এমসি কলেজ ইস্যু নিয়ে ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ : পায়ের রগ কাটার মতো কোনো চিহ্ন আমরা পাইনি
পায়ের রগ কাটার মত কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি: চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দিয়ে এমসি কলেজ অধ্যক্ষ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগের বিষয়ে আজ বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সংবাদ সম্মেলন করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দরা।
সংবাদ সম্মেলনের শেষের দিকে একজন সাংবাদিক উপস্থিত নেতৃবৃন্দের কাছে দুইটি প্রশ্ন করেন। প্রশ্নের প্রথম পর্বে তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্টকে বিদায় করার জন্য ছাত্রদল, ছাত্রশিবির এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একসাথে আন্দোলন করেছেন। ৬ মাস যেতে না যেতে এমন কী ঘটনা ঘটলো যে কুয়েটে এই বিশৃঙ্খলা হলো? প্রশ্নের দ্বিতীয় পর্বে প্রশ্ন ছিলো, কুয়েটের ইস্যুটি আপনারা সংবাদ সম্মেলনে সীমিত রাখবেন নাকি সিনিয়ররা বসে আলোচনা করে সমাধন করবেন?
প্রশ্নের এই প্রথম পর্ব শেষ হতেই উপস্থিত ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরকে বলেন, ‘শিবিরের উপর দায় দিয়ে দাও।’ এসময় নাছির ‘হুম’ বলে সায় দেন।
বিভিন্ন টেলিভিশনের লাইভ ভিডিও দেখে তাদের এই আন্তঃযোগাযোগ নিশ্চিত হওয়া যায়।
বেসরকারি টেলিভিশন যমুনার সংবাদ সম্মেলনটির লাইভ ভিডিওর ১৯ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের মাথায় শিবিরের উপর দেওয়ার কথাটি শোনা যায়।
‘শিবিরের ওপর দায় দিয়ে দাও’ সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতির মন্তব্যের নিন্দা
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতির ‘শিবিরের ওপর দায় দিয়ে দাও’ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। আজ (বৃহস্পতিবার) ২০ ফেব্রুয়ারি এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এই নিন্দা প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতির ‘শিবিরের ওপর দায় দিয়ে দাও’ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। আজ (বৃহস্পতিবার) ২০ ফেব্রুয়ারি এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এই নিন্দা প্রকাশ করেন।
কুয়েট ইস্যু নিয়ে ফেসবুক পোস্টের জের , তামিরুল মিল্লাত শিবির নেতাকে কোপালো ছাত্রদলের কর্মীরা
কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার জেরে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী ক্যাম্পাস ছাত্রশিবিরের এক নেতাকে হাত ও মাথায় কুপিয়েছে সংগঠনটির একদল কর্মী। আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর মাদ্রাসাটির পার্শ্ববর্তী বাঁশতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাস্থল থেকে মামুন নামে শাখা ছাত্রদলের এক কর্মীকে আটক করেছে উপস্থিত ছাত্র-জনতা। তিনি মাদ্রাসাটির আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বর্তমানে তিনি টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন থানাটির তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কানদার হাবিব।
অন্যদিকে, ভুক্তভোগী ফজলে রাব্বীও আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও মাদ্রাসাটির একটি ওয়ার্ডের ছাত্রশিবিরের সভাপতি। তারা দুইজন সহপাঠী বলে জানা গেছে।
আটক ছাত্রদল কর্মী ও তার ফেসবুক গ্রুপে ছাত্রদলের সংশ্লিষ্টতা
জানা যায়, কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি পোস্ট দেন ফজলে রাব্বী। এ ঘটনায় আজ সন্ধ্যার পর তাকে মাদ্রাসাটির পাশে বাঁশতলা এলাকায় একটি ভবনে নিয়ে যান মামুনের নেতৃত্বে কয়েকজন ছাত্রদল কর্মী। এসময় তার সঙ্গে ছিল মাহফুজ, বাদশা ফাহাদ, রাহাত, মাসুদ ও নাহিয়ান। এসময় পোস্টটি দেয়ার বিষয়ে তাকে জেরা করতে থাকেন তারা। জেরার সময় পরিবারকে ১০ হাজার টাকাও পাঠাতে বলেন তারা।
