• ২৫শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৭শে জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের ৭৭টি ড্রোন ভূপাতিত করলো পাকিস্তান , যেভাবে ভূপাতিত করে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান

Usbnews.
প্রকাশিত মে ৯, ২০২৫
ভারতের ৭৭টি ড্রোন ভূপাতিত করলো পাকিস্তান , যেভাবে ভূপাতিত করে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

ভারতের ৭৭টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। শুক্রবার গণমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত পাকিস্তানে হামলা চালানোর পর এখন পর্যন্ত ৭৭টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।গত ৮ মে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাকিস্তান ২৯টি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। আর গত রাত থেকে আরও ৪৮টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারতের হামলার বিরুদ্ধে পাকিস্তান যথাযথ প্রতিক্রিয়ায় জবাব দিচ্ছে।

পাকিস্তানে সামরিক অভিযান চালাতে গিয়ে ফ্রান্সের তৈরি রাফায়েলসহ পাঁচটি যুদ্ধবিমান হারানোয় বড় ধরনের সামরিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে মোদি সরকার। কীভাবে রাফায়েল ভূপাতিত হলো, তা নিয়ে বিশ্বের সামরিক বিশ্লেষকদের মধ্যে চলছে নানা ধরনের আলোচনা। পাকিস্তানসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তান তাদের নিজের তৈরি জেএফ-১৭ ফাইটার জেটের মাধ্যমে ভূপাতিত করেছে ভারতের রাফায়েলসহ পাঁচটি ফাইটার জেট। বিখ্যাত প্রতিরক্ষাবিষয়ক অনলাইন ম্যাগাজিন ওয়ার জোনের সামরিক বিশ্লেষক থমাস নিউডিক লিখেছেন, মোটামুটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় চীনের তৈরি পিএল ১৫ মিসাইলের আঘাতে ভারতের রাফালে ভূপাতিত হয়েছে। চীনের তৈরি জেএফ ১৭ ছাড়াও জে-১০ সি যুদ্ধবিমানে এই মিসাইল সজ্জিত করা হয়। পিএল ১৫ আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য মিসাইল। এই মিসাইলের রেঞ্জ আনুমানিক ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার। এটি অত্যাধুনিক রাডার ও ইলেকট্রনিক কাউন্টার মেজারের বিরুদ্ধে কার্যকর। পিএল ১৫ এর উন্নত রাডার প্রযুক্তি একে লক অন এবং দীর্ঘ পাল্লায় নির্ভুলভাবে টার্গেটে আক্রমণে সক্ষম। ওয়ার জোনের খবরে বলা হয়, ভারতের পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুর জেলায় পিএল১৫ মিসাইলের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। এ থেকে প্রমাণ হয় পাকিস্তান ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ক্ষেত্রে এই মিসাইল ব্যবহার করেছে।
পাকিস্তান আর্মি বা সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি কি ধরনের সমরাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে পাকিস্তান আর্মির বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে পাকিস্তানের একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, জেএফ-১৭ যুদ্ধ বিমানের মাধ্যমে পাকিস্তান ভূপাতিত করেছে ভারতের যুদ্ধবিমান।
