শান্তি নোবেল বিজয়ী সুচির ইতিহাস নিয়ে লেখা পড়া আছে। কিন্তু তিনি জেনে শুনে রোহিঙ্গ্যা মুসলিমদের অবদান অস্বীকার করছেন। মন্ত্রী ও হন। এমনকি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন , সুচির বাপের সাথে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন রোহিঙ্গ্যা মুসলিমদের বহু নেতা।
বার্মার জাতীয় সংসদের নির্বাচনে বহু রোহিঙ্গ্যা মুসলিমদের ভোটাধিকারের কথা লিপিবদ্ধ আছেন। রোহিঙ্গ্যা মুসলিমদের কয়েকজন জাতীয় সংসদের আইন প্রণেতা হয়েছিলেন।
৭০০ শতাব্দীর শুরু থেকে মুসলমানরা আরাকানে বসবাস করছে। ১২০৩ সাল থেকে প্রায় ১০০ বছরের অধিক সময় আরাকানে মুসলমানদের শাসন ছিল।
অতীতে ২৬৬৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে চার হাজার বছর আরাকান ছিল একটি সার্বভৌম ও মুসলিম প্রধান দেশ। এর নামকরণই প্রমাণ করে মুসলিম আধিপত্যের কথা। কারণ ইসলামের পাঁচটি মূল ভিত্তিকে একত্রে বলা হয় আরকান। আর এই আরকান থেকেই তার অনুসারী মুসলমানদের আবাসভূমির নামকরণ করা হয়েছে আরাকান, এমনটিই বিজ্ঞজনদের ধারণা। হিন্দু, বৌদ্ধ ও পর্তুগিজ নির্বিশেষে সবাই প্রত্যক্ষ করেছিল যে আরাকানে শুধু মুসলমানদেরই নয়; সবার ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেছিল।
১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে আরাকান ব্রিটিশের অধীনে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেখানে মুসলমানদের প্রাধান্য বজায় ছিল, এ মর্মে অনেক ঐতিহাসিক তথ্য-প্রমাণ বিদ্যমান।
সুলতান সামসুদ্দিন গাজীর (৯৬২ হিজরি/১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দ) টাঁকশালের নাম ছিল আরাকান। মুদ্রায় প্রাপ্ত টাঁকশালের নামটি যদি সঠিক হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে ষোড়শ শতাব্দীতেও আরাকান নামটি প্রচলিত ছিল। প্রাচীনকালে আরাকান দুটি রাজ্যে বিভক্ত ছিল। এর একটি অংশ ছিল দক্ষিণ আরাকান বা সান্দোওয়ে, অন্যটি উত্তর আরাকান বা মূল আরাকান। ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ দুই অংশ এক হয় এবং ১৭৮৫ সাল পর্যন্ত এ ঐক্য থাকে। ১৭৮৫ সালের একসময় আরাকান রাজ্যটি বার্মা বা মিয়ানমারের অন্তর্ভুক্ত হয়। মহা কবি আলাওল আরাকান রাজদরবারে যথেষ্ট সম্মান ও প্রতিপত্তিসম্পন্ন মর্যাদাবান ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর কবিতায় ও পাওয়া যায় রোহিঙ্গাদের জীবনী।
আরাকানের রাজা মিং খা মৌং ওরফে হুসাইন শাহ ছিলেন অত্যন্ত শক্তিশালী ও সাহসী শাসক। তার সাহসিকতা ও স্বদেশ প্রেমের কারণে আরাকানী জনগণ অদ্যাবধি তাঁকে জাতীয় বীর হিসেবে শ্রদ্ধা করে থাকে। জবৌক শাহের মাধ্যমে যে পর্তুগিজরা আরাকানে স্বীয় অবস্থান তৈরী করেছিল এবং সময়ের ব্যবধানে মিনরাজাগ্যি বা সেলিম শাহের সময় তারা সুদৃঢ় অবস্থান তৈরী করে নিয়েছিল। রাজ্যের শৃংখলা বিধানের স্বার্থে কয়েক পর্বে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেও তার সময় মুসলিম বিদ্বেষমূলক কোন সংঘাত হয়নি। চট্টগ্রামে নিয়োজিত আরাকানী মুসলিম সামন্ত শাসকদের ব্যাপারেও তার কোন বিদ্বেষমূলক আচরণ লক্ষ্য করা যায়নি। সুতরাং মুসলমানগণ স্বাধীনভাবেই ইসলাম চর্চার সুযোগ লাভ করেছিল। হুসাইন শাহের মৃত্যুর পর ১৬২২ খ্রিস্টাব্দে স্বীয় পুত্র থিরি থু ধম্মা সেলিম শাহ (দ্বিতীয়) নাম ধারণ করে আরাকানের সিংহাসনে বসেন। ইংরেজ মুদ্রাতত্ত্ববিদগণ থিরি থু ধম্মার মুসলমানী নাম দু®প্রাপ্য বলে অভিমত প্রকাশ করলেও পর্তুগিজ ইতিহাসবিদগণ তার মুসলমানী নাম সেলিম শাহ (দ্বিতীয়) বলে উল্লেখ করেছেন। থিরি থু ধম্মার রাজত্বকালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে আরাকানী সামন্ত দ্বারা শাসনকার্য পরিচালনা করা হত। কথিত আছে যে, বাংলার সুবেদারের প্ররোচনায় ১৬২৫ খ্রিস্টাব্দে আরাকান অধিকৃত চট্টগ্রামের বার জন সামন্ত শাসক একযোগে থিরি থু ধম্মার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। তিনি কঠোর হস্তে তা দমন করে লক্ষ্য করলেন যে, সম্রাট জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে স্বীয় পুত্র যুবরাজ শাহজাহানের বিদ্রোহের কারণে বাংলায় রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরী হয়েছে। এ সুযোগে তিনি এক অভিযান প্রেরণ করে ঢাকা নগরে প্রবেশ করেন। আরাকান বাহিনীর আগমনে আতঙ্কিত হয়ে মোগল প্রতিরক্ষা বাহিনীর দুই সেনাপতি মোল্লা মুরশীদ ও হামিদ হায়দার ঢাকা শহর ছেড়ে পলায়ন করেন। আরাকানী বাহিনী তিনদিন ধরে লুটতরাজ চালিয়ে বিপুল পরিমান ধনসম্পদ নিয়ে যায়। এ বিবরণীতে বাংলার সাথে আরাকানের সংঘর্ষময় পরিস্থিতিতে বাংলার চেয়ে আরাকানকেই শক্তিশালী মনে হয়। অন্যদিকে আরাকানের রাজা থিরি থু ধম্মা কর্তৃক যুবরাজ শাহজাহানের সমীপে নাজরানা প্রেরণের তথ্যও পাওয়া যায়। ১৬২৪ খ্রিস্টাব্দে মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে যুবরাজ শাহজাহান বিদ্রোহ করে বাংলার সুবেদার ইবরাহীম খান ফতেহ জঙ্গকে পরাজিত ও নিহত করেন। এতে থিরি থু ধম্মা এক প্রতিনিধির মাধ্যমে এক লক্ষ টাকার বহুমূল্যবান দ্রব্য নজরানা হিসেবে শাহজাহানের প্রতি আনুগত্যের ঘোষণা দেন। যুবরাজ শাহজাহান (খুররম) আরাকানের রাজার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তার জন্য বহু মূল্যবান পোষাক, মূল্যবান অন্যান্য দ্রব্য ‘খেলাত’ স্বরূপ পাঠান এবং এক ফরমান দ্বারা তার রাজ্যের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দেন। এ বিবরণীর মীর্জা নাথান ছাড়া আর অন্য কোন সূত্র নেই। যদি এ তথ্যকে সঠিক ধরে নেয়া যায়, তবে একদিক থেকে আরাকানের রাজা থিরি থু ধম্মাকে একজন দক্ষ কুটনৈতিক হিসেবেই চিহ্নিত করা যায়; ভীতু, দূর্বল এবং নতজানু হিসেবে নয়। কেননা যুবরাজের ভবিষ্যত রাজনৈতিক অবস্থানের কথা চিন্তা করেই হয়তো তিনি নজরানা পেশ করেছিলেন। এ ছাড়া রাজা থিরি থু ধম্মা ওরফে সেলিম শাহ দ্বিতীয় একজন মুসলিম অনুরাগী শাসক হিসেবেও পরিচিত। তার সময় আশরাফ খান নামক জনৈক মুসলিম ব্যক্তি লস্কর উজির বা সমর মন্ত্রীর পদ লাভ করে রাজ্যের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। তার সময় প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মুসলিম রীতিনীতি প্রতিষ্ঠিত ছিল। বিশেষত আশরাফ খানকে মন্ত্রীত্ব দিয়ে রাজ্যের মৌলিক কার্যক্রম তার হাতেই সমার্পন করেছিলেন বলে মুসলিম সংস্কৃতির বহুমূখী চর্চা এবং মুসলিম সভ্যতার বিস্তার ঘটে।