এক পর্যায়ে তারা মারধর শুরু করলে ফজলে রাব্বী চিৎকার দিলে কয়েকজন পথচারী ঘটনাস্থলে আসতে আসতে ফজলে রাব্বীকে ছুরি দিয়ে হাত ও মাথায় আঘাত করেন। এতে ফজলে রাব্বীর মাথায় আঘাত ছুরির কোপ লেগে রক্তাক্ত হলে পথচারী এসে তাকে উদ্ধার করেন। এসময় মামুন বাদে বাকিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় এবং মামুনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর ফজলে রাব্বী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহত ফজলে রাব্বী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, অভিযুক্তরা ঝামেলা হয়েছে বলে আমাকে বাঁশতলা এলাকায় ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে একটি রুমে আগে থেকে কয়েকজন অবস্থান করছিলেন। তখন তারা আমাকে বলেন, আমি কেন ছাত্রদলের বিরুদ্ধে পোস্ট করেছি, এ কথা বলতে বলতে তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমাকে কোপায় তারা। আমি জীবন বাঁচাতে দৌড়ে পালিয়ে যাই।
এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে মামুনকে আটক করার পর জেরা করেন উপস্থিতিরা। এসময় মামুন তাদেরকে বলেন, তার সঙ্গে রাব্বীর আগে কোনো ঝামেলা ছিল না। এসময় তাকে ছাত্রদল করে কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি ‘হ্যাঁ’ বলে উত্তর দেন। এসময় তিনি বলেন, আমরা তিনজন বিকেলে হাঁটতে বের হয়েছি। তারা সবাই ছাত্রদল করি।
জানতে চাইলে মাদ্রাসাটির সাবেক ছাত্র ও টঙ্গী পূর্ব থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য ফজলে রাব্বী রাফসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ঘটনার বিস্তারিত জানি না। তবে মাদ্রাসাটির সাবেক ছাত্র হওয়ায় আমাকে অনেকে ঘটনাটি জানতে ফোন করেছেন।
.jpg)
‘‘তবে আমি যতটুকু শুনেছি, তারা একই ব্যাচের। মারামারি করছে মেয়েঘটিত কারণ নিয়ে। তবে মাদ্রাসা থেকে অনেকেই ঘটনাটি ছাত্রদল-শিবির বলে এখন চালিয়ে দিচ্ছেন।’’
ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে অভিযুক্তের ছবি রয়েছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে তো অনেকেই যায়, তবে দেখতে হবে সে নেতা নাকি কর্মী। বিস্তারিত না জানলে তো আমি আর জানি না। এসময় তিনি মামুনকে চেনেন না বলে জানান তিনি। তবে মাদ্রাসাটির একটি সূত্রে জানায়, মামুনকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেন ফজলে রাব্বী রাফসান।
মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ ড. হেফজুর রহমানের কাছে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
তবে টঙ্গী পশ্চিম থানা থানাটির তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইস্কানদার হাবিব দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, উত্তেজিত জনতা তাকে আটক করলে থানা পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। যেহেতু ঘটনাটি টঙ্গী পূর্ব থানায়, সেহেতু তাকে সেখানে হস্তান্তর করা হবে।
তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী ক্যাম্পাস ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তাকে ডেকে নিয়ে কোপানোর পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে অভিযুক্তরা। পরে স্থানীয়রা অভিযুক্ত একজনকে আটক করে। আহত শিক্ষার্থী রাব্বি শিবিরের দায়িত্বশীল। ঘটনায় জড়িতরা সবাই ছাত্রদলের নেতাকর্মী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় মামলা করবে বলে তিনি জানান।
এমসি কলেজ ইস্যু নিয়ে ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ : পায়ের রগ কাটার মতো কোনো চিহ্ন আমরা পাইনি
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি মন্তব্যের (কমেন্ট) জেরে সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তারা হলেন- মিজানুর রহমান রিয়াদ ও জাহিদুল ইসলাম হৃদয়।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে কলেজ ছাত্রাবাসের ১ম ব্লকে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে দুজনকেই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ হামলায় আহতের একজন মিজানুর রহমান রিয়াদ। ঘটনার পর ফেসবুকে তার পায়ের রগ কাটা হয়েছে বলে ছড়িয়ে পড়েছে। পরবর্তীতে এ নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে ছাত্রদলসহ একাধিক সংগঠন। তবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ঘটনায় আহতদের কারও রগ কাটার মত বড় ইস্যু নিয়ে কোনো বক্তব্যও তাদের চিকিৎসকরা দেয়নি। তাই এ দাবি সঠিক নয় বলে জানান মেডিকেলের উপ-পরিচালক।
