মওলানা ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নিউইয়র্কে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা দেশ ও প্রবাসে ভাসানীকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন মওলানা বাংলাদেশের রাজনীতিকদের আইকনিক নেতা, নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। তাঁর মতো নেতা ভারত উপমাহাদেশে বিরল। তিনিই একমাত্র নেতা যিনি ক্ষমতার শীর্ষে থাকার রাজনীতি না করে মেহনতি মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করেছেন। কুঁড়ে ঘরে থেকে রাজনীতি করেছেন। তিনি সকল ধর্মের উর্দ্বে উঠে সর্বাগ্রে মানবতা আর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করেছেন। তাঁকে নিয়ে দেশ ও প্রবাসে বেশী বেশী গবেষণা হওয়া দরকার। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাঁকে যথাযথ সম্মান জানাতে হবে। এজন্য সবাইকে কাজও করতে হবে।
ফাউন্ডেশনের সভাপতি আলী ইমামের সভাপতিত্বে সভা পরিচালণা করেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দীন নাসের। সভার শুরুতেই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়াও স্লাইড শো-তে মওলানা ভাসানীকে তুলে ধরা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা। ভারত উপমহাদেশের মজলুম জননেতা খ্যাত অন্যতম রাজনীতিবিদ। ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টামন্ডলীর সভাপতি। বক্তারা বলেন, মওলানা ভাসানী ছিলেন অবিসংবাদিত নেতা, আপসহীন নেতা। যার কাছে ধনী-গরিব কোন কিছুই ভেদাভেদ ছিলনা। বক্তারা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে মওলানা ভাসানীর মতো নেতার বড় প্রয়োজন উল্লেখ করে বলেন, দেশে ‘খামোশ’ বলার মতো নেতার দরকার।
বর্তমান প্রজন্মের কাছে মওলানা ভাসানীর সঠিক ইতিহাস পৌঁছানো না হলে ভবিষ্যতে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মানে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি না হওয়ার সম্ভাবনার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন কোন কোন বক্তা।
মওলানা ভাসানীকে বাংলাদেশের ‘ফাউন্ডার ফাদার’ হিসেবে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে মওলানা ভাসানীর অবদান জাতির কাছে চিরদিন অবিস্মরণীয় করে রাখার জন্য পাঠ্যবইতে সঠিক ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। পাশাপাশি সভা-সমাবেশের মাধ্যমে সর্বস্তরে ভাসানীকে তুলে ধরতে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের প্রতি দাবী জানানো হয় সভায়।
মওলানা ভাসানী’র ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিউইয়র্কে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা উপরোক্তস কথা বলেন। সভায় গভীর শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় মওলানাকে স্মরণ করেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। স্মৃতিচারণ করেন মওলানা ভাসানীর সান্নিধ্য পাওয়া বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ফাউন্ডেশন, নিউইয়র্ক গত ১৭ রোববার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে এই সভার আয়োজন করে।