১৪৩০ সাল থেকে ১৭৮৫ সাল পর্যন্ত আরাকান ছিল একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, যার মধ্যে ২১১ বছর ছিল মুসলিম শাসনাধীন। চট্টগ্রাম তখন ছিল এই রাষ্ট্রেরই অংশ। এই আরাকানী রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ৯২ শতাংশই মুসলমান। বাকীরা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। তাদের মোট জনসংখ্যা ছিল ২০ লাখের ও বেশি । তবে বিভিন্ন সময়ে বর্মীদের নির্যাতনে বিদেশে শরণার্থী হয়েছে প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষাধিক। যাদের মধ্যে বাংলাদেশে পাকিস্তান ,সঊদী আরব, মালয়েশিয়া , ইন্ডিয়া,ইন্দোনেশিয়া , থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর সহ আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে আরও অনেক আরাকানী রোহিঙ্গা।
সেলিম শাহ দ্বিতীয় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে আরাকানের শাসন কার্য পরিচালনা করলেও স্বীয় রানী নাৎসিনম এবং মন্ত্রী নরপতিগ্যীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ১৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। তার কোন যোগ্য উত্তরসূরী না থাকায় তার শিশুপুত্র মিনসানীকে রানীর অভিভাকত্বে আরাকানের শাসন ক্ষমতায় বসানো হয়। কিন্তু মাত্র ২৮ দিনের মাথায় মন্ত্রী নরপদিগ্যী শিশু রাজা মিনসানীকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করেন। নরপদিগ্যী ছিলেন আরাকানের পূর্বতন রাজা থাটাজা (১৫২৫-১৫৩১ খ্রি.) এর প্রপৌত্র। নরপদিগ্যীর মুদ্রায় মুসলমানী নামটি দুস্পাঠ্য হবার কারণে জানা যায়নি। অন্যায়ভাবে শিশু রাজা মিনসানীকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করার কারণে আরাকান অধিকৃত চট্টগ্রামের শাসনকর্তাগণ এবং নিহত রাজার পিতৃব্য মেংগ্রী বাংলার মোগল সুবেদার ইসলাম খাঁর সহযোগিতায় বিদ্রোহী হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। কিন্তু নরপদিগ্যীর নৌ শক্তির মজবুতির কারণে তারা সফল হতে পারেনি। মেংগ্রী পরাজিত হয়ে দলবলসহ নোয়াখালীর জুগিদিয়া মোগল ঘাঁটিতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। এ সময় আরাকানে গৃহযুদ্ধের সূচনা হয় এবং এ ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বাংলা থেকে অপহৃত বিভিন্ন জেলার প্রায় দশ হাজার লোক আরাকানী ও মগ পর্তুগিজদের দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়ে নিজ বাসভূমি বাংলায় ফিরে আসে। সুবেদার ইসলাম খান মেংগ্রী ও তার অধিনস্ত আশ্রিত ব্যক্তিদেরকে ঢাকায় পুনর্বাসন করেন। রাজা নরপদিগ্যী এর প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য বিশাল নৌ বাহিনী নিয়ে বাংলা আক্রমণ করেন। কিন্তু মোগলদের কামানের গোলার মুখে টিকতে না পেরে তারা আরাকানে ফিরে যায়।
রাজা নরপতিগ্যীর মুসলিম নাম উদ্ধার করা না গেলেও তিনি যে ইসলামের প্রতি অনুরাগী ছিলেন এতে কোন সন্দেহ নাই। কেননা সেলিম শাহের (দ্বিতীয়) মত বড় ঠাকুর উপাধিতে ভূষিত একজন মুসলমানকে তিনি লস্কর উজির বা সমর মন্ত্রীর দায়িত্ব প্রদান করেছেন। বড় ঠাকুরের সরাসরি তত্ত্বাবধান ও নরপদিগ্যীর সহযোগিতায় আরাকানে মুসলিম সংস্কৃতির বিকাশ আরো ত্বরান্বিত হয়।
রাজা নরপদিগ্যী ১৬৪৫ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করলে স্বীয় ভ্রাতুস্পুত্র থদো আরাকানের রাজা হন। তিনি সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে মুসলমানী নাম গ্রহণ রীতি বর্জন করেন এবং নরপদিগ্যীর কন্যাকে বিয়ে করেন। তার সাত বছরের (১৬৪৫-১৬৫২ খ্রি.) শাসনকালে তেমন কোন বিদ্রোহ দেখা দেয়নি। ১৬৫২ খ্রিস্টাব্দে থদোর মৃত্যুর পর স্বীয় পুত্র সান্দা থু ধম্মা আরাকানের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। তিনি মোট ৩২ বছর (১৬৫২-৮৪ খ্রি.) আরাকান শাসন করেন। সিংহাসনে আরোহনকালে তিনি পূর্ববর্তী আরাকানী রাজাদের সমস্ত উপাধি বাতিল করে ‘সূবর্ণ প্রাসাদের অধীশ্বর’ উপাধি গ্রহণ করেন।
আরাকানের মুসলিম ঐতিহ্যের রয়েছে সুপ্রাচীন এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস
মোহাম্মদ মাকছুদ উল্লাহর লেখা থেকে জানা যায় , ১৯৪৭ সালের শাসনতান্ত্রিক নির্বাচনে ইংরেজদের দেওয়া ‘সন্দেহভাজন নাগরিক’ অভিধার কারণে মুসলমানদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। উ ন আরাকান থেকে মুসলমানদের বিতাড়নের উদ্দেশ্যে ১৯৪৮ সালে মগ সেনাদের নিয়ে Burma Territorial Force গঠন করে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। পরিকল্পিতভাবে মুসলিম বুদ্ধিজীবী, গ্রাম প্রধান, আলেম-ওলামা, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয় এবং মুসলমান অধ্যুষিত গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয় আর সেখান মগদের জন্য বসতি নির্মাণ করা হয়। ১৯৬২ সালের ২ মার্চ উ নকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পর নে উইন সংখ্যালঘুদের সব সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে দেয়। ১৯৬৪ সালে রোহিঙ্গাদের সব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয় এবং ১৯৬৫ সালের অক্টোবর মাস থেকে Burma Broadcasting Service থেকে প্রচারিত রোহিঙ্গা ভাষার সব অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই বার্মা সরকার ১৯৭৩ সালে উত্তর আরাকানে Major Aung Than operation ও ১৯৭৪ সালে Sabe operation নামে রোহিঙ্গা উচ্ছেদ অভিযান চালায়। ফলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা জীবন রক্ষার্থে যুদ্ধবিধ্বস্ত দুর্ভিক্ষপীড়িত বাংলাদেশে এসে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করে। সেবার তৎকালীন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় অবস্থান ও চরমপত্রের কারণে বার্মা সরকার বিতাড়িতদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়। তারপর তিন বছর যেতে না যেতেই সামরিক জান্তা ‘কিং ড্রাগন অপারেশন’ নামে রোহিঙ্গা উচ্ছেদে ভয়াবহ অভিযান শুরু করে। এরপর সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৪, ১৯৮৫, ১৯৯০ এবং ২০১২ সালে রোহিঙ্গা উচ্ছেদে বর্বরতম অভিযান পরিচালনা করে বার্মার সামরিক জান্তা। আরাকানের মুসলিম ঐতিহ্যের রয়েছে সুপ্রাচীন এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। সর্বপ্রথম হজরত আবু ওয়াক্কাস ইবনে ওয়াইব (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় (৬১৭-৬২৭ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে) আরাকান অঞ্চলে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে আসেন। ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রা.)-এর শাসনামলে আরাকানের শাসকদের সঙ্গে আরবীয় মুসলমানদের যোগাযোগের বিষয়টিও প্রমাণিত।