শাখা ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে উঠা এই অভিযোগ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কথা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী সঙ্গে। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আহত দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাদের একজন মিজানুর রহমান রিয়াদ ও অন্যজন জাহিদুল ইসলাম হৃদয়। তবে তাদের অবস্থা গুরুতর নয়।
ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, হৃদয়ের হাত কিছুটা ফুলে গিয়েছিল, তবে এক্স-রেতে কোনো ভাঙা ধরা পড়েনি। আর রিয়াদ সামান্য আহত হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর সে আমাদের না জানিয়েই হাসপাতাল থেকে চলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, পায়ের রগ কাটার মতো কোনো চিহ্ন আমার চিকিৎসকরা পাননি। রগ কাটার মত বড় ইস্যু নিয়ে কোনো বক্তব্যও আমাদের চিকিৎসকরা দেননি। হৃদয়ের যে পায়ে আঘাত লেগেছে, সেটির যথাযথ চিকিৎসা করা হয়েছে। যদিও সেটি খুব গুরুতর নয়। তবে সে চিকিৎসা শেষ না করেই চলে গেছে।
পায়ের রগ কাটার মত কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি: চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দিয়ে এমসি কলেজ অধ্যক্ষ

আহত শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান রিয়াদ ও কলেজ অধ্যক্ষ
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি মন্তব্যের (কমেন্ট) জেরে সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তারা হলেন- মিজানুর রহমান রিয়াদ ও জাহিদুল ইসলাম হৃদয়।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে কলেজ ছাত্রাবাসের ১ম ব্লকে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে দুজনকেই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ হামলায় আহতের একজন মিজানুর রহমান রিয়াদ। ঘটনার পর ফেসবুকে তার পায়ের রগ কাটা হয়েছে বলে ছড়িয়ে পড়েছে। পরবর্তীতে এ নিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে ছাত্রদলসহ একাধিক সংগঠন।
শাখা ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে উঠা এই অভিযোগ নিয়ে কথা হয় এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজের সঙ্গে। আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে চিকিৎসকের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আহত শিক্ষার্থীর পায়ের রগ কাটার মত কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ বলেন, ভুল বুঝাবুঝি নিয়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে। আমি হলের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, রাতের সাড়ে ১১টার পর কিছু শিক্ষার্থী তার রুমে আসে। তার সাথে কথা কাটাকাটি হয় এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে। এতে কোনো সংগঠনের কেউ জড়িত ছিল না। যাদের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে তারা সাধারণ শিক্ষার্থী।
অধ্যক্ষ বলেন, এ ঘটনার পর আজ আমরা হাসপাতালে গিয়ে আহত শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। তখন সে আমাদের জানায়, তাকে যারা হামলা করেছে তারা শিবিরের সাথে জড়িত। হাসপাতালে এবং তার পায়ের দিকে একটি স্টিচ (সেলাই) দেখতে পেয়েছি।
তিনি আরও জানান, আমরা তাকে নাক ফোলা দেখতে পেয়েছি। আর আমি চিকিৎসকের সাথে কথা বলেছি। চিকিৎসক জানায়, পায়ের রগ কাটার মত কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
‘‘পায়ে কোন বস্তুর আঘাতে হয়তো থেঁতলে গেছে। তাই একটি স্টিচ (সেলাই) করতে হয়েছে। বর্তমানে তার শারীরক অবস্থা ভালো আছে। তাকে সকাল ১১টায় হাসপাতাল থেকে রিলিজ করা হয়েছে।’’
এমসি কলেজের ঘটনা দেখে আবরার ফাহাদের কথা মনে পড়ে: ঢাবি ছাত্রদল সভাপতি
সিলেটের এমসি কলেজে এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলায় ছাত্রশিবিরের বিচার চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ করেছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় টিএসসি থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি চত্বর হয়ে আবার টিএসসির ডাস এলাকায় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় তারা কুয়েটের উপাচার্যকে লাঞ্ছিত করার ঘটনারও নিন্দা জানান।
