মকর্তা বলেছেন। তিনি বলেন, কারিগরি কর্মীদের পাশাপাশি বোম্ব স্কোয়াডের সদস্যরা বিমানটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, রায়পুর বিমানবন্দরের একটি নিরাপদ জায়গায় বিমানটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিমানে থাকা যাত্রীদের নামিয়ে চলছে তল্লাশি। যদিও এখনও পর্যন্ত বিমানের ভেতর থেকে কোনও বিস্ফোরক পদার্থ বা রহস্যজনক বস্তুর সন্ধান মেলেনি।
তবে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষী এবং বোম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা। রায়পুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কিরণ রাঠৌর জানিয়েছেন, সত্যিই বিমানের ভেতর বিস্ফোরক রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক সপ্তাহে ধারাবাহিক ভাবে একাধিক ভারতীয় বিমান সংস্থার কাছে বোমা হামলার হুমকি পাঠানো হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট তো বটেই, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটেও ছড়ানো হচ্ছে বোমাতঙ্ক। গত দু’সপ্তাহে পাঁচ শতাধিক ফ্লাইটে বোমা থাকার হুমকির তথ্য ছড়িয়েছে।
আর গত সপ্তাহেই কলকাতা বিমানবন্দরে আসা-যাওয়ার অন্তত সাতটি ফ্লাইটে বোমাতঙ্ক ছড়িয়েছে। যদিও পরে দেখা যায়, সব ফ্লাইটেই বোমা রাখার তথ্য ভুয়া।
এদিকে একের পর এক ফ্লাইটে বোমাতঙ্কের ঘটনায় উদ্বেগ বেড়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের। নরেন্দ্র মোদি সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একাধিক পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। কারা এই ভুয়া খবর ছড়াচ্ছেন, তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযানও চালানো হচ্ছে।