মোগল সম্রাট শাহজাহানের (১৬২৭-১৬৫৮ খ্রি.) অসুস্থতার সংবাদ ও সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ঘোষণা
শাহাজাদা মুহাম্মদ সুজার আরাকান আশ্রয়কে কেন্দ্র করে ইতিহাসের আরেক অধ্যায়ের সূচনা হয়। মোগল সম্রাট শাহজাহানের (১৬২৭-১৬৫৮ খ্রি.) অসুস্থতার সংবাদ শুনে বাংলার সুবেদার শাহজাদা মুহাম্মদ সুজা (১৬৩৯-১৬৬০ খ্রি.) রাজমহলে ১৬৫৭ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে সিংহাসনের দাবি ঘোষণা করে দিল্লীর মসনদ অধিকারের উদ্দেশ্যে প্রায় ৪০ হাজার অশ্বারোহী সৈন্যসহ বাংলা হতে দিল্লীর দিকে অগ্রসর হন। আওরঙ্গজেব ও মুরাদ যথাক্রমে দাক্ষিণাত্য ও গুজরাট থেকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ঘোষণা দিয়ে স্বসৈন্যে দিল্লী অভিমুখে রওনা হন। ভ্রাতৃঘাতি যুদ্ধের এক পর্যায়ে সেনাপতি মীর জুমলার সহায়তায় ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দের ৫ জানুয়ারি খাজওয়ার যুদ্ধে সুজাকে পরাজিত করলে তিনি বাংলার দিকে অগ্রসর হন। বিক্ষিপ্ত যুদ্ধের পর পতন অবশ্যম্ভাবী মনে করে শাহ সুজা ১৬৬০ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল ঢাকায় আগমন করেন। অতঃপর আরাকানরাজ সান্দা থু ধম্মার সাথে যোগাযোগ করে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পেয়ে পরিবার পরিজন ও দেহরক্ষী ছাড়া পাঁচ শতাধিক অতি বিশ্বস্ত সেনাপতি ও সেনানায়কদের নিয়ে ৬ মে ঢাকা থেকে ভুলুয়ায় যান এবং ৬ দিন পরে ১২ মে আরাকানের রাজার পাঠানো জাহাজে তিনি ৩ জুন কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে দেয়াং পৌঁছেন এবং সেখান থেকে সড়ক পথে যাত্রা করে ২৬ আগষ্ট আরাকানের রাজধানী ম্রোহং পৌঁছেন। মূলত শাহ সুজা আরাকান থেকে মক্কা অথবা তুরস্কে যাবার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু বর্ষাকালে যাত্রা বিপদ সংকুল হেতু শীতকালে তিনি মক্কা যাবার সিদ্ধান্ত নেন এবং আরাকানরাজও তাঁকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনুচরসহ তাঁর থাকার ব্যবস্থা করেন। আরাকানরাজের সাথে কিছু দিন ভাল সম্পর্ক থাকলেও আরাকানরাজ শাহ সুজার মূল্যবান সম্পদ ও অপূর্ব সুন্দরী কন্যা আমেনা বেগমকে দেখে তার মক্কা পাঠানোর অঙ্গীকার ভুলে আমেনাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। মুহাম্মদ সুজা এ প্রস্তাব অস্বীকার করলে আরাকানরাজ বিশ্বাস ভংগ করে ১৬৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ ফেব্রুয়ারি শাহ সুজা ও পরবর্তীতে তাঁর পরিবার পরিজনকে হত্যা করে। অতঃপর তাঁর অনুচরসহ ম্রোহংয়ে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অমানষিক নির্যাতন নেমে আসে; অনেককে হত্যা করে এবং অনেককে কারাগারে নিক্ষেপ করে; কবি আলাওলও এসময় কারা বরণ করেছিলেন।
বাণিজ্য তরীর নাবিকের মাধ্যমে ১৬৬১ খ্রিস্টাব্দের ৩০ আগষ্ট মীর জুমলা সুজা হত্যার খবর সংগ্রহ করে আওরঙ্গজেব এর নিকট পৌঁছান। তিনি ভ্রাতৃহত্যার খবর শুনে প্রতিশোধ গ্রহণ কল্পে বাংলার সুবেদার শায়েস্তাখাঁকে আদেশ করেন। তিনি ১৬৬৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি আরাকানী বাহিনী ও জলদস্যুদের বিতাড়িত করে চট্টগ্রাম দখল করেন। এভাবে ম্রাউক-উ-বংশের শাসনকালের সূচনা থেকে শাহ সুজার হত্যাকা-ের সময় পর্যন্ত বাংলাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও বর্ণের লোক আরাকানে পাড়ি জমায়।
১৭৮৫ সালে সর্বপ্রথম আরাকান বার্মীজদের দখলীভুক্ত হয়। বর্মী রাজা বোদাওপায়া (১৭৮২-১৮১৯) ক্ষমতায় আসার পর মুসলমানদের উপর নির্যাতন শুরু করেন। ১৭৯৯ সালে নির্যাতনের মাত্রা এত বেড়ে যায় যে, হাযার হাযার রোহিঙ্গা মুসলমান প্রথমবারের মত চট্টগ্রামে শরণার্থী হয়। যদিও রাজা পরবর্তীতে অনুতপ্ত হন এবং তার অবস্থান পরিবর্তন করেন। ১৮২১ সালে সেখানে প্রায় ৫ লক্ষ মুসলমানের বসবাস ছিল। ১৯২৪ সালে আরাকানে বৃটিশ শাসন শুরু হ’লে আবার মুসলমানদের অবস্থার উন্নতি হয়। বৃটিশরা বহু সংখ্যক ইন্ডিয়ানকে আরাকানে নিয়ে আসে কাজের উদ্দেশ্যে, যাদের মধ্যে মুসলিমও ছিল, হিন্দুও ছিল। কিন্তু বার্মার বৌদ্ধরা ইন্ডিয়ান মুসলমানদের সাথে মিলিয়ে স্থানীয় রোহিঙ্গা তথা বার্মিজ মুসলমানদেরকেও তখন থেকে কালা বা বিদেশী সম্বোধন করা শুরু করে।
পুত্র সান্দা থু ধম্মার সময়ে শাহজাদা সুজা স্বপরিবারে নিহত হবার পর তার হতাবশিষ্ট দেহরক্ষীগণ কামানঞ্চি নামে খ্যাত হয়। আরাকানরাজ তাদের শান্তনা দেবার জন্য তাদেরকে তার দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেয়। কিন্তু তারা এতেও শান্ত থাকেনি। ১৬৮৪ খ্রিস্টাব্দে সান্দা থু ধর্ম্মার মৃত্যুর পর তারা এতটা উগ্র ও অস্থির হয়ে পরে যে, তারা সেখানে শরহম সধশবৎ এর ভূমিকা পালন করে। তারা মাত্র ২০ বছরে ১০ জন রাজাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন এবং পদচ্যুত অথবা হত্যা করেছে। সান্দা থু ধম্মার মৃত্যুর পর আরাকানে আর শান্তি ফিরে আসেনি।
একশ বছর (১৬৮৪-১৭৮৪ খ্রি.) পর্যন্ত আরাকানে অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্য দিয়ে মোট ২৫জন রাজা আরাকান শাসন করেছেন। তারমধ্যে রাজা থিরি থুরিয়া, ওয়ারা ধম্মা রাজা, মুনি থু ধম্মা রাজা এবং সান্দা থুরিয়া ধম্মা কামানচিদের বেতনভাতা ও প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা দানে ব্যর্থ হবার কারণে পদচ্যুত ও নিহত হন। তারা দাবী দাওয়া আদায়ের জন্য রাজকোষ লুন্ঠন, রাজ প্রাসাদে অগ্নিসংযোগ এবং রাজাদের পদচ্যুতি ও হত্যার মধ্য দিয়ে দুই যুগের অধিককাল (১৬৮৪-১৭১০ খ্রি.) পর্যন্ত আরাকানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রাখে। কামানচি বাহিনীকে দমন করার জন্য মহাদন্ডায়ু নামক এক দুঃসাহসী সামন্ত যুবক আরাকানের যুব সম্প্রদায়কে সংঘবদ্ধ করে। সংগঠিত যুবকদের সমন্বয়ে কামানচি বাহিনীকে তিনি সম্পূর্ণভাবে পর্যুদস্ত করে দেন এবং তাদেরকে আরাকানের বিভিন্ন পাহাড়িয়া এলাকায় নির্বাসিত করেন। কামানচিদের দমনের পর মহাদন্ডায়ু সান্দা উইজ্যা নাম ধারণ করে ১৭১০ খ্রিস্টাব্দে আরাকানের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। তিনি আরাকানের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধারের জন্য নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করেন এবং ১৭১৯ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রামে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ব্যর্থ হন। অবশেষে পর্তুগিজ জলদস্যুদের দ্বারা বাংলায় লুন্ঠন চালানোর ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন। আরাকানের রাজা সান্দা উইজ্যার প্রচেষ্টায় তেমন কোন ফল হয়নি। আরাকানের বিধ্বস্ত প্রশাসন আর শৃংখলার দিকে ফিরে আনা সম্ভব হয়নি। বরং এক পর্যায়ে সামন্তদের নেতৃত্বে গোটা আরাকান ছয়টি কেন্দ্রে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কোন সামন্ত শক্তি সঞ্চয় করে রাজধানী ম্রোহং এর ক্ষমতা দখলে উদ্যোগী হলে অন্য সামন্তগণ জোট বেঁধে সে উদ্যোগ ব্যর্থ করে দেয়।
