• ২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে রজব, ১৪৪৬ হিজরি

তুরস্কের অগ্রাধিকার হচ্ছে তার সীমানার বাইরের শান্তি রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের সুরক্ষা দেওয়া : প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান

usbnews
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৫, ২০২৪
তুরস্কের অগ্রাধিকার হচ্ছে তার সীমানার বাইরের শান্তি রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের সুরক্ষা দেওয়া : প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারকে প্রকৃত রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে, যাতে সিরিয়ার পরিস্থিতির আর অবনতি না ঘটে। মঙ্গলবার ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় তিনি এসব কথা বলেন। এরদোগান ইরাকি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তুরস্ক তার জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বার্থ অনুযায়ী, পিকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং তার শাখাগুলোকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে।

এরদোগান বলেন, তুরস্কের অগ্রাধিকার হচ্ছেÑ তার সীমানার বাইরের শান্তি রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের সুরক্ষা দেওয়া। সিরিয়ার একতা, স্থিতিশীলতা এবং আঞ্চলিক অখ-তার গুরুত্ব তুলে ধরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জানান, এ বিষয়ে তুরস্ক এবং ইরাক একে অপরের সঙ্গে একমত। এটি অব্যাহত থাকবে। সর্বশেষ এই পরিস্থিতি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের ব্যাপক আক্রমণের অংশ যা গত কয়েকদিন ধরে দেশটির সবচেয়ে বড় আলেপ্পো শহরের উত্তরাঞ্চলের বড় অংশ দখল করেছে। সেইসঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলের শহর ও গ্রামগুলোও বিদ্রোহীরা দখল করেছে। মঙ্গলবার, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক দ্রুত অগ্রগতি দেখিয়ে দিচ্ছে যে প্রেসিডেন্ট আসাদকে জনগণের সঙ্গে পুনর্মিলন ঘটাতে হবে ও বিরোধী পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।

অন্যদিকে, আসাদ ও তার সরকারের কর্মকর্তাদের দাবি, বিরোধীদের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সমাধান খুঁজতে তারা রাজি নয়। আসাদ বিরোধীদের প্রধান সমর্থক তুরস্ক সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। এর উদ্দেশ্য হলো দক্ষিণ সীমান্তবর্তী কুর্দি সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর সৃষ্ট নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলা করা ও ৩০ লাখেরও বেশি সিরীয় শরণার্থীর নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা। তবে আসাদ বলেছেন, তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার শর্ত হিসেবে উত্তর সিরিয়া থেকে তুর্কি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে।

অপর এক খবরে বলা হয়, তুরস্কে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগানের বক্তব্যে বিঘœ ঘটানোর অভিযোগে নয় বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত শুক্রবার একটি ফোরামে এরদোগানের টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত বক্তব্যের সময় এই ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, তুর্কি সরকার জনসমক্ষে ইসরাইলে তেল রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিলেও বাস্তবে তা অব্যাহত রেখেছে। ঘটনার সময় ‘গাজায় বোমা নিয়ে যাচ্ছে জাহাজ’ এবং ‘গণহত্যার ইন্ধন বন্ধ করুন’ সেøাগান দেন বিক্ষোভকারীরা। তারা অভিযোগ করেন, এরদোগানের সরকার ফিলিস্তিনের পক্ষে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না।

এরদোগান বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার সন্তানেরা, ইহুদিবাদীদের মুখপাত্র হবেন না। আপনারা যতই তাদের কণ্ঠ ও চোখ হিসেবে উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করুন, সফল হবেন না। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের ইহুদিবাদীরা জানে রজব তাইয়েপ এরদোগানের অবস্থান। কিন্তু আপনাদের তা এখনো বোঝা হয়নি। পুলিশ দ্রুত বিক্ষোভকারীদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয়। পরে ইস্তাম্বুলের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয় অভিযোগ আনে, এই গোষ্ঠীটি ভেতরে ও বাইরে সমন্বিতভাবে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্টকে অপমান এবং অবৈধ সমাবেশে অংশগ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এছাড়া, অভিযুক্তদের বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে আটক রাখার আবেদন জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছে তুরস্কের বিরোধী দল ও মানবাধিকারকর্মীরা। প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)-এর নেতা ওজগুর ওজেল বলেছেন, এরদোগানের সামনে প্রতিবাদ করার কারণে নয় তরুণকে গ্রেফতার করা গণতন্ত্রের ওপর একটি বড় আঘাত। তারা তাদের মতপ্রকাশের অধিকার প্রয়োগ করছিল। তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া উচিত। ডেইলি সাবাহ।