• ২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৮শে রমজান, ১৪৪৬ হিজরি

কাশী, মথুরা ও সম্ভলের পর এবার আজমির শরিফের জায়গায় মন্দির ছিল বলে দাবি হিন্দুত্ববাদীদের

usbnews
প্রকাশিত নভেম্বর ২৮, ২০২৪
কাশী, মথুরা ও সম্ভলের পর এবার আজমির শরিফের জায়গায় মন্দির ছিল বলে দাবি হিন্দুত্ববাদীদের
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

কাশী, মথুরা ও সম্ভলের পর এবার ভারতের বিখ্যাত মাজার আজমির শরিফের নিচে মন্দির আছে দাবি করে আদালতে পিটিশন দায়ের করেছে দেশটির উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এই পিটিশন দায়ের করার পর আজমীরের একটি আদালত দাবিটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি, বারাণসী, মথুরা ও ধরর ভোজশালাসহ সারাদেশের বড় বড় মাজারগুলোর ক্ষেত্রেও একই দাবি তুলেছে হিন্দু সেনা। – ভারতের এনডিটিভি।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, আদালতে দায়ের করা পিটিশনে ১৯১১ সালে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক হর্বিলাস সার্দার লেখা একটি বইয়ের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আজমির শরিফের চারপাশে হিন্দু ধর্মের মৃৎশিল্প ও খোদাই রয়েছে। ওই বইয়ে দাবি করা হয়েছিল, শিব মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে দরগাটি তৈরি করা হয়েছে ও এটির সবচেয়ে পবিত্রতম জায়গায় এখনো একটি জৈন মন্দির রয়েছে।

মাত্র দু’দিন আগে উত্তরপ্রদেশের সামভালে মসজিদের নিচে মন্দির থাকার দাবিতে জরিপ চালানো নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে তিন মুসলিমসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এবার রাজস্থানের আজমিরে অবস্থিত এই বিখ্যাত দরগাতে মন্দির রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিলেন স্থানীয় আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে ২০ ডিসেম্বর।

সূফি সাধক মইনউদ্দিন চিশতির দরগাটি আজমির শরিফ হিসেবে পরিচিত। পিটিশন দায়ের করা ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, দরগাটিতে একটি শিব মন্দির রয়েছে। পিটিশনাররা আবারও সেখানে হিন্দুদের পূজা করার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

পিটিশনারদের আইনজীবী যোগেশ শিরোজা বলেছেন, দেওয়ানি বিচারক মনমোহন চান্দেল এ ব্যাপারে আজমির দরগাহ কমিটি, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থার নয়াদিল্লি অফিসকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। তাদের সবাইকে নিজ নিজ জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এই বিচারক।

পিটিশন দায়ের করা উগ্রপন্থি হিন্দু সেনার প্রধান নেতা বিষ্ণু গুপ্ত বলেছেন, আমাদের দাবি হলো- আজমির শরিফকে ‘সংকট মোচন মহাদেব’ মন্দির হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। যদি দরগার কোনো ধরনের নিবন্ধন থেকেও থাকে, সেটি বাতিল করতে হবে। ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থাকে দিয়ে সেখানে জরিপ করাতে হবে ও জায়গাটিতে হিন্দুদের পূজা করার অধিকার দিতে হবে।

এদিকে, মাজার কমিটি এই দাবি অস্বীকার করেছে। আঞ্জুমান সৈয়দ জাদগানের সেক্রেটারি সৈয়দ সারওয়ার চিশতী বলেন, এখানে বহুতত্ববাদ প্রচার হয়। আফগানিস্তান থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়াসহ সব ধর্ম বর্ণের মানুষ এই মাজারে আসেন।

দরগা কমিটি বলছে, এই ধরনের পিটিশন ও আদালতের এমন সিদ্ধান্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও জাতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আদালত আজ তিনটি পক্ষকেই নোটিশ পাঠিয়েছে। আমরা কী করতে পারি দেখবো। কাশী ও মথুরার প্রাচীন মসজিদগুলিকে লক্ষ্য করেও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, যা মোটেই ভালো হচ্ছে না।