নিজেদেরকে আরাকান রাজ্যের জমিদার ও তালুকদার বলে পরিচয় দিয়েছিলেন
সেখানে রাজনৈতিক অস্থিরতা এত চরমে ওঠে যে, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও কোন্দলের কারণে ইংরেজ কালেক্টর নাথিয়াল বেইটম্যানের আমলে (১৭৭৫-৭৭ খ্রি.) আরাকান থেকে ২,০০০ (দু’হাজর) শরণার্থী চট্টগ্রাম জেলার বারপালং এলাকায় আশ্রয় গ্রহণ করে। কালেক্টর বেইটম্যান তাদেরকে পরগণা, আনন্দপুর, মৌজাচম্বল, পুঁইছড়ি, সোনাছড়ি, লালকোটা ও মানিকপুরে বসতি স্থাপন করার সুযোগ দেন। এ সকল শরণার্থীর মধ্যে ছিলেন তাজ মোহাম্মদ, আতিকুল্লাহ, ঠাকুর চাঁদ, সাদুলাহ, আজিজুলাহ, ফকির মোহাম্মদ ও রৌশন প্রমুখ। তাঁরা নিজেদেরকে আরাকান রাজ্যের জমিদার ও তালুকদার বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। বেইটম্যান তাঁদেরকে চট্টগ্রাম শহরে ডেকে কোম্পানির এলাকায় আশ্রয় গ্রহণের কারণ জিজ্ঞাসা করলে প্রত্যুত্তরে তাঁরা বলেন, আরাকানে রাজনৈতিক গোলযোগ শুরু হবার কারণে অনুচরদের নিয়ে কোম্পানির রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছেন এবং কোম্পানির এলাকায় জমি আবাদ করে বসবাস করতে ইচ্ছুক। বেইটম্যান তাঁদেরকে কোম্পানির রাজ্যে বসবাস করার অনুমতি দেন এবং নির্দেশ দেন যে, তারা জয়নগর মহালের অধস্তন জমিদাররূপে পরিগণিত হবে। কালেক্টরের এ নির্দেশ তাঁদের মনপুত হয়নি, কেননা তাঁরা গোড়াতেই বলেছিলেন যে, আরাকানে তাঁদের যে পদমর্যাদা ছিল কোম্পানির এলাকায় অধস্তন ভূমিকা গ্রহণ করে তা ক্ষূন্ন করতে তারা প্রস্তত নন। এ সময় সদর আদালতের প্রধান বিচারপতি স্যার এলিজা ইম্পে চট্টগ্রাম ভ্রমণে এসেছিলেন। তাজ মোহাম্মদ ও অন্যান্য শরণার্থীদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তিনি তৎকালীন ফ্রান্সিস ল’কে একখানি দলীল দিয়ে তাঁদের অধিকার সংরক্ষনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। কিন্তু অচিরেই তাঁদের অনেকেই মৃত্যু মুখে পতিত হয় এবং তাজ মোহাম্মদ ব্যতিত অন্য সবাই আরাকানে প্রত্যাবর্তন করেন। এমন কি কিছুদিন পর তাজ মোহাম্মদও আরাকানে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
১৯৩৬ সালে রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা। মাঝের উঁচু চেয়ারে আসীন ব্যক্তিটি হলেন এম এ রশীদ। ডানে সু চির বাবা অং সান এবং বামের ব্যক্তিটি হলেন ভবিষ্যতের সেনাশাসক জেনারেল উ নু। এই নেতারাই বার্মার স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রপুরুষ।

ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব ‘মুজাহিদ পার্টি’ ওরোহিঙ্গা নিয়ে লিখেছেন রোহিঙ্গারা ‘মুজাহিদ পার্টি’ নামে উত্তর আরাকানে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। এর উদ্দেশ্যে ছিল আরাকানে একটি স্বায়ত্তশাসিত মুসলিম রাজ্য গঠন করা।
১৯৪৭ সালে বার্মার পার্লামেন্টে মেম্বার নির্বাচিত হন দুই জন রোহিঙ্গা মুসলমান এমএ গাফফার এবং সুলতান আহমাদ। ১৯৫১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন ৫ জন রোহিঙ্গা। ১৯৫৬ সালেও নির্বাচিত হন অনুরূপ ৬ জন রোহিঙ্গা এবং সুলতান আহমাদ কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে নিয়োজিত হন।
১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন একটি সেনা ক্যুর মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন এবং মুসলমানদের অধিকারসমূহ একে একে হরণ করতে শুরু করেন। উদাহরণস্বরূপ সেনাবাহিনী থেকে সকল মুসলমানকে অপসারণ করা হয়। তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রুদ্ধ করে নানা উৎপীড়নমূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়। মুসলিম রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকে পর্যন্ত সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধ করা হয়।
১৯৭১ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে রাখাইন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা আকিয়াবে আমরণ অনশন করে সরকারকে চাপ দিতে থাকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। তারা অভিযোগ তোলে যে আরাকানে মুসলমানরা দিন দিন সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে এবং অচিরেই তারা সমগ্র আরাকান দখল করে ফেলবে। তারা অভিযোগ তোলে যে, এর পিছনে দায়ী হ’ল বাংলাদেশ থেকে আগত অবৈধ অভিবাসীরা। এর ভিত্তিতে ১৯৭৮ সালে বার্মা সরকার রোহিঙ্গাদের উপর ‘অপারেশন কিং ড্রাগন’ নামে ভয়াবহ আর্মী অভিযান চালায়। ফলে ২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। পরে জাতিসংঘের সহযোগিতায় তারা বছরখানেক পর পুনরায় আরাকানে ফিরে যেতে সক্ষম হয়। কিন্তু তার আগেই শরণার্থী শিবিরে অপুষ্টির শিকার হয়ে প্রায় ১২ হাযার মানুষের মৃত্যু ঘটে। যার অধিকাংশই ছিল শিশু।
কিছুকাল পরই ১৯৮২ সালে তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয় এবং তাদেরকে অবৈধ অভিবাসী বাঙালী বলে অভিহিত করা হয়। ফলে তারা নিজ দেশে পরবাসী হয়ে পড়ে। তাদের চলাফেরা সীমিত করে দেয়া হয়। লেখাপড়া, চাকুরি সবকিছু থেকে বঞ্চিত করা হয়। তাদের জমিজমা জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে বৌদ্ধ বসতিস্থাপনকারীদের দেয়া হয়। যেন তারা ক্ষুধার্ত বিড়ালের সম্মুখে খাঁচায় বন্দী ইঁদুর।
১৯৮৯ সালে আরাকানের নাম পরিবর্তন করে রাখাইন রাখা হয়, যেন মধ্যযুগের মুসলিম ঐতিহ্যকে ইতিহাসের পাতা থেকে বিলুপ্ত করে রোহিঙ্গাদের নাম-নিশানা মুছে ফেলা যায়।
১৯৯২ সালে পুনরায় ব্যাপকভাবে মিলিটারী অপারেশন শুরু হ’লে আড়াই লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সেসময় চরম মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হয় রোহিঙ্গারা।
১৯৯৪ সাল থেকে নতুন জন্ম নেয়া রোহিঙ্গা শিশুদের জন্মসনদ দেয়া বন্ধ করে দেয় বর্মী সরকার।