বিক্ষোভে দলটির নেতাকর্মীদের ‘রগকাটার রাজনীতি বাংলাদেশে চলবে না’, ‘শিবিরের সন্ত্রাস, রুখে দাও ছাত্রসমাজ’, ‘সিলেটে রগ কাটে, প্রশাসন কী করে’ একাধিক স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, সিলেটে এমসি কলেজের ঘটনা দেখে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আবরার ফাহাদের কথা মনে পড়ে। বুকে রক্তক্ষরণ হয়। খুলনা উপাচার্যের উপর একদল উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ বেশ ধরে লাঞ্ছনা ও হামলা করেছে। ৫ আগস্টের পর যে ঐক্যের সৃষ্টি হয়েছিল, সে ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য একটি গুপ্ত সংগঠন উঠেপড়ে লেগেছে।
‘ফেসবুক কমেন্টের জেরে শিবির কর্মীরা আমাকে মারধর করেছে’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি মন্তব্যের (কমেন্ট) জেরে সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে কলেজ ছাত্রাবাসের ১ম ব্লকে এ ঘটনা ঘটেছে।
আহতদের একজন মিজানুর রহমান রিয়াদ। তিনি এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার সহ-তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক। তিনি ওই ব্লকের ১১১নং কক্ষের বাসিন্দা। পরে আহত অবস্থায় রিয়াদকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী রিয়াদ ও তালামীয এটি কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের হামলা বলে দাবি করলেও ছাত্রশিবির এটি অস্বীকার করছে। তারা বলছে, এরকম কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে শিবিরের দূরতম সম্পর্ক নেই। ঘটনাটিতে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
এদিকে, আহত আরেকজন ওই ব্লকের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম হৃদয়। তিনিও সিলেটের একটি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ছাত্রাবাসের ওই ব্লকের শিক্ষার্থীদের থেকে জানা যায়, বুধবার মধ্যরাতে ওই ব্লকের ৩ জন শিক্ষার্থী রিয়াদের রুমে প্রবেশ করেন৷ তখন তারা তার কাছে একটি পোস্টের কমেন্টের ব্যাপারে জানতে চান। সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে একপর্যায়ে বিষয়টি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে সেখানে আরও ২/৩ জন প্রবেশ করে রিয়াদকে মারতে থাকেন এবং রিয়াদও প্রাণপণ চেষ্টা করেন ফিরিয়ে দিতে। একপর্যায়ে একজন রিয়াদকে ধাক্কা দিলে তিনি দরজার ছিটকিনিতে পড়ে পায়ে আঘাত পায় আর এতে রক্তক্ষয় হয়। পরে ছাত্রাবাসের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এস আহত অবস্থায় রিয়াদকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এর আগে কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় একটি নিউজের কমেন্টে রিয়াদ লিখেন, ‘‘কীসের জন্য এত ত্যাগ করলাম। দিনের বেলা পুলিশের টিয়ারশেল আর লাঠিচার্জ। রাতে পালিয়ে থাকলাম। সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাসের স্বপ্নে এত ছাত্র প্রাণ দিল। এখন যদি গুপ্ত সংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বসেন তাহলে এই ত্যাগের মূল্য কী।’’
আহত শিক্ষার্থী রিয়াদ জানান, ফেসবুকের একটি কমেন্টের জেরে তার ওপর হামলা করা হয়েছে। হামলাকারীররা এমসি কলেজ শিবির কর্মী। জানতে চাইলে রিয়াদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ফেসবুকের একটি কমেন্টের জেরে শিবিরের কর্মীরা আমার ওপর হামলা করেছে। এসময় প্রতিবেদককে কয়েকজনের নামও বলে তিনি।
