• ১৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

শান্তিতে নোবেল পেলেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মাচাদো

Usbnews.
প্রকাশিত অক্টোবর ১০, ২০২৫
শান্তিতে নোবেল পেলেন ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মাচাদো
নিউজটি শেয়ার করুনঃ

চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতে ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো বলেছেন, পুরস্কার জেতার কথা শুনে তিনি ‘হতবাক’ হয়েছেন।

মাচাদোর প্রেস টিম পাঠানো এক ভিডিও’তে শোনা গেছে, মাচাদো টেলিফোনে এডমুন্ডো গনজালেস উরুতিয়ার সঙ্গে এই অনুভূতি ব্যক্ত করেন। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাচাদোকে প্রার্থী হিসেবে বাধা দেওয়া হলে গনজালেস তার জায়গায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

জীবন গুরুতর হুমকির মুখে থাকা সত্ত্বেও তিনি ভেনেজুয়েলায় নিজ দেশেই আছেন, যা লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি দেশের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করেছেন। ভেনেজুয়েলায় সামরিকীকরণের বিরুদ্ধে তিনি সব সময় সোচ্চার ছিলেন। শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সব সময় ছিলেন অটল। মাচাদো তিন সন্তানের জননী। জীবনের প্রতি হুমকি থাকায় তাঁর সন্তানেরা ভেনেজুয়েলার ছেড়ে ভিন্ন দেশে বসবাস করেন।

নোবেল পুরস্কার কমিটির সচিব ক্রিশ্চিয়ান বার্গ হার্পভিকেনকে ফোনে ৫৮ বছর বয়সী মাচাদো বলেন, ‘ওহ ঈশ্বর…আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।…আমি আপনাদের অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমার আশা, আপনারা বুঝবেন এটি একটি আন্দোলন, এটি পুরো সমাজের অর্জন। আমি শুধু একজন মানুষ। আমি কোনোভাবেই এর যোগ্য নই।’

বার্তা সংস্থা এপি জানায়, রাজনীতিতে প্রবেশের আগে ‘সুমাতে’ নামক একটি ভোট পর্যবেক্ষণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন মাচাদো। ২০১০ সালে বিরোধীদলীয় জোট থেকে তিনি ভেনেজুয়েলার জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।

ছবি: সংগৃহীত

২০১২ সালে ‘ভেন্তে ভেনেজুয়েলা’ নামের রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন মারিয়া। ২০১৪ সালে তিনি নিকোলা মাদুরোর সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হন।

মাচাদো ভেনেজুয়েলায় উদার অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রবক্তা। তিনি ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি ‘পিডিভিএসএ’-সহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান বেসরকারীকরণে পক্ষপাতী। এ ছাড়া দেশের সবচেয়ে দরিদ্র নাগরিকদের জন্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি চালুরও বড় সমর্থক তিনি।

মারিয়া কোরিনা মাচাদো ১৯৬৭ সালের ৭ অক্টোবর ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন ভেনেজুয়েলার ইস্পাতশিল্পের একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী।

মারিয়া কারাকাসের আন্দ্রেস বেলো ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি এবং একই শহরের ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইইএসএ) থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৯২ সালে মারিয়া অ্যাথেনিয়া ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন, যা কারাকাসের পথশিশুদের কল্যাণে কাজ করে। উচ্চবিত্ত পরিবারে জন্ম হওয়ায় তিনি সহজেই শাসক সমাজতান্ত্রিক দলের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন।

পুরস্কার প্রাপ্তির পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (পূর্বে টুইটার)–এ দেওয়া এক বার্তায় মাচাদো লেখেন, ‘আমি এই পুরস্কারটি উৎসর্গ করছি ভেনেজুয়েলার যন্ত্রণাক্লিষ্ট জনগণের উদ্দেশে, যারা স্বাধীনতা ও ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম করে চলেছেন। একই সঙ্গে উৎসর্গ করছি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে, যিনি আমাদের আন্দোলনে দৃঢ়ভাবে পাশে ছিলেন।’

মাচাদো আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অবস্থান ভেনেজুয়েলার গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে শক্তি দিয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েই ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়।