অপরদিকে যুদ্ধবিমান হারানোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত নীরবতা পালন করছে নয়াদিল্লি। এ বিষয়ে তিনটি বিমান হারানোর খবর প্রথম প্রকাশ করে দ্য হিন্দু পত্রিকা; কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সরকারের চাপে খবরটি প্রত্যাহার করে বলে জানিয়েছে লন্ডনের দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকা। ফ্রান্সের গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রাফায়েল ভূপাতিত হওয়ার বিষয়টি প্রথম প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন। খবরে বলা হয়, এই প্রথম ফ্রান্সে তৈরি অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমান কোনো যুদ্ধে ভূপাতিত হলো। ফরাসি কর্মকর্তারা সিএনএনকে বলেছেন, একাধিক রাফায়েল ভূপাতিত হয়েছে কি না, তা তারা খতিয়ে দেখছেন।
পাকিস্তানি সামরিক বিশ্লেষক পাকিস্তান বিমানবাহিনীর সাবেক এয়ার কমোডর ও যুদ্ধবিমানের পাইলট খালিদ চিশতি তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে জানিয়েছেন, ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার জন্য পাকিস্তান যদি পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে থাকে, তা হলে সরাসরি যুদ্ধে দূরপাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রের এটাই হবে প্রথম ব্যবহার। তিনি আরো বলেন, একটি ডকুমেন্টারি করার জন্য সম্প্রতি তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে গিয়েছিলেন। সেখানে পাইলটদের কাছে তিনি চীনের এই ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ জানতে চেয়েছিলেন। তারা জানিয়েছিলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ ২০০ কিলোমিটার। ফলে এই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে রাফায়েলসহ ভারতের অন্য বিমানগুলো ধ্বংস হয়ে থাকতে পারে। পাকিস্তানের জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানে অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যান্ড অ্যারে (এইএসএ) নামের অত্যাধুনিক রাডার ব্যবস্থাও রয়েছে, যা এই যুদ্ধবিমানকে নিখুঁত ও কার্যকরভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে সহায়তা করে ।
ফ্রান্সের তৈরি রাফায়েল ভারতীয় বিমানবাহিনীর সবচেয়ে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তি-সংবলিত ফাইটার জেট। ২০২০ সালে ভারত প্রথম ব্যাচের ৩৬টি রাফায়েল তাদের বহরে যুক্ত করে, যা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতকে আকাশের লড়াইয়ে এগিয়ে রাখবে বলে মনে করা হচ্ছিল। সম্প্রতি তারা এই মডেলের আরো ২৬টি বিমান কেনার চুক্তি করেছে। রাফায়েল নিয়ে ভারতীয়দের গর্বের শেষ ছিল না। তারা দাবি করত, এই বিমানের মোকাবিলা করার ক্ষমতা পাকিস্তানের নেই; কিন্তু ভারতের সেই দর্প চূর্ণ হতে খুব বেশি দিন লাগেনি। যুদ্ধের মাঠে প্রথম অভিযানে রাফায়েল নিয়ে আকাশে উড়তে থাকা ভারতকে আক্ষরিক অর্থেই মাটিতে নামিয়েছে পাকিস্তান।
অপরদিকে জেফ-১৭ পাকিস্তানের তৈরি ফোর্থ জেনারেশন ফাইটার জেট। এটি চীন-পাকিস্তান যৌথ প্রকল্পে নির্মিত বিমান। তবে পাকিস্তান ও চীন উভয় দেশ স্বাধীনভাবে এ বিমান নির্মাণ ও বিক্রি করতে পারে। পাকিস্তান বর্তমানে নিজেরাই সম্পূর্ণভাবে এ বিমান তৈরি করতে সক্ষম। এটি একটি মাল্টিরোল ফাইটার জেট।
রাফায়েল মতো ফোর পয়েন্ট ফাইভ জেনারেশন অত্যাধুনিক ফাইটার জেট ভূপাতিত করার ঘটনায় সমরাঙ্গণে এখন আলোচিত বিমান জেএফ-১৭ ফাইটার জেট। বিশ্লেষকদের মতে, দ্রুত আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাবে পাকিস্তানের তৈরি এ বিমানের। অনেক দেশের সমর বিশ্লেষকরা ইতোমধ্যে তাদের দেশের সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন পাকিস্তানের তৈরি সস্তা কিন্তু খুবই শক্তিশালী জেএফ-১৭ ফাইটার জেট সংগ্রহের জন্য।