২০১২ সালে আবারও রোহিঙ্গা ও রাখাইন দাঙ্গায় শতাধিক মুসলমান নিহত হয় এবং গৃহহীন হয় প্রায় দেড় লক্ষ। এ দাঙ্গায় নারী ধর্ষণ, ঘরবাড়ী ও ফসল পোড়ানো, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ ধ্বংসসহ বহু মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয় বর্মী সেনা এবং তাদের মদদপুষ্ট বৌদ্ধ জঙ্গীরা। এসময় বহু রোহিঙ্গা বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অসহায়, পাশবিক নির্যাতনের শিকার বনু আদমদেরকে সীমান্তরক্ষীদের পুশব্যাক করার নির্মম দৃশ্য সেসময় সারাবিশ্বের মানুষের হৃদয়কে নাড়া দেয়। পরে এদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ সাগরে ডুবে মারা যায় অথবা সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে বেঘোরে প্রাণ হারায়। তবুও থেমে থাকেনি তাদের বিপদ সংকুল যাত্রা। বিভিন্ন দেশে তারা আশ্রয়প্রার্থী হয়। বাংলাদেশেও প্রায় ৭০ হাযার রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় এ দফায়। যদিও শরণার্থীর মর্যাদা না পাওয়ায় তাদেরকে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
২০১৪ সালের আদমশুমারী থেকে বাদ দেয়া হয় রোহিঙ্গাদেরকে।
ভারতবর্ষ থেকে বিদায়ের পূর্বে ইংরেজরা বার্মার ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর একটি তালিকা তৈরী করে। কিন্তু রোহিঙ্গার নাম সেখানে তারা অন্তর্ভুক্ত করেনি। এটি ছিল বার্মায় অশান্তি ও অস্থিতিশীলতা বিদ্যমান রাখার লক্ষ্যে ব্রিটিশদের একটি রাজনৈতিক চাল ।
১৭ই সেপ্টেম্বর’ ২০ ১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা হিসাবে স্বীকৃতি দাবী করছে অথচ তারা কখনো মিয়ানমারের নৃগোষ্ঠী ছিল না। এটি ‘বাঙালী’ ইস্যু।
আরাকানে রোহিঙ্গাদের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস।
আরাকানে রোহিঙ্গারাই হ’ল আরাকানের ভূমিপুত্র, যা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত। এমনকি যে নাগরিকত্ব আইনে বৃটিশ শাসনের পূর্বকালকে নাগরিকত্ব পাবার শর্ত হিসাবে ধরা হয়েছে তার পূর্বেই ১৭৯৯ সালে স্কটিশ লেখক ফ্রান্সিস বুকানন হ্যামিল্টন আরাকানের স্থানীয় অধিবাসীদের কথা লিখতে গিয়ে বলেন, “Mohammedans, who have long settled in Arakan, and who call themselves Rooinga, or natives of Arakan” অর্থাৎ ‘আরাকানে বহুদিন ধরে বসবাস করে আসছে মুসলমানরা এবং তারা নিজেদেরকে রোহিঙ্গা বা আরাকানের অধিকাসী হিসাবে আখ্যায়িত করে থাকেন।’ অনুরূপভাবে ১৮১১ সালে ক্লাসিকাল জার্নালে এবং ১৮১৫ সালে জার্মান লেখক জোহান সেভেরিন ভাটের এক জার্মান পত্রিকায় বার্মায় রোহিঙ্গা নামক সম্প্রদায়ের অস্তিত্বের কথা লিখেছেন (Azeem Ibrahim. The Rohingyas: Inside Myanmar’s Hidden Genocide. Oxford University Press. pp. 24–25).
সুতরাং একথা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত রোহিঙ্গারা আরাকানেরই আদিবাসী। বরং বৌদ্ধরা পরবর্তীতে বসতি স্থাপন করেছে। তারা নিজেদেরকে খৃষ্টপূর্ব ৩০০০ সালে আগমনকারী হিসাবে দাবী করলেও এর কোনই ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ নেই। বরং এটাই প্রমাণিত যে ১৫ শতকে স্বল্প সংখ্যায় আরাকানে প্রবেশ করলেও মূলতঃ অষ্টাদশ শতাব্দীতে বার্মীজ শাসন প্রতিষ্ঠার পর তারা ব্যাপক সংখ্যায় বসতি স্থাপন করে। এজন্য নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন যথার্থই বলেছেন, ‘রোহিঙ্গারা বার্মাতে যায়নি বরং বর্মীরা আরাকান দখল করেছে’।
মায়ানমারের বৌদ্ধ বংশদ্ভূত রোহিঙ্গা গবেষক ১৯৮৮ সালে মায়ানমার ত্যাগ করা ড. মঙ জার্নির বিশ্বব্যাপী অগণিত উপস্থাপনা অনুযায়ী, নিকটবর্তী চট্টগ্রাম এলাকার বাংলাভাষীদের সঙ্গে ভাষাগত মিলের সূত্র ধরে রোহিঙ্গাদের বাঙালী বলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা আসলে গোয়েবলসের পুনঃপুনঃ মিথ্যা উচ্চারণের মাধ্যমে তাকে সত্য হিসাবে প্রতিষ্ঠার সফল এক মায়ানমার সরকারী অপচেষ্টা।
“Shining a light on Rohingya refugees – Global Journalist”। Global Journalist (ইংরেজি ভাষায়)। এই তথ্যে জানা যায় , মিয়ানমারে তাদের নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং তাদেরকে বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাচারিত সংখ্যালঘু হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং চরমপন্থী বৌদ্ধদের হাতে নির্যাতিত।মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।১৯৭০ সাল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে উদ্বাস্তু হয়ে বাস করতে শুরু করে।
“Rohingya Refugees in Bangladesh to Be Relocated to Remote, Inhospitable Island – The Boston Globe”। BostonGlobe.com সূত্রে ২০১৭-০৩-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-২০ থেকে জানা যায় – ২০১৭ “নিধন কার্যক্রম” শুরু হওয়ার পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা ২৪,০০০ এরও বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছিল। এটি আরও অনুমান করা হয়েছিল যে কমপক্ষে ১৮,০০০ রোহিঙ্গা মুসলিম মহিলা ও মেয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে, ১১৬,০০০ রোহিঙ্গাকে মারধর করা হয়েছিল এবং ইচ্ছাকৃত অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩৬,০০০ রোহিঙ্গাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল।
মুসলিম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নেই কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি৷ সংবিধানে তাঁদের কোনো নাগরিকত্বও নেই৷ ফলে সরকার সবসময়ই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ‘অবৈধ অভিবাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে মায়ানমার ৷ কিন্তু বার্মা তথা মায়ানমারের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে মায়ানমারের মানবাধিকার ( প্রশ্নবিদ্ধ ) নেত্রী সুচির পিতার সাথে সরকারের মন্ত্রী ও ছিলেন মায়ানমারের তথা মুসলিম নেতারা।
সু চির বাবা জেনারেল অং সানের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক সহযোগী ছিলেন একজন মুসলমান আবদুল রাজ্জাক। রাজ্জাক তখন বার্মা মুসলিম লিগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছিলেন। জেনারেল অং সানের গঠিত বার্মার স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভার শিক্ষা ও পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন রাজ্জাক এবং ১৯৪৭-এর ১৯ জুলাই জেনারেল অং সানের সঙ্গে যে ছয়জন মন্ত্রী খুন হয়েছিলেন, তাঁদের অন্যতম ছিলেন তিনি। আজও বার্মা ১৯ জুলাই রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘শহীদ দিবস’ হিসেবেই পালন করে থাকে।
Abul Khair (legislator)
Member of the Union Parliament from Maungdaw South
In office
1956–1962
President of the Maungdaw Township Council
In office
1955–1956
Abul Khair was a police officer in British Burma who was later elected to the parliament of the Union of Burma.
