দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়া হতে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে এবং সরকারকে অসহযোগের সমর্থনে নিউইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃবৃন্দ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে এক গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এরআগে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কয়েকশ নেতাকর্মী নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে শোভাযাত্রা সহ জড়ো হন। পরে নেতা কর্মীরা নির্বাচন বর্জন এবং অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে প্রবাসীদের লিফলেট বিতরণ করেন।
এ সময় উপস্থিত নেতারা বলেন , যার পরিবারের ভোটারদেরকে নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে না যেতে আহ্বান জানানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। বর্তমান সরকার দেশের সকল বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে একতরফা ডামি নির্বাচন করছে। যেখানে দেশের মানুষ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার সেই দাবিকে উপেক্ষা করে গায়ের জোরে প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করেছে। তবে এজন্য সরকারকে কঠিন মাশুল দিতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণের আন্দোলন কখনো বৃথা যায়নি, এবারও যাবেনা ইনশাআল্লাহ। আগামী ৭ জানুয়ারি দেশের জনগণ ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোট দেওয়া হতে বিরত থাকার আহ্বান জানান বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা।
নির্বাচন বর্জন এবং অসহযোগ আন্দোলনের পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে প্রবাসীদের লিফলেট বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার হোসেন, আবদুস সবুর, কাজী আজম, গিয়াস উদ্দিন, ফারুক চৌধুরী, ফিরোজ আহম্মেদ, সালেহ আহম্মেদ চৌধুরী , সাইদুল হক, সাঈদ এম রেজা, বাসেত রহমান, মো. সুরুজ্জামান, মোশারফ হোসেন সবুজ, শফিক রহমান দুলাল, জীবন শফিক, রফিকুল মাওলা, মোস্তাক আহম্মেদ, ফারুক হোসেন মজুমদার, এম এ বাতিন, নুর আলম মাহফুজুল, মাওলা নান্নু, মো. আবু তাহের, আবুল কালাম, আব্দুর রহিম, ফজলুল হক, আমিনুল ইসলাম, কাওছার আহম্মেদ, মাজহারুল ইসলাম জনি , আল মামুন সবুজ, বাবুল দেওয়ান, ফিরোজ হায়দার, মাহবুব আলম, মো. মিজানুর রহমান, এবাদ চৌধুরী, বেলাল চৌধুরী ও লোকমান হোসেন সহ অনেকে।
উপস্থিত নেতারা বলেন, ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতলেও সেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হারবে। এই তামাশার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হওয়া মানেই হচ্ছে বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের ভোটাধিকার ও গনতন্ত্রের পরাজয় হওয়া। এই ডামি নির্বাচনে কোনো রকম সহযোগিতা করা মানেই হলো রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধ করা। প্রহসনের নির্বাচনে প্রত্যেক সহযোগীকে সামনে রাষ্ট্রদোহীতার অপরাধে এই বাংলার মাটিতে বিচার করা হবে ইনশাআল্লাহ। জনগণ এই রাষ্ট্রদ্রোহ আপরাধ আর চলতে দিতে চাই না।
পাতানো নির্বাচনকে ‘না’ বলুন; ভোটদানে বিরত থাকুন :নিউইয়র্কে জেএসএফ, জাগপা, বিএনপি
বাংলাদেশের আগামী ৭ই জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন বর্জনের লক্ষ্যে আজ নিউইয়র্কের বিভিন্ন জায়গায় জনসংযোগ, লিফলেট বিতরণ ও মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আয়োজনে জাতীয় সম্মিলিত ফোরামের ( জেএসএফ) হাজী আনোয়ার হোসেন (লিটন) , যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি মোঃ রহতুল্লাহ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির মোস্তফা কামাল পাশা (বাবুল), আহসান উল্লাহ বাচ্চু, মোঃ হাসানসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন , হিসাবে তামাশা ও ভাঁওতাবাজীর নির্বাচন প্রতিহত করতে জনগণকে ভোটদানে বিরত থাকার আহবান, ঘোষিত তফসিল বাতিল ও কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে এক প্লাটফরমে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। অন্যথায় আমাদের জাতিসত্বা হুমকীর মুখোমুখি পড়বে।
বক্তারা বলেন , সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্যই রাষ্ট্রীয় সংবিধান ও মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন করছে। কেড়ে নেওয়া হয়েছে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার। তারা ২০১৪ সালে একদলীয় ও তামাশার নির্বাচন করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে জনগণের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। ২০১৮ নৈশভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে দেশকে লুটপাট, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছে। তারা একইভাবে একতরফা ছলচাতুরী ও প্রতারণার নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে চায়। কিন্তু তাদের সে স্¦প্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে-ইনশাআল্লাহ। তিনি সরকারকে নির্বাচনের নামে আত্মপ্রবঞ্চনা বন্ধ করে অবিলম্বে পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। অন্যথায় তাদের জন্য ইতিহাসের করুণ পরিণতি অপেক্ষা করছে।
গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন , আপনারা দেখছেন একজন এমপি বাংলাদেশে থেকে টাকা লুট করে ইংল্যান্ডে কিভাবে টাকা পাচার করেছে, তারা এরকম পাচার করতে চায়। ব্যাংক ডাকাতি ও জনগণের টাকা লুট করতে চায়, টাকা লুট ও পাচার করে তারা আরো বেশি সুখে থাকতে চায়। কিন্ত দেশ জাহান্নামে যাক, জনগণ জাহান্নামে যাক তাতে তাদের কিছু যায় আসে না।দেশে কোনো নির্বাচন নেই, এখানে জনগণের ভোটাধিকার ও কথা বলার স্বাধীনতা নেই। এটি কোনো নির্বাচন নয়, এটি জনগণের সাথে প্রতারণা মাত্র। আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন না, এ নির্বাচন বর্জন করুন, তাদের বিরুদ্ধে সবাই একসাথে রুখে দাঁড়ান।