এ বিষয়ে এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাইল খান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনায় শিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দুই শিক্ষার্থীর মাঝে তর্কের জেরে এরকম ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটিতে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা জুলাই বিপ্লবের পর থেকে দেখে আসছি, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর তালামীয নেতাকর্মীরা ছাত্রশিবিরের কর্মকাণ্ডকে মেনে নিতে পারছে না বরং উল্টো পালিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কলেজ ক্যাম্পাসে গোপন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, যার অংশ হিসেবে অভিযোগকারী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছেন এবং তার সাথে যুক্ত হয়ে ফ্যাসিস্ট ছাত্রলীগ ও তাদের দোসর এবং তৃতীয় একটি পক্ষ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য তিলকে তাল বানিয়ে ছাত্রসমাজকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে।
এমসি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ জানান, এ ঘটনায় কোনো শিক্ষার্থী যোগাযোগ করেনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখার পর কলেজের উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও হোস্টেল সুপারকে নিয়ে হোস্টেলে যাই এবং পরবর্তীতে ওসমানী মেডিকেলে রিয়াদকে দেখতে যাই। হোস্টেলে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে ভবিষ্যতে যাতে এরকম কোনো ঘটনা না ঘটে।
এমসি কলেজের ঘটনায় বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে শিবিরের ব্যাখ্যা
সিলেট এমসি কলেজের ঘটনায় কোনো তদন্ত ছাড়া ইসলামী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তথ্য প্রচারের অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
বুধবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান সংগঠনের প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ।
এক যৌথ বিবৃতিতে শিবিরের শীর্ষ নেতারা বলেন, ‘এমসি কলেজে গতকাল কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী বইমেলার আয়োজন করা হয়। ২৪-এর ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানে শহীদ রুদ্র সেনের নামে সেখানে ছাত্রশিবিরের একটি প্রকাশনা স্টল রয়েছে। ছাত্রশিবিরের কলেজ নেতারা গতকাল সারা দিন ও মধ্যরাত পর্যন্ত তাদের এই আয়োজন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মী ও বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া কর্মীর মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে, তার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের সম্পৃক্ততা নেই।’
প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করা হচ্ছে জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানে আমরা জানতে পেরেছি, যে ব্যক্তি আহত অবস্থায় ছাত্রশিবিরের ওপর অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, পূর্ব থেকেই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে সহযোগিতা ও তথ্য সরবরাহের ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে কলেজ হোস্টেলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী তার সঙ্গে আলাপের জন্য হোস্টেলের নির্দিষ্ট ব্লকে তার রুমে গেলে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে আঘাতের ঘটনা ঘটে। এতে দুজন আহত হন। কিন্তু এই ঘটনাকে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িয়ে প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তারা বলেন, ‘যেহেতু ছাত্রশিবিরের গঠনমূলক ও সৃজনশীল কর্মসূচি নিয়ে অনেকেরই গাত্রদাহ রয়েছে এবং সুযোগ পেলেই যারা ছাত্রশিবিরের ওপর দায় চাপাতে চায়, তাদের একটা অংশ এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায় ছাত্রশিবিরের ওপর চাপাতে তৎপর রয়েছে।’
‘আমরা আরও দেখছি, সিলেটের আঞ্চলিক একটি পীরতান্ত্রিক দল, যারা বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল, তারাও ফ্যাসিবাদের সময়ে করা তাদের অপকর্মের দায় ঢাকার জন্য ছাত্রশিবিরকে অভিযুক্ত করে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে, যা মূলত ফ্যাসিবাদের পারপাসই সার্ভ করে,’ বলেন তারা।
নেতারা এ ঘটনার সুস্পষ্ট প্রশাসনিক তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান এবং যেসব মিডিয়া তথ্য-প্রমাণা ছাড়া বিভ্রান্তিকর নিউজ প্রচার করেছে, তাদের প্রকৃত সত্য ঘটনা তুলে ধরে ছাত্রশিবিরের প্রতিবাদটি যথাস্থানে ছাপানোর আহ্বান জানান।