Khair was elected president of the township council of Maungdaw in 1955. He was nominated by the Anti-Fascist People’s Freedom League, the founding political party of Burma. During the Burmese general election, 1956, he was elected from Maungdaw South to the Union Parliament.[1] He received the highest vote share among Rohingya candidates.
Chit Lwin Ebrahim
Member-elect of the Parliament of Myanmar from Maungdaw-1
Preceded by Constituency established
Succeeded by Constituency abolished
Ebrahim, also known as Chit Lwin, is a Rohingya lawyer, accountant and former politician. He was elected as a Parliament of Myanmar MP in 1990 election. He was the vice chairman of the National Democratic Party for Human Rights. The party was later banned by the Burmese military junta and its members are barred from contesting elections.
He joined the Ministry of Finance in 1967 and worked there till 1983. Since 1984, he has been a lawyer in the High Court of Rangoon.
Zura Begum MP
Member of the Union Parliament from Maungdaw-2
Zura Begum, also known as Aye Nyunt, was one of the first two female legislators of the Union of Burma, along with Khin Kyi. She was a politician from Arakan, Burma (now Rakhine State, Myanmar). She was elected to the Parliament of Burma during the Burmese general election, 1951, as the representative of Maungdaw-2 constituency.
Fazal Ahmed
Fazal Ahmed (born 1941) is a Rohingya lawyer and former politician in Myanmar. He was a leader of the National Democratic Party for Human Rights (NDPHR). He was elected as Parliament of Myanmar MP during the Burmese general election, 1990.
He also worked in the office of the Deputy Commissioner in Maungdaw .
He was one of the four NDPHR MPs in the Burmese parliament.
Gani Markan
Member of the Legislative Council of Burma from Maungdaw-Buthidaung
In office
1936–1948
He was elected to the Legislative Council of Burma during the Burmese general election, 1936 from the Maungdaw-Buthidaung constituency in Arakan Division
M. A. Gaffar
Member of the Constituent Assembly of Burma from Buthidaung
In office
1947–1948
Governor Hubert Rance
Member of the Chamber of Nationalities from Akyab
In office
1952–1956
President Ba U
Member of the Chamber of Nationalities from Maungdaw
In office
1956–1962
President Ba U
Win Maung
Parliamentary Secretary to the Ministry of Health
Mohammed Abdul Gaffar (1910 –1966), also known as Abdul Gaffar, was a politician from Arakan, Burma (now Rakhine State, Myanmar). He was elected to the Legislature of Burma in British Burma from Buthidaung in 1947. After Burmese independence in 1948, the President of Burma Sao Shwe Thaik appointed Gaffar as one of the seven members of the Inquiry Commission of Arakan in 1949. Gaffar was elected to the Chamber of Nationalities from Akyab West constituency in 1952. He was elected from Maungdaw in 1956. He also served as Parliamentary Secretary for the Ministry of Health in the government of Prime Minister U Nu.
Nur Ahmed
Member-elect of the Parliament of Myanmar from Buthidaung-2
Preceded by Constituency established
Succeeded by Constituency abolished
He was the Chairman of the National Democratic Party for Human Rights. He was elected to the Parliament of Myanmar in 1990.
Shamsul Anwarul Huq
Member-elect of the Parliament of Myanmar from Buthidaung-1
Preceded by Constituency established
Succeeded by Constituency abolished
Shamsul Anwarul Huq (born 1944), also known as Kyaw Min, is a Rohingya academic, pro-democracy activist and former politician in Myanmar. He has also been a political prisoner. Huq was a leader of the National Democratic Party for Human Rights. Huq was elected to the Parliament of Myanmar in 1990.
Political career[edit]
Huq was a member of the Central Executive Committee of the National Democratic Party for Human Rights. He was elected from Buthidaung-1 constituency during the Burmese general election, 1990, after receiving 30,990 out of 41,668 votes. His party won a total of four seats. The Burmese military junta banned his party in 1992. At the invitation of Aung San Suu Kyi, Huq joined the Committee Representing the People’s Parliament in 1998.
Detentions .
In 1992, Huq was detained by Burmese military intelligence for three months during operations against the Rohingya population. In 1994, military intelligence detained him for 45 days. In March 2005, he was arrested from his home in Rangoon, and was charged under Section 18 of the 1982 Burmese nationality law and Section 5 of the Anti-State Emergency Law. He was sentenced to 47 years in imprisonment. His wife, two daughters and one son were also arrested under the 1982 Burmese nationality law, and sentenced to 17 years in prison. The convictions barred the family from contesting elections.
Then-President of Burma Sao Shwe Thaik refused to pardon or commute the sentences of most of those who were sentenced to death, and U Saw was hanged inside Rangoon’s Insein jail on 8 May 1948. A number of perpetrators met the same fate, while minor players, who were sentenced to various terms of imprisonment, also spent several years in prison.
Shwe Maung
Member of the Pyithu Hluttaw
In office
31 January 2011 – 29 January 2016
Preceded by Position established
Succeeded by Aung Thaung Shwe
Constituency Buthidaung Township
Shwe Mg, aka Abdul Razak[1]; born 30 June 1965) is a Rohingya rights activist of Myanmar and politician who served as a Member of Parliament from 2011 to 2016. In the Myanmar general election, 2010, he was elected as a Pyithu Hluttaw MP for Buthidaung Township .
Sultan Ahmed (Parliamentary Secretary)
Sultan Ahmed MP
Member of the Constituent Assembly of Burma from Maungdaw
In office
1947–1948
Member of the Union Parliament from Maungdaw
In office
1951–1962
Parliamentary Secretary to the Ministry of Minorities
Ahmed was elected to the Legislature of Burma in British Burma in 1947 as a representative of Maungdaw constituency.
Sultan Ahmed was one of the longest serving legislators from Arakan, Burma (now Rakhine State, Myanmar). Ahmed was the president of the Jamiat-e-Ulema party, which was allied with the Anti-Fascist People’s Freedom League, the founding political party of Burma. Ahmed served in the Burmese parliament until the 1962 Burmese coup .
After Burmese independence in 1948, Ahmed became a member of the Burmese constituent assembly. During the Burmese general election, 1951, he was elected to the Union Parliament from Maungdaw-1 constituency. He was re-elected in 1956 and 1960. Ahmed was appointed Parliamentary Secretary to the Ministry of Minorities, with the rank and status of a Deputy Minister. He was one of the longest serving Parliamentary Secretaries in Burmese history.
Sultan Mahmud MP
Minister of Health of the Union of Burma
In office
1960–1962
Member of the Union Parliament from Buthidaung North
In office
1957–1958
Member of the Union Parliament from Buthidaung North
In office
1960–1962
Sultan Mahmud (1900 – 1982) was a politician from Arakan, Burma (now Rakhine State, Myanmar).
Mahmud served as cabinet secretary in the Central Legislative Assembly. After Burmese independence, he was elected to the Parliament of Burma through a by election from Buthidaung in 1957. He was re-elected in 1960. He served as Minister of Health of the Union of Burma from 1960 till the 1962 Burmese coup .
