সূর্য কত বড়? উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এর ভিতরে সেঁধিয়ে যেতে পারে পৃথিবীর আকৃতির ১৩ লক্ষটি গ্রহ। কিন্তু সেই সূর্যকেই একটা বিন্দুর মতো মনে হবে! এই নক্ষত্রটি অবশ্য আমাদের ছায়াপথের সদস্য নয়। ১ লাখ ৬০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত নক্ষত্রটি লার্জ ম্যাদেলানিক ক্লাউড ছায়াপথের তারা। এই প্রথম আমাদের ছায়াপথের বাইরের কোনো নক্ষত্রের ছবি তোলা সম্ভব হল। ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরির ভেরি লার্জ টেলিস্কোপ ইন্টারফেরোমিটারে ধরা পড়েছে এর ছবি। এ অতিকায় নক্ষত্রটি কিন্তু সত্যিই ‘দৈত্য’! আসলে কোনো নক্ষত্র ‘বুড়ো’ হলে সে হয়ে ওঠে ‘লাল দৈত্য’। এক অতিকায় লাল বল হয়ে তখন সে জ্বলে থাকে আকাশে। পরে অবশ্য দ্রুত ভর হারিয়ে নিজের বাইরের স্তরগুলোকে উড়িয়ে দেবে সে। যদিও ভেতরের মূল অংশ অক্ষতই থাকবে। ঘন হয়ে সেই তারাটি পরিণত হবে ‘শ্বেত ’। সেই সময় তাকে ঘিরে রাখবে এক গ্যাসের আস্তরণ। যাকে বলা হয় নেবুলা। এ অবস্থার শেষে ‘কালো ’ হয়ে পড়বে সেই নক্ষত্র। তবে সেই দশায় পৌঁছতে এখনও দেরি রয়েছে। আপাতত এক অতিকায় ‘লাল দৈত্য’ হিসেবে দৃশ্যমান এবং তার সেই বিরাট শরীরের সামনে আমাদের সূর্য কার্যতই বিন্দুবৎ! যার ডাকনাম দেয়া হয়েছে ‘বেহেমথ স্টার’। অর্থাৎ জলহস্তির মতো অতিকায়। সুপারনোভা হওয়ার পথে এখন সে নিঃসরণ করে চলেছে গ্যাস ও ধুলো। বলে রাখা ভালো, নক্ষত্রটির মতোই দশা একদিন আমাদের সূর্যেরও হবে। অন্য বহু তারার মতোই শক্তির অভাবেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে সেও। আদতে তো যে কোনো নক্ষত্রই একটি উত্তপ্ত গ্যাসের বল। যা নাগাড়ে শক্তি বিকিরিত করে চলেছে। সৌরজগতের ‘কর্তার’ বয়স প্রায় সাড়ে চারশ’ কোটি বছর। এত বছরের আয়ু সত্ত্বেও সূর্যকে ‘বুড়ো’ বলা যাবে না। কেননা নক্ষত্রের নিরিখে এ নেহাতই তুচ্ছ সময়। সেদিক বিচার করলে বলা যায়, সূর্য এক মাঝবয়সি তারা। নাসার বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, সূর্য তার অর্ধেক আয়ুর কাছাকাছি পৌঁছেছে। তারা জানাচ্ছেন, সূর্য এখনও অন্তত ৫০০ কোটি বছর বাঁচবে। সূত্র : রয়টার্স।