পাকিস্তানের আঘাতে ভারতের কাছে থাকা রাফায়েল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার কারণে বিপদে পড়েছে ফ্রান্স। রাফালের নির্মাতা ফ্রান্সের ড্যাসল্ট রাফায়েল শেয়ারবাজারে ব্যাপক ধস নেমেছে। ফ্রান্সের আশঙ্কা, তারা আর সহজে এ বিমান বিক্রি করতে পারবে না। ভারতে রাফায়েলের এমন দুর্দশায় আন্তর্জাতিক বাজার হারাতে চলেছে ফ্রান্সের তৈরি আলোচিত আর শক্তিশালী যুদ্ধবিমান রাফাল।
ফ্রান্স বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সমরাস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ। সমরাস্ত্র রপ্তানির ক্ষেত্রে ফ্রান্সের এমন অগ্রগতির মূলে রয়েছে মূলত রাফায়েল ফাইটার জেট। বর্তমানে ফ্রান্স ছাড়া মিসর ও ভারত রাফায়েল অন্যতম ব্যবহারকারী। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ৮০টি রাফায়েল কেনার চুক্তি সই করেছে। এ ছাড়া গ্রিস, কাতার, ইন্দোনেশিয়াসহ আরো অনেক দেশ কয়েকশ রাফায়েল ফাইটার জেট কেনার বিষয়ে প্রাথমিক চুক্তি করেছে।
ফ্রান্স এখন পর্যন্ত ২৯৯টি রাফায়েল নির্মাণ করেছে। কিন্তু মঙ্গলবার ভারতে রাফায়েল বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় বিভিন্ন দেশ মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে রাফায়েল থেকে। ফ্রান্সের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে, অন্তত একটি রাফায়েল ফাইটার জেট ভূপাতিত হওয়ার তথ্য তারা পেয়েছে।
ফ্রান্স তাদের এই সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান নিয়ে গর্ব করে। দুই ইঞ্জিনের মাল্টিরোল রাফায়েল একই সঙ্গে আকাশে শত্রুর বিমানের সঙ্গে লড়াই এবং স্থলভাগের টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম। ক্রুজ মিসাইল, লেজার গাইডেড বোমা ও ৩০ মিলিমিটার কামান রয়েছে এই ফাইটার জেটে। ১০ টন ওজনের বিমানটি যেকোনো আবহাওয়ায় কার্যকর লড়াই করতে পারে। তবে ভারতের হয়ে প্রথমবার লড়াইয়ে নেমেই ভূপাতিত হওয়া বিমানটি নির্মাতা ও ব্যবহারকারীদের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
পাকিস্তানের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় বিমানবাহিনী এদিন ১২৪টি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে বাওয়ালপুর মুরদিক ও মোজাফ্ফরাবাদে আক্রমণের জন্য। এর মধ্যে আজাদ কাশ্মীরের রাজধানী মোজাফ্ফরাবাদ ফ্রন্টে যুদ্ধে অংশ নেয় ৭০টি বিমান, যার মধ্যে রাফাল, সু-৩০ ও মিগ-২৯-এর পাশাপাশি ইসরাইলের হেরন ড্রোনও ছিল।
সম্ভাব্য ভারতীয় আক্রমণের বিষয়ে আগে থেকেই গোয়েন্দা তথ্য ছিল পাকিস্তানের কাছে, যে কারণে ভারতীয় আগ্রাসন ঠেকাতে তারা প্রস্তুত রাখে জে-১০সি, এফ-১৬, জেএফ-১৭ থান্ডারসহ ফাইটার জেটের কয়েকটি বহর। এ ছাড়া মোজাফ্ফরাবাদ ফ্রন্টে ভারতীয় বাহিনীর ৭০টি ফাইটার জেটের মোকাবিলায় পাকিস্তানের ২৭টি ফাইটার জেট উড্ডয়ন করে। নিজ নিজ দেশের আকাশসীমায় থেকেই ডগফাইটে লিপ্ত হয় দুদেশের যুদ্ধবিমানগুলো। আকাশে যুদ্ধবিমানের মধ্যে মুখোমুখি লড়াইকে সামরিক ভাষায় বলা হয় ‘ডগফাইট’। এই যুদ্ধে মিসাইল ছুড়ে একে অন্যকে ঘায়েল করতে চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত প্রথম দিনের লড়াইয়ে পাকিস্তান প্রভাব বিস্তার করে এবং ভারতের পাঁচটি ফাইটার জেট ও ইসরাইলের তৈরি একটি হেরন ড্রোন ধ্বংস করার দাবি করে। এর আগে ২০১৯ সালেও পাকিস্তানের হামলা চালাতে গিয়ে ভারত মিগ-২৯ ফাইটার জেট হারিয়েছিল। ভারতের একজন পাইলট ধরাও পড়েছিলেন পাকিস্তানের হাতে।