The assassinated were:
Aung San, Prime Minister
Ba Cho, Minister of Information
Mahn Ba Khaing, Minister of Industry and Labor
Ba Win, Minister of Trade
Thakin Mya, Minister Without Portfolio, unofficially considered as Deputy Prime Minister of Burma
Abdul Razak, Minister of Education and National Planning
Sao San Tun, Minister of Hills Regions
Ohn Maung, Secretary of State Transport
Ko Htwe, Razak’s bodyguard
বার্মার ইতিহাস বোধ হয় মুসলমানদের অবদান শূন্য ছিল না
মিন রাজাগ্যি ওরফে সেলিম শাহের মৃত্যুর পর ১৬১২ খ্রিস্টাব্দে তার বড় ছেলে মিংখা মৌং হুসাইন শাহ নাম ধারণ করে আরাকানের সিংহাসনে বসেন। ১৬১৭ খ্রিস্টাব্দের ৮ এপ্রিল মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর (১৬০৫-২৭ খ্রি.) কাশিম খানকে পদচ্যুত করে ইবরাহীম খান ফতেহ জঙ্গকে বাংলার সুবেদার নিযুক্ত করেন।
আট শতকে কাগজ আবিষ্কারের ফলে মানচিত্র অঙ্কন বিদ্যার ক্ষেত্রেও আসে বিরাট পরিবর্তন। এ সময় মুসলিম মানচিত্র অঙ্কনবিদরা গ্রিক, ব্যবিলনীয় ও ভারতীয় সংস্কৃতির ভিত্তিতে কল্পিত এবং পাঠসংক্রান্ত অভিজ্ঞতা, মানচিত্রের ধারণার চিত্র, অঙ্কন ইত্যাদি কাগজের পাতায় পাতায় স্থানান্তর করেন। এর পর থেকে শুরু হয় মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যার সফল যাত্রা। নবম শতকের মধ্যে মুসলিম ব্যবসায়ী, নাবিক ও উদ্ভাবকরা ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালয় ও পূর্ব জাভা থেকে আফ্রিকার পূর্ব উপকূলের মাদাগাসকারের পশ্চিম হয়ে চীন, জাপান ও কোরিয়ায় ছড়িয়ে পড়েন।‘সুরাত আল-আরত (পৃথিবীর চিত্রের বই)’ : পারস্যের খ্যাতনামা পণ্ডিত আল-খাওয়ারাজমি নবম শতকে তা রচনা করেন। এই পুস্তকে ৫৪৫ শহরের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশের তালিকা প্রকাশিত হয়। এতে সাগর, নদী, পর্বতমালা, দ্বীপ ও বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলের বর্ণনা সন্নিবেশিত হয়েছে। এই গ্রন্থে আরব মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যার আলোকে চারটি আঞ্চলিক মানচিত্রও যুক্ত হয়।এগারো শতকে রচিত হয় ‘গারেইবাল ফানুন ওয়া মুলাহ-আল-ইউউন (চোখের বিজ্ঞান ও মার্বেলবিষয়ক দুর্লভ বই)’ গ্রন্থ। বইটিতে ইসলামী ভৌগোলিক ধারণা এবং মহাজাগতিক বিষয়সহ মানচিত্র তৈরি সম্পর্কে গভীর অন্তর্দৃষ্টি তুলে ধরা হয়।
মুসলিমদের মানচিত্র নিয়ে পর্তুগিজরা নৌ বাহিনী নিয়ে ভূমি দখল করেছিল। পর্তুগিজরা যেমন জলদস্যুতায় কুখ্যাত ছিল তেমনই ছিল শ্রেষ্ট নাবিক ও নৌযোদ্ধা ছিল।
পর্তুগিজরা যেমন জলদস্যুতায় কুখ্যাত ছিল তেমনই ছিল শ্রেষ্ট নাবিক ও নৌযোদ্ধা। মিনবিন বা জেবুকশাহ (১৫৩১-১৫৫৩ খৃ.) আরাকানী নৌবাহিনীর প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি আদায় করে পর্তুগিজদেরকে চট্টগ্রামে বাণিজ্য ও বসতি গড়ার অনুমতি দেন। এমনকি মিনবিন তাদেরকে সাদরে গ্রহণপূর্বক বসবাসের উপযোগি জমি দান করে সীমান্ত রক্ষার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। সেইসাথে আরাকানের রাজধানী ম্রাউক-উ’তে পর্তুগিজদের দ্বারা রাজার দেহরক্ষী একটি সৈন্যদলও গঠিত হয়েছিল। অতঃপর রাজা মিন রাজাগ্যি বা সেলিম শাহ (১৫৯৩-১৬১২ খৃ.) তাদেরকে চট্টগ্রামের দেয়াঙ্গ, সন্দীপ ও আরাকানের সিরিয়ামে উপনিবেশ স্থাপনের অনুমতি প্রদান করেন। কিন্তু অল্প দিনের মধ্যেই তারা স্বরূপ উন্মোচন করে দক্ষিণ ও পূর্ব-বাংলার সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় ডাকাতি ও মানুষ চুরির মাধ্যমে দাস ব্যবসা শুরু করে। মেঘনা নদীর মোহনা থেকে শুরু করে পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত এলাকায় নিষ্ঠুর জলদস্যুতার তা-ব চালায়। তাদের অত্যাচারে এসব অঞ্চল জনবসতিহীন হয়ে গভীর জংগলে পরিণত হয়।
পর্তুগিজ জলদস্যুদের সফলতায় মগেরাও জল দস্যুতায় নেমে পড়ে। মগ ও ফিরিঙ্গিদের সমন্বয়ে গঠিত জলদস্যু বাহিনী জলপথে এসে বারবার বাংলায় লুন্ঠনকার্য পরিচালনা করত। তারা হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে ধরে নিয়ে যেত। বন্দিদের হাতের তালু ছেঁদন করে পাতলা বেত চালিয়ে জাহাজের ডেকের নিচে পশুর মত বেঁধে রাখত এবং খাঁচাবদ্ধ মুরগির মত যৎকিঞ্চিৎ কাঁচা চাউল উপর হতে বন্দীদের উদ্দেশ্য ছুড়ে দিত তা খুটে খুটে খেয়ে জীবন বাঁচাতে হতো। এত কষ্ট ও অত্যাচারে যে ক’টা শক্ত প্রাণ বেঁচে থাকতো তাদের মধ্যে কাউকে ভূমি কর্ষণ ও অন্যান্য হীন কার্যে নিযুক্ত করত আর কাউকে দাক্ষিণাত্যের বন্দরসমূহে ওলন্দাজ, ইংরেজ ও ফরাসী বণিকদের নিকট বিক্রি করত। কখনো কখনো তাদেরকে উড়িষ্যায় নিয়ে যাওয়া হতো। অনেক সময় সমুদ্রোপকূল হতে কিছু দুরে নোংগর ফেলে তারা লোক মারফৎ সরকারি কর্মচারীদের নিকট সংবাদ প্রেরণ করে মুক্তিপণের মাধ্যমে বন্দীদের ছেড়ে দিত। সম্ভ্রান্ত সৈয়দ বংশের অসংখ্য লোক থেকে শুরু করে সতী-সাধ্বী সৈয়দজাদীও তাদের দাসত্বের শৃংখলে আবদ্ধ হয়ে যৌন উম্মাদনার বস্তু হিসেবে পরিগণিত হতো। দেশে যেখানে সেখানে তারা অগ্নিসংযোগ, গৃহদাহ, জাতি বিধ্বংসী কাজ করে বাংলার শান্তিপ্রিয় মানুষের জীবনে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে ছিল। মগদের অবাধ অত্যাচারে যেমন ‘মগের মুলুক’ তেমনি ফিরিঙ্গীদের কৃতকৃর্মের সাক্ষী হিসেবে ‘ফিরিঙ্গী খালি’ ‘ফিরিঙ্গীর দেয়ানীয়া’ ‘ফিরিঙ্গী ফাড়ি’ ‘ফিরিঙ্গী বাজার’ প্রভৃতি জায়গায় তাদের অত্যাচারের করুণ কাহিনী জড়িয়ে আছে।

আবদুল রাজ্জাকই নন, সু চির বাবা এবং বার্মার ‘জাতির পিতা’ জেনারেল অং সানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগীদের মধ্যে আরও অনেক মুসলমান ছিলেন।
১৯৩৬ সালের মে মাসে রেঙ্গুনের জুবলি হলে এক ছাত্র সম্মেলনের মাধ্যমে ‘অল বর্মা স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ও (এবিএসইউ) গড়ে তুলেছিলেন এরাই এবং রাশিদ ছিলেন বিএসইউর প্রথম সভাপতি। এম এ রাশিদ হলেন বার্মার ইতিহাসে একমাত্র ছাত্রনেতা, যিনি একই সময় এবিএসইউ এবং আরইউএসইউ এই উভয় সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। এর কিছুদিন পরই জওহরলাল নেহরু বার্মা এসেছিলেন এবং তাঁকে সংবর্ধনা জানানোর জন্য যে কমিটি করে ছাত্ররা, অং সানের প্রস্তাবমতো তাতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রাশিদই।
এম এ রাশিদকে অং সান বলতেন ‘রাশিদ ব্রাদার বা ভাই ’।
রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করত অল বর্মা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন আর রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রছাত্রী সংসদ—যাকে সংক্ষেপে বলা হতো আরইউএসইউ।
অং সান রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ১৯৩৩ সালে। আরইউএসইউ প্রতিষ্ঠার বছরই (১৯৩০) তাতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এম এ রাশিদ। ওই সময় অং সানের প্রধান রাজনৈতিক সহযোদ্ধা হয়ে ওঠেন এম এ রাশিদ ও উ নু। অং সান আরইউএসইউতে ১৯৩৬ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন আর সে বছর তাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন এম এ রাশিদ।

সুচির আইনী উপদেষ্টা উ কো নি মিয়ানমারের সংবিধানের ওপর এনএলডি দলের এক সভায় আলোচনা করছেন। সেটা মনে হয় বার্মার সুচি গং এবং সামরিক জান্তা মুছতে চায়।
সুচির আইনী উপদেষ্টা উ কো নি মিয়ানমারের সংবিধানের ওপর এনএলডি দলের এক সভায় আলোচনা করছেন। সেটা মনে হয় বার্মার সুচি গং এবং সামরিক জান্তা মুছতে চায়। বার্মার মুসলমান নেতৃত্বকে মুছে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় এ বছরের ২৯ জানুয়ারি হত্যা করা হয় ব্যারিস্টার উ কো নিকে। সু চির আজকের অবস্থানের পেছনে তাঁর অবদান অস্বীকারের উপায় নেই। যখন সন্তানদের বিদেশি নাগরিকত্ব থাকার অজুহাতে সামরিক জান্তা অং সান সু চির সাংবিধানিক পদ গ্রহণে বাধা তৈরি করে, তখন একটা উপায় বের করেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ কো নি। সামরিক জান্তার সংবিধানের ভেতরই তিনি বিকল্প সরকারপ্রধান হিসেবে সু চির জন্য স্টেট কাউন্সেলর পদ সৃষ্টির পথ দেখিয়ে দেন। দীর্ঘদিন সু চির আইনি উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ সালে সরকারি দল এনএলডিতে যোগ দেন। সামরিক বাহিনীর সমালোচনা এবং রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া ১৯৮২ সালের আইনের সমালোচনা করাই হয়তো ছিল তাঁর অপরাধ। সাবেক এক সেনা গোয়েন্দা কর্মকর্তার নির্দেশে গুলি করে তাঁকে হত্যার মধ্যে দিয়ে বার্মার জাতীয় রাজনীতিতে মুসলমানদের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ইতিহাসও গায়েব করার নীল নকশা।
১৯৪৭ সালে বার্মার সংবিধানের অন্যতম খসড়াকারীও ছিলেন রাশিদ। পরবর্তীকালে তিনি দেশটির শ্রমমন্ত্রীও হন।
১৯৪৮ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত সুলতান মাহমুদ, আবুল বাশার, আবদুল গাফ্ফার, জোহরা বেগম প্রমুখ যে আরাকানের মুসলিমপ্রধান এলাকাগুলো থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে দেশটির পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন বছরের পর বছর (মন্ত্রীও হয়েছিলেন!), সেটা কীভাবে সম্ভব হলো? এই ব্যক্তিরা কীভাবে নির্বাচনে দাঁড়ালেন? আকিয়াবের এমপি সুলতান মাহমুদ যে উ নুর নেতৃত্বে গঠিত ১৯৬০-এর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, সেটা কোন জাতিসত্তা পরিচয়ে?
এমনকি ১৯৯০-এ যখন সামরিক বাহিনীর অধীনেই বার্মায় বহুদিন পর প্রথমবারের মতো বহুদলীয় নির্বাচন হলো (যে নির্বাচনে অং সান সু চির দল নির্বাচিত হয়েও সরকার গঠন করতে পারেনি), তখন খ মিং (শামসুল আনোয়ার, বুথিডং-১), মো. নুর আহমেদ (বুথিডং-২), উ চিট লুইঙ (ইব্রাহিম, মংডু-১), ফজল আহমেদ (মংডু-২) প্রমুখ রোহিঙ্গারা কীভাবে উত্তর আরাকান থেকে পার্লামেন্টে নির্বাচিত হতে পারলেন? কীভাবে তখন আরাকানের রোহিঙ্গারা (আটটি আসনে) নিজস্ব রাজনৈতিক দল (ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস পার্টি) থেকেই প্রার্থী হতে অনুমতি পেয়েছিল? আইন অনুযায়ী ওই নির্বাচনে ‘বিদেশি’ ছাড়া সবাইকেই ভোট দিতে দেওয়া হয়েছিল। তাহলে বুথিডং ও মংডুর এই রোহিঙ্গারা কাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন সেটা বুঝতে হলে বিশাল কোন ঐতিহাসিক হতে হবে না।
বার্মার ১৯৯০-এর নির্বাচনে বিজয়ী ওপরের চারজন রোহিঙ্গা এমপির মধ্য থেকে শামসুল আনোয়ারকে অং সান সু চি ১৯৯৮ সালে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি হিসেবে ‘পিপলস পার্লামেন্ট’-এ যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান এবং শুধু এই ডাকে সাড়া দেওয়ার কারণে তাঁর ৪৭ বছরের জেল হয়েছিল। এমনকি শামসুল আনোয়ারের পুত্র-কন্যাদেরও ১৭ বছর করে সাজা দেওয়া হয়। অথচ সু চি উত্তর আরাকানে রোহিঙ্গাদের কোনো রূপ উপস্থিতির কথা অস্বীকার করে যাচ্ছেন। প্রসঙ্গক্রমে এ-ও উল্লেখ করতে হয়, ১৯৯০-এর নির্বাচনে বুথিডং-১ থেকে নির্বাচিত এমপি মাস্টার শামসুল আলম রেঙ্গুনের ইনস্টিটিউট অব ইকোনমিকস থেকেই তাঁর ব্যাচেলর ডিগ্রি নিয়েছিলেন এবং ১৯৮৫ পর্যন্ত তিনি সরকারি মাধ্যমিক একটি স্কুলের হেডমাস্টার পর্যন্ত ছিলেন। নাগরিক না হলে তাঁর পক্ষে কীভাবে দীর্ঘ শিক্ষা ও কর্মজীবন পরিচালনা করা সম্ভব হলো সেটা বার্মার সুচিরা ভুলে যেয়ে আজ তাদেরকে বলা হচ্ছে বহিরাগত।
মার্কিন নিউজ পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট আল-মনিটর প্রতিবেদনে লিখেছে, ইসরাইল মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখে রোহিঙ্গা মুসলমান হত্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। খবর ইরনার। আল-মনিটর আরও লিখেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ইসরাইলসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে সংগ্রহ করা অস্ত্র দিয়ে যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা করেছে তার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও দেশটির উগ্র বৌদ্ধরা রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটসহ ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধ চালায়। ওই দমন অভিযানে অন্তত ছয় হাজার নিরীহ মুসলমান নিহত ও অপর আট হাজারের বেশি রোহিঙ্গা আহত হন। এছাড়া সহায়-সম্বল হারিয়ে প্রাণ ও সম্ভ্রম বাঁচাতে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেন ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান। জাতিসংঘ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত শুদ্ধি অভিযান’ চালানোর জন্য দেশটির সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছে। এছাড়া এই সেনাবাহিনীকে বিশ্বের সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেনাবাহিনী হিসেবেও উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।